নিয়ম না মেনে ক্লিনিক চালানোর অভিযোগে জেলার দু’টি আল্ট্রা সোনোগ্রাফি ক্লিনিক বন্ধ করে দিল বর্ধমান জেলা স্বাস্থ্য দফতর। আরও একটি ক্লিনিককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, অন্যান্য মহকুমাতেও বেশ কয়েকটি ইউএসজি ক্লিনিক বেআইনি কাজকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। বর্ধমানের সিএমওএইচ প্রণবকুমার রায় বলেন, “বেআইনি ইউএসজি ক্লিনিক বন্ধ করতে অভিযান শুরু হয়েছে। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের একটি দল আচমকা নানা জায়গায় হানা দেবে।”
ইউএসজি ক্লিনিক চালানোর জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে সিই (ক্লিনিকাল এস্টাব্লিশমেন্ট) শংসাপত্র থাকা বাধ্যতামূলক। বর্ধমানের খোসবাগানের একটি ক্লিনিকে নির্দিষ্ট সময় পেরোনোর পরেও সেই শংসাপত্র ছাড়াই ব্যবসা চলছিল। বিষয়টি জেলা স্বাস্থ্য দফতরের নজরে আসায় সম্প্রতি ওই ক্লিনিকটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। কালনার একটি ক্লিনিকে হানা দিয়েও স্বাস্থ্য কর্তাদের মাথায় হাত। তাঁরা গিয়ে দেখেন, ওই ক্লিনিকে ইউএসজি যন্ত্রটিই নেই। এরপরে ক্লিনিকটি বন্ধ করে দেয় স্বাস্থ্য দফতর। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা বলেন, “আমাদের কাছে বৈধ ১৬৭টি ইউএসজি ক্লিনিকের তালিকা রয়েছে। এর মধ্যে নিয়ম না মানায় ওই তিনটি ক্লিনিক চিহ্নিত হয়েছে। তবে আরও ক্লিনিক রয়েছে যারা অবৈধ। তাদের যন্ত্রগুলির রেজিস্ট্রশেন আছে কি না জানা নেই।” ক্লিনিকগুলি বেশ কয়েক বছর ধরে ব্যবসা করছে বলেও তাঁর ধারণা। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, আসানসোল মহকুমায় প্রায় ১৫টি ও দুর্গাপুর মহকুমায় প্রায় ১০টি বেআইনি ইউএসজি ক্লিনিক রয়েছে। ভ্রূণের লিঙ্গ নির্ধারণ প্রতিরোধ আইন (পিসি এবং পিএনডিটি অ্যাক্ট) অনুযায়ী, এই ধরণের ক্লিনিকের রেজিস্ট্রেশন ও শংসাপত্র থাকা বাধ্যতামূলক এবং ক্লিনিকের মধ্যে লিঙ্গ নির্ধারণ যে আইনত দণ্ডনীয় তা লেখা থাকাটাও জরুরি।
কিন্তু এত দিন ধরে স্বাস্থ্য দফতর কোনও ব্যবস্থা নেয়নি কেন? স্বাস্থ্য কর্তারা জানান, বেআইনি ভাবে ইউসিএসজি ক্লিনিক চলার কথা জানতেই তাঁদের অনেক সময় লেগেছে। তার উপর লিখিত অভিযোগও ছিল না। ফলে গড়িমসি হয়েছে। সম্প্রতি কলকাতাতেও স্বাস্থ্য কর্তারা অভিযান চালিয়ে লিঙ্গ নির্ধারণ করার জন্য ৭টি ইউএসজি ক্লিনিক বন্ধ করে দিয়েছেন। বৈধ ইউএসজি ক্লিনিকগুলিই যেখানে সরকারের নিয়ম ভাঙছে, সেখানে বেসরকারিগুলিতে কী কী চলছে, সেই প্রশ্নেই নড়েচড়ে বসেছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর। জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রণবকুমার রায় বলেন, “আমরা এ বার ওই সব ক্লিনিকেও অভিযান চালাব।” ইউএসজি ক্লিনিকের পাশাপাশি কয়েকটি এক্স-রে ক্লিনিকও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। |
