ভবঘুরেদের হোমের দশা দেখে উদ্বেগ প্রকাশ মন্ত্রীর
নিজস্ব সংবাদদাতা • উত্তরপাড়া |
হুগলি জেলা সমাজকল্যাণ দফতর সূত্রের খবর, হোমটি ২২ বিঘা জমির উপর তৈরি। ২৬৭ জন মহিলা আবাসিকের বেশির ভাগই মনোরোগী। কিন্তু তাঁদের পৃথক থাকার কোনও বন্দোবস্ত নেই। নিয়মিত চিকিৎসা তো দূরের কথা। নিয়মিত স্বাস্থ্যপরীক্ষাও হয় না বলে অভিযোগ। নিয়মিত জনা তিরিশ কর্মীকে পুরো ব্যবস্থা সামাল দিতে হিমসিম খেতে হয়। তাঁদের মধ্যে পুরুষ কর্মীদের আবার ওয়ার্ডের ভিতরে ঢোকারও নিয়ম নেই।
হোমের আনাচ-কানাচ ঘুরে দেখে মন্ত্রী নথিপত্রও খুঁটিয়ে দেখেন। পরে বলেন, “এখানে অতিরিক্ত আবাসিক আছে। তাঁদের সংখ্যার অনুপাতে শৌচাগার কম। আমরা চাইছি যাতে সুস্থ মেয়েদের আলাদা রাখা যায়।” মন্ত্রীর সংযোজন, “আসলে এখানে রক্ষণাবেক্ষণ ঠিকমতো হচ্ছে না। রান্নাঘরটি মূল ভবনের বাইরে করা দরকার। আমরা ভবন সংস্কার থেকে শুরু করে অন্যান্য পরিকাঠামো ঢেলে সাজার দিকে নজর দেব।” অভিযোগ ওঠে, হোম চত্বরে ধেড়ে ইঁদুরের উৎপাত রয়েছে। আবাসিকের মৃত্যুর পরে দেহ ইঁদুরে খুবলে খেয়েছে, এমন ঘটনাও ঘটেছে বলে। হোম কর্তৃপক্ষ জানান, মৃতদেহ সংরক্ষণ করার ব্যবস্থা এখানে নেই। সব শুনে মন্ত্রী বলেন, “বিষয়টি আমি জানি না। তবে দেখছি।” চিকিৎসকেরও অভাব এই হোমের বড় সমস্যা। হোমের কর্মীদের একটি সূত্র জানাচ্ছে, চিকিৎসকেরা নিয়মিত এখানে আসতেও চান না। ফলে মনোরোগীরা তো বটেই অন্য কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লেও পর্যাপ্ত পরিষেবা পান না। সাবিত্রীদেবী অবশ্য বলেন, “মনোবিদ নিয়মিত আসেন। আসলে এখানকার চিকিৎসক অবসর নেওয়ায় একটু সমস্যা হচ্ছে। তা মেটানোর চেষ্টা করছি।” মন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন হুগলি জেলা সমাজকল্যাণ দফতরের জেলা প্রকল্প আধিকারিক প্রফুল্লকুমার দে। এ ছাড়াও ছিলেন উত্তরপাড়া পুরসভার চেয়ারপার্সন অদিতি কুণ্ডু এবং চেয়ারম্যান-ইন-কাউন্সিল দিলীপ যাদব।
ওই হোম থেকে বেরিয়ে মন্ত্রী পাশের অনাথ মহিলাদের হোমে যান। কয়েক মাস আগে এই হোমেরই পাঁচিল টপকে বেশ কয়েক জন যুবতী পালিয়ে যান। হোমের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। এর পরেই নড়েচড়ে বসে জেলা প্রশাসন। হোমের একটি ঘরে ঢুকে দুর্গন্ধ নাকে আসায় প্রশ্ন করেন মন্ত্রী। হোম-কর্মীরা তাঁকে বোঝান, পাখা বন্ধ থাকায় সামান্য দুর্গন্ধ হয়েছে। মন্ত্রী অবশ্য ওই জবাবে সন্তুষ্ট হননি। তবে পরে হোম ঘুরে দেখে সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন। হোমের মেয়েরা মন্ত্রীকে গান গেয়ে শোনায়। সেখান থেকে বেরিয়ে সাবিত্রীদেবী জানান, এখানকার বেশ কিছু মেয়ে কন্যাশ্রী প্রকল্পে টাকা পাচ্ছে। মেয়েদের স্বনির্ভর করার লক্ষে ইতিমধ্যেই কম্পিউটার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। এ বার বিউটিশিয়ান ট্রেনিং দেওয়া হবে।
|