মোদীর ভুল নিয়ে তরজায় কংগ্রেস, বিজেপি
রেন্দ্র মোদীর ইতিহাস জ্ঞান নিয়ে সরগরম রাজধানীর রাজনীতি। কংগ্রেসের কটাক্ষের জবাবে পাল্টা সরব বিজেপি।
সর্বশেষ উদাহরণ ২৯ অক্টোবর, আমদাবাদের ঘটনাকে ঘিরে তরজা।
সর্দার বল্লভভাই পটেল জাতীয় সংগ্রহশালার উদ্বোধন উপলক্ষে সে দিন যে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল, তার আগাগোড়া দায়িত্বে ছিল রাজ্য কংগ্রেস। মঞ্চে ছিলেন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ, রাজ্যপাল কমলা বেনীওয়াল ও সংগ্রহশালার ট্রাস্টের চেয়ারম্যান তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ধিংসা পটেল। আর রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে নরেন্দ্র মোদী। সেই অনুষ্ঠানেই সর্দার বল্লভভাই পটেলকে নিয়ে কংগ্রেস-বিজেপির তরজা শুরু। ওই অনুষ্ঠানেই নেহরু-গাঁধী পরিবারকে ঠেস দিতে গিয়ে মোদী বলেন, সর্দার পটেল দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী হলে দেশের চেহারাটা বদলে যেত।
সেই অনুষ্ঠানেই মোদী বলেন, সর্দার পটেল আমদাবাদ পুরসভার কাউন্সিলর থাকার সময়েই মহিলা সংরক্ষণের ব্যাপারে উদ্যোগী হন। সর্বসম্মতিতে একটি প্রস্তাবও পাশ করান এবং সালটা ১৯১৯। মোদীর পরে বক্তব্য রাখতে উঠে ধিংসা পটেল বলেন, সর্দার পটেল অবশ্যই মহিলা সংরক্ষণের ব্যাপারে অনেকের আগে উদ্যোগী হয়েছিলেন। কিন্তু সালটি মোদী ভুল বলেছেন। ওটি ১৯১৯ নয়, ১৯২৬। সঙ্গে সঙ্গে দর্শক আসনে হাজির কিছু কংগ্রেস সমর্থক উঠে দাঁড়িয়ে ‘ফেকু-ফেকু’ বলে চেঁচাতে থাকেন। কংগ্রেসের অভিযোগ, মোদী মিথ্যে কথার জাল বোনেন। তাই তিনি মেকি বা ‘ফেক’। কংগ্রেসের একাংশ তাই মোদীকে ‘ফেকু’ বলে ডাকেন।
নিজের রাজ্যে এ ধরনের অনুষ্ঠানে কংগ্রেস সমর্থকদের হইচইয়ে অস্বস্তিতে পড়ে যান মোদী। মঞ্চে বসেই তিনি আই-প্যাডটি নিয়ে ১৯১৯ সালের আমদবাদ পুরসভার নথি বের করে ফেলেন। ধিংসা তখনও বক্তব্য রেখে চলেছেন। তার মধ্যেই পাশে বসা প্রধানমন্ত্রীকে মোদী দেখিয়ে দেন সর্দার পটেলের প্রস্তাবটি। সেই সময় জেলা পুরসভা আইনের ১৫ (১) (সি) ধারায় মহিলারা ভোটে লড়তে পারতেন না। পটেল সেই ধারার সংশোধনের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। মোদী নিজে আর সেই মঞ্চে বলার সুযোগ পাননি। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীকে তিনি দেখিয়ে দেন, ধিংসার বক্তব্য ভুল। তিনিই ঠিক বলেছেন। গত কাল দলের নির্বাচনী কমিটির বৈঠকে যোগ দিতে দিল্লি এসে লালকৃষ্ণ আডবাণী, সুষমা স্বরাজ, অরুণ জেটলিদের কাছে গল্পচ্ছলে গোটা ঘটনাটা জানান মোদী।
গত ক’দিন ধরেই ঐতিহাসিক ঘটনা বা তথ্য নিয়ে মোদীর ‘ভুল-কথা’ এখন আলোচনার বিষয়। মোদী-বিরোধীদের অভিযোগ, উদয়পুরে তিনি বলেছিলেন, জওহরলাল নেহরু সর্দার পটেলের অন্ত্যেষ্টিতে যাননি। অথচ তথ্য-সম্প্রচার মন্ত্রক ভিডিও প্রকাশ করে জানিয়েছে, মোদীর ওই বক্তব্য ভুল। সম্প্রতি পটনার ‘হুঙ্কার-সভা’য় মোদী বলেছেন তক্ষশিলা বিহারে। ওই সভাতেই গ্রিক সম্রাট আলেকজান্ডার গঙ্গার তীর পর্যন্ত পৌঁছে গিয়েছিলেন বলে এবং চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যকে গুপ্ত বংশের সম্রাট বলে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের কটাক্ষের মুখে পড়েছেন মোদী। কংগ্রেস নেতৃত্বও ছাড়ছেন না। আজ কপিল সিব্বল বলেন, “মোদী কোন ইতিহাস বই পড়েছেন জানি না! চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য যে গুপ্ত বংশের রাজা ছিলেন না, বা আলেকজান্ডার কখনও গঙ্গা পর্যন্ত পৌঁছননি, কিংবা তক্ষশীলা যে পাকিস্তানে এগুলিই তিনি জানেন না! যিনি নিজে দেশের ইতিহাস জানেন না, তিনি কী ইতিহাস তৈরি করবেন?” কংগ্রেস নেতাদের বক্তব্য, এ বারে এক জন ইতিহাসের শিক্ষক রাখুন মোদী! এক কংগ্রেস নেতার কথায়, “মোদী অনেক দিন ধরেই অনেক ভুলের মালা তৈরি করেছেন!”
আমদাবাদের ঘটনায় মোদী অবশ্য ভুল করেননি। উল্টে দ্রুত ঠিক তথ্য বের করে তা স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীকে দেখিয়েছেন। কিন্তু তাতেও কংগ্রেসের বাক্যবাণ থামছে কই! কংগ্রেস নেতাদের বক্তব্য, মোদী যে তথ্য দেখিয়েছেন, তাতে লিঙ্গ বৈষম্য ঘোচানোর কথা বলেছিলেন বল্লভভাই। মহিলা সংরক্ষণের নয়। কিন্তু মোদী শিবিরের দাবি, যে মহিলারা ভোটেই লড়তে পারতেন না, তাঁদের লড়ার ব্যবস্থা করে দেওয়া তো সেই লক্ষ্যেই এগোনো। বিজেপি নেতাদের কটাক্ষ, “কংগ্রেসের আসলে ‘মোদী-ফোবিয়া’ হয়েছে। সব কিছুতেই মোদী দেখে!”

পুরনো খবর:

মোদীকে সমর্থন লতার
বিজেপির প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী নরেন্দ্র মোদীর সমর্থনে মুখ খুললেন লতা মঙ্গেশকর। শুক্রবার মোদী পুণেতে দীননাথ মঙ্গেশকর সুপারস্পেশ্যালিটি হাসপাতালের উদ্বোধন করেন। সেখানে লতা বলেন, “মোদী আমার ভাইয়ের মতো। আমরা সকলেই চাই মোদী প্রধানমন্ত্রী হোন।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.