ভগিনী নিবেদিতার মৃত্যু ও জন্মদিন পালন রয় ভিলায়
নিবেদিতার প্রয়াণদিবস পালন। ছবি: অনিতা দত্ত।
দার্জিলিঙের লেবং কার্ট রো-এর রয় ভিলা। ১৯১১-র ১৩ অক্টোবর এ বাড়িতেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন ভগিনী নিবেদিতা। সম্প্রতি রামকৃষ্ণ মিশন বাড়িটি অধিগ্রহণ করে গড়ে তুলেছে নিবেদিতা এডুকেশনাল অ্যান্ড কালচারাল সেন্টার। রামকৃষ্ণ মিশন (দার্জিলিং)-এর উদ্যোগে এ বাড়িতেই প্রথম পালিত হল নিবেদিতার একশ’দুইতম প্রয়াণবার্ষিকী। তিনতলা বাড়িটির একতলার একটি কক্ষে নিবেদিতার ছবিতে পাহাড়িয়াদের প্রথামাফিক খাদা পরিয়ে শ্রদ্ধা জানান জেলাশাসক পুনিত যাদব, অতিরিক্ত জেলাশাসক কৌশিক ভট্টাচার্য, মহকুমাশাসক কৌশিক পাল, এস পি কুণাল আগ্রবাল-সহ আরও অনেকে। শ্রদ্ধা নিবেদন করতে আসেন স্থানীয় পাহাড়ি মানুষজনেরাও। বিতরণ করা হয় ভোগ হিসাবে নিবেদন করা চকোলেট, চানাচুর আর কেক। পাশাপাশি ২৮ অক্টোবর সেখানেই পালিত হল তাঁর ১৪৭তম জন্মদিনটিও। কেন্দ্রের সম্পাদক নিত্যসত্যানন্দ জানান, ওই দিনই ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্টের অন্তর্গত গদাধর অভ্যুদয় প্রকল্পের কাজ শুরু করা হয়েছে। দার্জিলিং শহর ও সংলগ্ন এলাকার ৬ থেকে ১২ বছর বয়সি প্রায় ৫০ জনকে এই প্রকল্পের আওতায় আনা হয়েছে। ছুটির পর এই কেন্দ্রে এসে নিখরচায় কোচিঙের সুযোগ নিতে পারবে। তাদের খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থা থাকবে। ২৮শে তাঁদের হাতে সাবান-শ্যাম্পু, ব্রাশ-পেস্ট, খাতা-পেন তুলে দেওয়া হয়। তিনি আরও জানান, মাসখানেকের মধ্যে ফ্রি মেডিক্যাল ক্যাম্প চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে। এর মধ্যে মিশন কর্তৃপক্ষ ঝড় ও আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত দার্জিলিঙের মানুষদের জন্য ত্রাণের ব্যবস্থা করেছে।

পেশা ডাক্তারি নেশা সাহিত্য
তিনি চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ। সকাল সন্ধ্যা ব্যস্ত থাকেন পেশাগত কারণে। সন্ধ্যার পর অবসর। সেই অবসর তাঁর, অর্থাৎ জলপাইগুড়ি শহরের নিরঞ্জন হালদারের হাতে তুলে দেয় কাগজ আর কলম। সেই কাগজে তাঁর কলম লেখে অজস্র ছড়া। এ পর্যন্ত প্রকাশিত ছড়ার সংখ্যা প্রায় আড়াইশো। মূলত ছোটদের জন্য লিখলেও, বড়দের জন্যও ছড়া লিখেছেন। সেই সব ছড়া সংকলিত ‘রকমারি’, ‘ছড়াছড়ি’, ‘পশু পাখি ভালবাসি’ প্রভৃতি গ্রন্থে। কখনও তাঁর ছড়ার বিষয় ক্যাঙারু, তিমি, ময়না, কাকতুয়া, কখনও পান্তা বুড়ি, শান্তা মাসি, হাসাহাসি, শব্দজব্দ আর কখনও আম কলা পেয়ারা। চাকরিসূত্রে দেখেছেন ঝাড়খণ্ড-ওড়িশা সীমানার আদিবাসী মানুষদের জীবনযন্ত্রণার সাত সতেরো। ১৯৯৮-এ প্রকাশিত তাঁর কবিতা সংকলন ‘আলোছায়া’ সেই জীবনযন্ত্রণার প্রতিলিপি। প্রতি বছর নিজের খরচে তিন হাজার ছড়ার বই ছাপিয়ে শহরের বিভিন্ন বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের বিনামূল্যে বিতরণ করেন তিনি। কয়েকটি বিদ্যালয়ে তাঁর বই পাঠ্য তালিকায় স্থান পেয়েছে। তিনি লিখেছেন উপন্যাস। দীপাবলির পর প্রকাশিত হবে সে উপন্যাস। লিখেছেন সাধারণ মানুষের জন্য ‘প্রশ্নোত্তরে চর্মরোগ’। সৃষ্টি সম্পর্কে নিরঞ্জনবাবু বলেন, “প্রচার পাবার আশায় কখনও লিখিনি। স্বপ্ন দেখতাম সাহিত্যিক হবার। সেই স্বপ্ন পূরণ হয়নি। ছোটরা বই পেলে খুশি হয়। ওদের আনন্দই আমার পারিশ্রমিক। পরিকল্পনা আছে জীবজন্তু, বিশেষত পাখি, প্রাকৃতিক বিষয় এবং ঘটনা নিয়ে গল্প লেখার। আগামী পাঁচ বছর ধরে এটাই লিখব।” আর ছড়া? নিরঞ্জনবাবু একটু হেসে বলেছেন, “ক্লাস সিক্সে পড়ার সময় থেকে এই ছড়া লেখার শুরু। আমি চাইলেও ছড়া আমাকে ছাড়বে না।”

ডাকরা চণ্ডী পুজো
ছবিটি তুলেছেন শমিত ঘোষ।
দক্ষিণ দিনাজপুরের হোসেনপুরের জমিদার বাড়ির দুর্গাপুজো এ বছর ৩৭৮ বছরে পড়ল। জেলার অন্যতম প্রাচীন এই ডাকরা চণ্ডীর পুজো। সাধারণ মানুষের কাছে ‘সুধীর চৌধুরীর বাড়ির পুজো’ নামে পরিচিত। ডাকরা চণ্ডীর স্নিগ্ধ শান্ত রূপ। দেবীর ডান দিকে গণেশ ও লক্ষ্মী এবং বাম দিকে থাকে সরস্বতী ও কার্তিক। পুজো হয় বৈষ্ণব মতে। পরিবার সূত্রে জানা যায় যে ছয় পুরুষ আগে এই পুজোর প্রচলন হয়। পুজো শুরুর সময় এই অঞ্চল জঙ্গলাকীর্ণ ছিল। পঞ্চমুণ্ডির আসনে বসে এখানে কয়েক জন সাধক মাতৃ আরাধনা করতেন। পরবর্তীতে চৌধুরী পরিবারের পূর্ব পুরুষ রামপ্রসাদ মণ্ডল ডাকরা চণ্ডীর পুজোর প্রচলন করেন। এরপর এই পরিবারের বংশধর শশীভূষণ বৃটিশদের দেওয়া চৌধুরী উপাধি পান। সে সময় পুজোর সংকল্প হত মহারাজ বাহাদুর সিংহের নামে।
এই পুজোর বিশেষ বৈশিষ্ট হল যে ষষ্ঠী থেকে দশমী পর্যন্ত পুজো উপলক্ষে চণ্ডীমঙ্গল গান হয়। পুজোয় বলি নিষিদ্ধ। এই পুজোর অসুর হয় সবুজ রঙের এবং সিংহ সাদা। পুজো হয় ‘সপ্তকল্পরম্ভ’ বিধান অনুযায়ী। বর্তমানে পুজো করেন সুজিত চক্রবর্তী। পুজোর পর আদিবাসী পুরুষদের ঘাড়ে করে মাকে সদরঘাটে নিয়ে যাওয়াটাই দীর্ঘ দিনের প্রচলিত রীতি। হোসেনপুর, রায়নগর-সহ আশপাশের মানুষজন পুজোর কয়েকটি দিন ডাকরা চণ্ডীর আরাধনায় মেতে ওঠেন।





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.