অভিজ্ঞতায় দেখেছি, সারা বাংলায় গুটিকয়েক দুর্গাপুজো ও কালীপুজো ছাড়া বেশির ভাগ বারোয়ারি পুজোতেই উদ্যোক্তারা সাময়িক বিদ্যুত্ সংযোজনের ক্ষেত্রে ঘোষিত শর্ত এবং চুক্তি মানে না। যার অন্যায় বোঝা বইতে হয় বিদ্যুত্ পরিষেবা সংস্থাগুলিকে অতিরিক্ত বিদ্যুত্ সংস্থান করে। বাস্তব চিত্র হল, পুজো কমিটিগুলি যে ক’দিনের জন্য ঘোষিত চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুতের অগ্রিম মূল্য দেয়, তার সঙ্গে উত্সব-উদ্যোক্তাদের প্রকৃত বিদ্যুত্ ব্যবহারে থাকে বিরাট ফারাক। অর্থাত্ অতিরিক্ত বিদ্যুত্ টানার খোলামেলা প্রবণতা। হিসাব বহির্ভূত বিদ্যুত্ জোগানের অর্থদণ্ড কিন্তু পরিণতিতে বইতে হয় সাধারণ গ্রাহকদেরই। পুজো মণ্ডপে বিদ্যুত্ চুরি রোধে তদারকি বাহিনী থাকে। তারা হানা দেয়, জরিমানা করে, সতর্ক করে দেয়। কিন্তু বিদ্যুত্ লাইন বরাবরের জন্য কাটা অসম্ভব। কারণ, ধর্মীয় অজুহাত। আইন মতে, পুজোকর্তার শাস্তি হওয়া উচিত। কিন্তু শারদোত্সবের ধর্মীয় দোহাই দিয়ে পার পেয়ে এরা ফি-বছর প্রশ্রয়ধন্য হয়ে আসছে। |
বিদ্যুত্ পরিষেবা সংস্থাগুলি শারদোত্সবের অতিরিক্ত বিদ্যুত্ জোগান দিতে এবং বণ্টন ব্যবস্থা স্বাভাবিক রাখতে অহোরাত্র ব্যস্ত। অপর দিকে, চুক্তিতে স্বাক্ষর করেও অধিকাংশ পুজো কমিটি মণ্ডপ বানানোর দিন থেকে আইনবহির্ভূত ভাবে সরাসরি বণ্টন লাইন থেকে বিদ্যুত্ চুরি করতে থাকে, যা চুক্তি শেষের পরেও আরও আলোকোজ্জ্বল রাখা হয়। বিদ্যুত্ চুরিজনিত অতিরিক্ত বিদ্যুতের অন্যায় চাহিদা পূরণের দায় এসে পড়ে পরিষেবা সংস্থাগুলির ওপর। এ আমার তিন দশকের পেশাগত অভিজ্ঞতা। দুঃখের কথা, উদ্যোক্তাদের পেশিবলে স্থানীয় আবাসিকদের এমন সব অবৈধ দৌরাত্ম্যকে নীরবে সমর্থন করতে হয়। অতিরিক্ত বিদ্যুত্ টেনে নেওয়ার ফলে যদি স্থানীয় ভাবে সাময়িক বিদ্যুত্ চলে যায় তো সর্বনাশ সব দোষ বিদ্যুত্ পরিষেবা সংস্থার।
রাজ্যে বর্তমানে যে বিদ্যুত্ জোগানের পরিস্থিতি, তাতে অনায়াসেই পুজোর চাহিদা পূরণ সম্ভব। কিন্তু অঘোষিত বিপুল বিদ্যুত্ চুরির ফলে অন্য সূত্র থেকে বিদ্যুত্ আমদানির ব্যবস্থা করতে হয়। জনগণ যদি মণ্ডপ-ভিত্তিক বিদ্যুত্ চুরিরোধে সামিল না-হন, তা হলে গুটিকয়েক সরকারি পরিদর্শক এবং স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষে এমন ধর্মের নামে অধর্মরোধ অসম্ভব। কোনও পুজো মণ্ডপে বিদ্যুত্ চুরি ধরা পড়লে সঙ্গে সঙ্গে সেই লাইন কেটে দেওয়া-সহ আগামী দিনে সেই উদ্যোক্তারা আর বিদ্যুত্ পাবে না এমন শর্ত চাপানো হলে অন্যায় নিবারণ সম্ভব।
নীহার মজুমদার।প্রাক্তন মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক
পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিদ্যুত্ পর্ষদ
|
‘আধার কার্ড করাতে আঁধারে হাবুডুবু নগরবাসী’ প্রতিবেদনে (১-১০) যে তথ্যগুলি আমি প্রদান করেছি বলে বলা হয়েছে, তা ঠিক নয়। আমি জনগণনা দফতরের অধিকর্তা নই, সংবাদমাধ্যমকে বিবৃতি দেওয়ার অধিকারীও নই।
অরুণাশীষ চট্টোপাধ্যায়। উপ-অধিকর্তা
জনগণনা দফতর, পশ্চিমবঙ্গ
|
জনগণনা বিভাগের রাজ্যের দায়িত্বপ্রাপ্ত অরুণাশীষবাবুর সঙ্গে এক বার নয়, অন্তত তিন বার ফোনে বিভিন্ন সময়ে কথা বলি। যথেষ্ট সহযোগিতাও পাই। তাঁর উদ্ধৃতি হিসাবে যা উল্লেখ করা হয়েছে, সেটি তাঁর কাছেই পাওয়া।
|
আমাদের রাজ্যে ট্যুরিস্ট পুলিশ ব্যবস্থার প্রচলন হওয়া উচিত। যে সব জায়গা পর্যটনের জন্য বিখ্যাত, সেখানে ট্যুরিস্ট পুলিশ থানা থাকলে পর্যটকদের হয়রানি বন্ধ হবে। পর্যটন শিল্পকে ঘিরে নানা ধরনের অসাধু চক্র কাজ করে, যার মাসুল গুনতে হয় অসহায় পর্যটকদের। হোটেল বুকিংয়ে ধোকা, গাড়িওয়ালার ধাপ্পা, এজেন্সির লোকজনের দায়িত্বহীনতা ইত্যাদি বহুবিধ সমস্যার মুখোমুখি হতে হয় পর্যটকদের। অথচ সুরাহা তো দূরের কথা, বলারই কোনও জায়গা থাকে না। ট্যুরিস্ট পুলিশই উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ, যাঁরা এই সমস্যার সুরাহা করতে পারেন এবং পর্যটকদের কী করা উচিত বা অনুচিত সে বিষয়ে পরামর্শ দিতে পারেন।
দীপ্তেশ মণ্ডল। চালুয়াড়ি, দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা |