অপহরণের ছক ভেস্তে দিল ছ’বছরের খুদে
য়স মাত্র ছয়। কৃষ্ণনগরের এই শিশুটির জন্যই অপহরণকারীদের হাত থেকে রক্ষা পেল বাড়ি থেকে পালানো দুই ছেলে।
পড়তে ভাল লাগে না। ভাল লাগে না রোজ স্কুলে যেতে। শুধু খেলতে ইচ্ছা করে। কিন্তু বাবা-মা সেটা করতে দেন না। উল্টে পড়া না করলে ভাগ্যে জোটে চড়-চাপড়। এই রাগেই সোমবার দুপুরে ঘর ছেড়ে ট্রেনে উঠে পড়েছিল কৃষ্ণনগরের চাপড়া থানার সোনপুকুর এলাকার বাসিন্দা বছর তেরোর রশিদ বিশ্বাস। স্থানীয় একটি মিশনের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র রশিদ। বাড়ি থেকে পালানোর এই অভিযানে সঙ্গী ছিল তার জ্যাঠার ছেলে আট বছরের আক্রম বিশ্বাস। দু’জনকে দেখে তাদের সঙ্গে ভাব জমিয়ে তাদের কলকাতায় কাজ দেওয়ার প্রলোভন দেখায় এক ব্যক্তি। পুলিশের অনুমান, ওই ব্যক্তি কোনও ছেলেচুরির দলের সঙ্গে যুক্ত।
কিন্তু ওই ব্যক্তির আশায় জল ঢেলে দিয়েছে ছ’বছরের শরিফ। কী ভাবে?
ছোট্ট শরিফ। —নিজস্ব চিত্র।
শরিফের বাবা শফিক শেখ জানান, তাঁদের বাড়ি রশিদ ও আক্রমের পাশের গ্রামে। এ দিন তিনি স্ত্রী ও ছেলেকে নিয়ে তাঁর কর্মক্ষেত্র ওড়িশায় ফিরছিলেন। রানাঘাট স্টেশন পার হয়ে পায়রাডাঙা স্টেশনে আসার পরেই শরিফ ওই দু’জনকে দেখতে পায়। শুরু হয় কথাবার্তা। শরিফ পরে জানায়, সে ওই দু’জনকে চিনত। তাদের কথা সে তার বাবা-মাকে বলে। শরিফের বাবা শফিক জানান, ছেলের কথা শুনে তিনি ওই দু’টি ছেলেকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে শুরু করেন। রশিদ ও আক্রম তাঁকে বলে, তারা এক জনের সঙ্গে কলকাতায় চাকরি করতে যাচ্ছে। শফিক জানিয়েছেন, এ কথা শুনে তাঁরা সবাই ওই ব্যক্তি কে, তা জানতে চান। যাত্রীদের শোরগোল শুনে কল্যাণী স্টেশনে ট্রেন থেকে নেমে পালিয়ে যায় ওই ব্যক্তি। পরে যাত্রীরাই শিয়ালদহ স্টেশনে এসে রেল সুরক্ষা বাহিনীর (আরপিএফ) হাতে তুলে দেয় ছেলে দু’টিকে। খবর দেওয়া হয় রশিদ ও আক্রমের বাড়িতে।
এ দিন সন্ধ্যায় টেলিফোনে আক্রমের বাবা সোহরাব আলি বিশ্বাস বলেন, “সকাল থেকেই আমরা ওদের খুঁজে পাচ্ছিলাম না। অনেক খোঁজার পরেও না পেয়ে থানায় যাওয়ার কথা ভাবি। বিকেল ৪টে নাগাদ শফিক শেখ ফোনে আমাদের ঘটনাটি জানায়। কারা ওদের অপহরণ করার চেষ্টায় ছিল, তা কিছুই বুঝতে পারছি না।” রশিদের বাবা শাহিদ বিশ্বাস বলেন, “আমি ওকে মারধর করি না। পড়াশোনা না করলে বকাবকি করি। ও একদমই পড়তে চায় না। অনেক বুঝিয়েছি। তাতেও কোনও ফল হয়নি। পড়ায় ফাঁকি দিতে মাঝে মধ্যেই নানা আত্মীয়ের বাড়িতে গিয়ে থাকত। ইদানীং আমি সেটা বারণ করি। পড়াশোনা করার জন্য বোঝাই।”
এখন কী করবেন? পড়ার জন্য আর চাপ দেবেন?
বাবার উত্তর, “কিছুই বুঝতে পারছি না। আবারও বোঝাব। তাতেও কাজ না হলে তখন ভাবতে হবে।” তিনি বলেন, “একটা ছোট্ট ছেলে শরিফ যে কত বড় কাজ করেছে, তা হয়তো ও নিজেই জানে না। কিন্তু এটা আমরা সারা জীবন মনে রাখব। ওঁদের সবাইকে অনেক ধন্যবাদ। ওঁদের জন্যই আজ ছেলে আর ভাইপোকে ফিরে পেলাম।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.