পুনর্বাসন নেই স্ট্রোক-রোগীদের, উদ্বিগ্ন ডাক্তারেরা
প্রতি বছর পশ্চিমবঙ্গে প্রতি এক লক্ষ মানুষের মধ্যে আনুমানিক ১৪৫ জন স্ট্রোকে আক্রান্ত হন। স্ট্রোকের ফলে চিরকালের মতো পঙ্গু বা দৃষ্টিহীন হয়ে যান এর অন্তত অর্ধেক। তা সত্ত্বেও এখনও সরকারি স্তরে স্ট্রোকের রোগীদের আলাদা ভাবে চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের কোনও কেন্দ্রই তৈরি হয়নি। সরকারি হাসপাতাল, এমনকী মেডিক্যাল কলেজেও, এই ধরনের পুনর্বাসন অমিল। মঙ্গলবার বিশ্ব স্ট্রোক দিবসে এ ব্যাপারেই উদ্বেগ প্রকাশ করেন স্নায়ু বিশেষজ্ঞ ও ফিজিক্যাল মেডিসিনের চিকিৎসকেরা।
স্ট্রোক দু’রকমের হতে পারে। প্রথমত, মাথার শিরা ছিঁড়ে হেমারেজিক স্ট্রোক। দ্বিতীয়ত, শিরার মধ্যে রক্ত জমাট বেঁধে ইসকিমিক স্ট্রোক বা থ্রম্বোসিস। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ভারত-সহ বিশ্বের বিভিন্ন স্বল্প আয়ের দেশে গত কয়েক বছরে স্ট্রোক হু-হু করে বেড়ে চলেছে। স্ট্রোকের প্রাবল্য দেখতে ২০০৩ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত কলকাতা ও তার আশপাশে প্রায় ৫০ হাজার মানুষের উপর একটি সমীক্ষা চালিয়েছিল ‘বাঙুর ইনস্টিটিউট অব নিউরোলজি’ এবং কলকাতার বাইপাস সংলগ্ন একটি বেসরকারি হাসপাতালের নিউরোসায়েন্সেস বিভাগ। সমীক্ষক দলের অন্যতম চিকিৎসক তাপসকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এখানে যত লোক স্ট্রোকে আক্রান্ত হন, তাঁদের মধ্যে অন্তত ৪০% উপযুক্ত চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের অভাবে আক্রান্ত হওয়ার এক বছরের মধ্যেই মারা যান। ইউরোপ-আমেরিকার বিভিন্ন দেশে যা মাত্র ১৩-১৫%। তা সত্ত্বেও সরকারি স্তরে কোনও ভ্রূক্ষেপ নেই।”
ফিজিক্যাল মেডিসিন বিশেষজ্ঞ মৌলিমাধব ঘটক যেমন বললেন, “ভারতে প্রতি বছর প্রায় ২০ লক্ষ মানুষের স্ট্রোক হয়। এর মধ্যে পঙ্গু হয়ে যান প্রায় ৬-৭ লক্ষ। চিকিৎসাশাস্ত্র অনুযায়ী এঁদের ২০-৩০%-এর হাসপাতাল বা চিকিৎসাকেন্দ্রে রেখে পুনর্বাসন দরকার। তা হলে অন্তত ২০%-এর অকাল মৃত্যু ঠেকানো
যায়। কিন্তু আমাদের রাজ্যে তো দূর অস্ত্, আমাদের দেশেই সরকারি স্তরে এমন হাসপাতাল হাতেগোনা।” কেন্দ্রীয় সরকার বছর দু’য়েক আগে ‘নন-কমিউনিকেবল ডিজিজ প্রোগ্রাম’ চালু করেছে। পশ্চিমবঙ্গে এর জন্য বাছা হয়েছে দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি ও দক্ষিণ দিনাজপুর জেলাকে। কিন্তু অভিযোগ, সেই প্রকল্পেও শুধুমাত্র সিসিইউ বা আইসিইউতে রেখে রোগীদের চিকিৎসার ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু পুনর্বাসনের অংশ শূন্য। স্ট্রোক বিশেষজ্ঞ দীপেশ মণ্ডলের কথায়, “কত বার সরকারকে বলা হয়েছে, স্ট্রোক নিয়ে বহুল প্রচার দরকার। পুনর্বাসন কেন্দ্র দরকার, গ্রামের দিকের রোগীদের চিকিৎসার জন্য টেলিমেডিসিন শুরু করা উচিত। কিন্তু কে কার কথা শোনে!”
এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য দফতরের মুখপাত্র সুমন বিশ্বাসের জবাব, “এখনও পর্যন্ত সরকারের তেমন কোনও পরিকল্পনা নেই। তবে কেন্দ্রের সহায়তায় এ রাজ্যে কিছু দিনের মধ্যে একটি ‘যোগ মেডিক্যাল কলেজ’ খোলা হবে। সেখানে স্ট্রোক রোগীদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা রাখার বিষয়ে চিন্তাভাবনা চলছে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.