সম্পাদক সমীপেষু...
পুজোর কোপে

দুর্গাপুজোর সময় রাস্তায় জ্যাম-জট এড়াতে প্রশাসন নাগরিকদের সরু ফুটপাত ব্যবহার করতে বাধ্য করেছে। যে সব জায়গায় ফুটপাত দখল করে পুজো বা স্টল হয়েছে, সেখানে অবশ্য ছাড় মিলেছে। দুর্গাপুজোর সময় উত্তর কলকাতার অবস্থা দাঁড়ায় সুন্দরবনে বন্যজন্তু দেখার মতো। মানে মানুষ থাকে খাঁচায়, বন্যজন্তুরা থাকে খোলা জায়গায়। এখানে পুজোর সময় দেখা যায় গাড়ি ও ভি আই পি-দের রাস্তা ফাঁকা আর সাধারণ দর্শনার্থীরা ভিড়ে জেরবার হয়ে যান। বারণ সত্ত্বেও পুজোর কর্মকর্তারা প্যান্ডেলে প্রবেশ পথ সরু করে ভিড় বাড়াতে চেষ্টা করেন। এখানে আরও একটা প্রশ্ন ওঠে। আজকাল বহু সংস্থা পুজোর সময় বহু রকমের পুরস্কার দেন। তাঁরা এ ব্যাপারে একটু সচেতন হতে পারেন না কি? সরু গলির ভেতর পুজোগুলিকে কোন যুক্তিতে পুরস্কৃত করা হয়, কে জানে?
নরক ১
অতীশচন্দ্র ভাওয়াল হাওড়া স্টেশনের যে নরকদশা কথা লিখেছেন তা সত্যি। (‘অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ’, সম্পাদক সমীপেষু, ২৫-৯) শুধু হাওড়া স্টেশন চত্বর নয়, হাওড়া সাবওয়ে-সহ সমগ্র হাওড়া শহর সম্প্রতি বড্ড বেশি অপরিচ্ছন্ন। নানা সমস্যায় পরিপূর্ণ ও বসবাসের অযোগ্য হয়ে উঠেছে। হাওড়া সাবওয়ের দেওয়ালে দীর্ঘ দিন রঙের প্রলেপ পড়েনি। বিদ্যুৎ পরিবাহী তার যেখানে সেখানে ছিঁড়ে ঝুলছে, দুর্গন্ধে পরিপূর্ণ, ভিতরের সিঁড়ি বিভিন্ন জায়গায় ভেঙে থাকার ফলে বৃদ্ধ ও অশক্ত মানুষের পক্ষে সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা করা অত্যন্ত কষ্টের, সাবওয়ের ভেতরে হকারদের চিৎকার পরিবেশকে প্রতিনিয়ত আরও অসহ্য করে তোলে।
এই শহরে প্রতি দিন যে কত কষ্ট করে বসবাস করতে হচ্ছে তা কেবল হাওড়াবাসীরাই জানেন। বর্ষার পর রাস্তার কঙ্কাল বের হয়ে পড়েছে। অতিকায় খানাখন্দে ভরা এই শহরে যাত্রী-বোঝাই বাস বা অন্যান্য যানবাহন যে কোনও সময় বড় দুর্ঘটনায় পড়তে পারে, পড়েও। রাস্তাঘাট থেকে পয়ঃপ্রণালী, পরিস্রুত পানীয় জল থেকে প্রশাসনিক কাঠামো সব বিষয়েই অভিযোগের অন্ত নেই। হাওড়া পুরসভার নির্বাচনের আর বেশি দেরি নেই। আগামী দিনে হাওড়া পুরসভা যে রাজনৈতিক দলের শাসনেই চলুক না কেন, হাওড়াবাসী হিসাবে আশা করব যে, এ শহরের মৌলিক সমস্যাগুলির সমাধান হবে।
নরক ২
অচিন চক্রবর্তী লিখেছেন ‘নির্মল গ্রাম’ নিয়ে। (‘নন্দীগ্রাম পেরেছে, পশ্চিমবঙ্গ পারবে না কেন’, ২৩-১০) কিন্তু যদি এক বার দৃষ্টিটা শহর তথা নগরের দিকে ফেরাই? এখানে বসবাসকারী অন্ত্যেবাসীদের কথাও বলছি না। বলতে চাইছি, যারা জন্ম থেকেই টয়লেট ব্যবহারে অভ্যস্ত, সেই মানুষদের কথা। পেশাগত কারণেই অনেক মেয়ে বা তাদের মায়েদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে যে সাধারণ তথ্যটা পরিষ্কার হয়ে যায়, তা যে শুধু ভয়ঙ্কর তাই নয়, লজ্জাকরও বটে। বহুসংখ্যক মেয়েই, শিশু থেকে সদ্য কৈশোরোত্তীর্ণাও সারা দিন বিদ্যালয়ে কাটাবার সময়টুকুর মধ্যে এক বারও শৌচাগার ব্যবহার করে না। এবং যেটা আরও মারাত্মক, যাতে ব্যবহার করতে না-হয়, সে জন্য সারাটা দিন জলও খায় না। কারণটা আর কিছুই নয়, স্রেফ ‘যাওয়া যায় না’। এমনকী মাসের বিশেষ ক’টি দিনও তারা শৌচালয়ে যায় না। এর ফলে যা হওয়ার তাই হচ্ছে। শহরে শিক্ষিত মেয়েদের মধ্যে অনেকেই বেশ কিছু অবাঞ্ছিত অসুখে ভুগছে।
সাইকেল
কলকাতার রাস্তায় সাইকেল চালানোর নিষেধাজ্ঞার প্রসঙ্গে সম্প্রতি শোনা এক অভিজ্ঞতার কথা জানাই। বন্ধুপুত্র উচ্চশিক্ষার জন্য নেদারল্যান্ডস গিয়েছে। পৌঁছে জানাল, তার কলেজ বাসস্থান থেকে ৬ কিলোমিটার দূরে। ওখানকার বাসিন্দারা উপদেশ দিল, সাইকেল কিনে যাতায়াত করতে। সেই মতো কাজ। হঠাৎ এক দিন রাস্তায় দেখে, দেশের প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং সাইকেল চালিয়ে অফিস যাচ্ছেন। সান্ত্রিরা অনুসরণ করছে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.