হোম সুপারের নামে অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা
মালদহের সরকারি হোমে কিশোরীর মৃত্যুতে গাফিলতির অভিযোগ ওঠায় সুপারের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য (৩০৪ ধারায়) অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতার বাড়ির লোকজনের স্পষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে ওই মামলা রুজু করা হয়েছে। পুলিশ সুপার কল্যাণ মুখোপাধ্যায় বলেন, “মৃত ধনীকা কর্মকারের মায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্ত হোমের সুপারের বিরুদ্ধে খুনের মামলা রুজু করা হয়েছে। অভিযুক্ত সুপারকে গ্রেফতার করা হবে।”
এ দিন ওই হোমের সুপার মৌসুমী সাহাকে বদলির নির্দেশও দেওয়া হয়েছে বলে জানান রাজ্যের নারী ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্র। তিনি বলেন, “মালদহের ওই হোমের সুপার মৌসুমী সাহাকে বদলির সিদ্ধান্ত হয়েছে। তাঁকে বর্ধমানে বদলি করানো হয়েছে। তাঁর জায়গায় পুরাতন মালদহের ব্লক চাইল্ড ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট অফিসার মায়া মণ্ডলকে সাময়িক দায়িত্ব পালন করতে বলা হয়েছে।” মৌসুমী দেবী জানান, তিনি এ ধরনের কোনও নির্দেশ জানেন না।
যাঁর বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ উঠেছে সেই হোমের সুপার মৌসুমী সাহা জানান, তিনি কোনও অন্যায় করেননি। তাঁর দাবি, “আমি অন্যায় করিনি। ধনীকা কর্মকার যে ভেতরে ভেতরে এতটা অসুস্থ ছিল আমি জানব কীভাবে? ওর যে চারদিন ধরে জ্বর হচ্ছিল, সে কথা হোমের কর্মীরা আমাকে কিছুই জানাননি। এর পরেও পুলিশ কী ভাবে খুনের মামলা করল বুঝতে পারছি না।”
এ দিন দুপুর ২টো নাগাদ মালদহ শহরেরে মনস্কমনা রোডে সরকারি হোমে হানা দিয়ে হোমের চূড়ান্ত অব্যবস্থা দেখে ক্ষোভে ফেটে পড়েন মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্র। হোমের সুপারকে ডেকে মন্ত্রী সকলের ধমক দিয়ে বলেন, “ধনীকা কমর্কারকে ১৮০ দিন পরে সমিতি একটি স্কুলে ভর্তি করার নির্দেশ দিয়েছিল। আপনি ওই কিশোরীকে স্কুলে ভর্তি না করে কেন হোমে আটকে রেখেছিলেন?”
হোমের আবাসিকরা মন্ত্রীর কাছে অভিযোগ করেন, শনিবার থেকে প্রতিদিন রাতে ধনীকার জ্বর হতো। তার পরেও ধনীকাকে মেঝেতে শুইয়ে রাখা হতো। আবাসিকদের মুখে এ কথা শোনার পরে সুপারকে তীব্র ভর্ৎসনা করে মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্র বলেন, “চারদিন ধরে আপনার হোমে একজন কিশোরী জ্বরে ভুগছে। তাকে কেন হাসপাতালে ভর্তি করেননি?” সুপার মৌসুমী সাহা বলেন, “হোমের কর্মরত কর্মীরা আমাকে জানাননি যে ও জ্বরে ভুগছে। জানার পরেই হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু বাঁচাতে পারিনি।”
মনস্কামনা রোডে একটি ভাড়া বাড়ির চারতলায় তিনটি ছোট ঘর নিয়ে হোম চলছে। ১৩টি চৌকি রয়েছে। সেখানে গাদাগাদি করে ৬৩ জন আবাসিককে রাখা হয়েছে। চৌকিতে জায়গা না হওয়ায় মেঝেতে শুতে হচ্ছে আবাসিকদের। ২৫ জন বাংলাদেশি, ৪ জন মায়ানমার ও বাকিরা রাজ্য ও রাজ্যের বাইরের। ছোট তিনটি ঘরে এত আবাসিককে মন্ত্রী জানান, এই জায়গায় এতজনকে রাখা পরিবেশ নেই। হোমের নতুন ভবন তৈরির জন্য কেন্দ্র সরকারের কাছে প্রস্তাব পাঠিয়ে টাকা চাওয়া হয়েছে। যতদিন না পর্যন্ত কেন্দ্রের অনুমোদন পাওয়া যাচ্ছে তার মধ্যে একটি ভাড়া বাড়ি খোঁজা হচ্ছে, সেখানে হোমকে সরানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পাশে দাঁড়িয়ে থাকা হোমের সুপার বলেন, “ম্যাডাম, হোমে ৩০ জনকে রাখার অনুমোদন রয়েছে। কিন্তু এখন সেই জায়গায় ৬৩ জনকে রাখতে হচ্ছে। কী করব বলুন?” এ দিকে হোমে ধনীকারর মৃত্যুর তদন্ত চেয়ে গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতি জেলা পুলিশ অফিসের সামনে বিক্ষোভ দেখিয়েছে।





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.