নতুন বছর সম্বৎ ২০৭০-এর সূচনায় মুরত লেনদেনে রবিবার ফের নতুন উচ্চতায় পৌঁছল সেনসেক্স। শুক্রবারের তুলনায় আরও ৪২.৫৫ পয়েন্ট বেড়ে এ দিন ২১,২৩৯.৩৬ অঙ্কে দৌড় শেষ করল বম্বে স্টক এক্সচেঞ্জের এই সূচক। দেওয়ালি উপলক্ষে ১ ঘণ্টা ১৫ মিনিটের এই বিশেষ লেনদেনে রেকর্ড গড়েছে ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জের নিফটিও। এটি থামে ৬,৩১৭.৩৫ অঙ্কে।
এই নিয়ে টানা ৩ দিনে উচ্চতার ৩টি নয়া নজির গড়ল সেনসেক্স। এবং গত ৪টি লেনদেনে তার মোট উত্থান ৬২৬.৫৩ অঙ্ক। এমনকী এ দিনও ওইটুকু সময়ের মধ্যেই এক সময়ে বাজার ছুঁয়ে ফেলেছিল ২১,৩২১.৫৩ পয়েন্ট। এতটা উচ্চতায় এর আগে কখনও পা রাখেনি সূচক। শেষে মুনাফা ঘরে তোলার তাগিদে তা কিছুটা নেমে আসে।
তবে একটানা উত্থান সত্ত্বেও দু’টি প্রশ্ন কিছুতেই এড়াতে পারছে না বাজার। এক, সত্যিই বাজার উঠছে, না কি এর পেছনে ‘কৃত্রিম’ কোনও কারণ আছে? আর দুই, এই ঊর্ধ্বগতি কি আদৌ স্থায়ী হবে? |
মুরত লেনদেনে আলোকসজ্জিত বম্বে স্টক এক্সচেঞ্জে হাজির
অভিনেতা সুরেশ ওবেরয় ও পুত্র বিবেক। ছবি: পিটিআই |
ক্যালকাটা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রাক্তন ডিরেক্টর এস কে কৌশিকের মতে, সূচক বাড়লেও বাজারের স্বাস্থ্য খুব ভাল হওয়ার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। তিনি বলেন, “কোনও সাধারণ লগ্নিকারী বাজারে নেই। সূচক উঠছে মূলত বিদেশি লগ্নি সংস্থার উপর ভর করে। দ্রুত বাড়ছে হাতে গোনা কিছু বড় সংস্থার শেয়ার। অথচ ক্ষুদ্র ও মাঝারি সংস্থার শেয়ার দরে কোনও ওঠা-পড়া নেই। এটা ভাল স্বাস্থ্যের লক্ষণ নয়।”
ভিত নড়বড়ে হওয়ার আশঙ্কা থাকলে উত্থানের স্থায়িত্ব নিয়েও সংশয় তৈরি হয়। সে প্রসঙ্গে অবশ্য ক্যালকাটা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ও স্টুয়ার্ট সিকিউরিটিজ-এর চেয়ারম্যান কমল পারেখ-এর মত, “বাজার স্বল্প মেয়াদে পড়ার সম্ভাবনা কম। ছোট সংশোধন হতে পারে। কিন্তু এখনই সেনসেক্স ১৯ হাজারের নীচে নামবে বলে মনে হয় না।” তাঁর যুক্তি, অন্তত যতদিন আমেরিকা ত্রাণ প্রকল্প তুলে না-নিচ্ছে, ততদিন বিদেশি সংস্থা ভারতের বাজারেই টাকা ঢেলে যাবে। পাশাপাশি, বর্ষা ভাল হওয়ায় ভোগ্যপণ্য সংস্থার শেয়ার দরও এখন দ্রুত বাড়বে বলে তাঁর বিশ্বাস। কৃষিনির্ভর মানুষের আয় বাড়াই যার কারণ।
এ দিকে, বিএসই ও এনএসই-র শেয়ার কেনাবেচা করলেও, ক্যালকাটা স্টক এক্সচেঞ্জের নিজস্ব লেনদেন ব্যবস্থা সি-স্টারে এ বার মুরত লেনদেন হয়নি। এপ্রিল থেকেই এই ব্যবস্থায় লেনদেন বন্ধ। কারণ, সেবি ওই এক্সচেঞ্জকে ক্লিয়ারিং কর্পোরেশন গঠন করতে বলেছে, যা এখনও তৈরি হয়নি। প্রসঙ্গত, ক্লিয়ারিং কর্পোরেশনের মাধ্যমে শেয়ার হস্তান্তর ও তার দাম মেটানো হয়। প্রসঙ্গত, আজ ধর্মীয় অনুষ্ঠান ‘বালিপ্রতিপদ’ উপলক্ষে শেয়ার বাজার বন্ধ থাকছে।
|