থিম পুজো থেকেই চলচ্চিত্র
ডাকের সাজ
মাদের শেষ, ওঁদের শুরু। আসছে বছর আবার হবে এই আপ্তবাক্যে যখন আমরা বিসর্জনের বিষাদ ভুলে পরের বছরের পুজোর দিকে তাকিয়ে থাকি, পরের বছরের জন্য ওঁদের প্রস্তুতি শুরু হয়ে যায় প্রায় তখন থেকেই। ওঁরা আসলে কলকাতার নানা পুজোর কর্মকর্তারা।
কলকাতার এমনই এক পুজোর কর্মকর্তারা বেরিয়ে পড়েছিলেন পরের বারের পুজোর থিমের সন্ধানে। একেবারে অন্য রকম একটি মণ্ডপ তৈরির ভাবনা আসে ক্লাব সম্পাদকের মাথায়। সেটা রূপায়ণের উদ্দেশ্যেই তাঁরা পাড়ি দেন এক অজ পাড়াগাঁ সাহাগঞ্জের উদ্দেশ্যে। থিমটি রূপায়ণে দরকার ওখানকার এক ধূপ-ব্যবসায়ীর সাহায্য। সাহাগঞ্জের মানুষজনের কাছে এ প্রস্তাব অদ্ভুত আর প্রায় অসম্ভবের মতো। আসলে কলকাতার পুজোর সঙ্গে তাঁরা একেবারেই পরিচিত নন। অনেক বলা-কওয়ার পর রাজি হন তাঁরা। বেরিয়ে পড়েন কলকাতার উদ্দেশ্যে। বায়না ধরে ওঁদের এক ছোট্ট মেয়ে। বাবার সঙ্গে কলকাতা যাবে। কলকাতার পুজোর জাঁক দেখে ঘোর লাগে সাহাগঞ্জের সেই ছোট্ট মেয়েটির চোখে (সঙ্গের ছবি)।
থিমের খোঁজে এক দলের বেরনো আর থিম গড়তে অন্য দলের কলকাতায় আসা এই দুই ধরনের যাত্রা নিয়েই সিনেমা বানাচ্ছেন জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত ‘আমি আদু’ ছবির পরিচালক সোমনাথ গুপ্ত। ছবির নাম ‘ডাকের সাজ’। সম্প্রতি পুজোর সময় বিভিন্ন মণ্ডপে হল ছবির শুটিং। চন্দন গোস্বামীর ক্যামেরায় ধরা পড়ল এ শহরের পুজো, মানুষ, আলো, হই-হুল্লোড়। দুর্গাপুজো বাংলা সিনেমায় নানা ভাবেই উঠে এসেছে, কিন্তু নিউ থিয়েটার্স প্রযোজিত এ ছবিতে বিশেষ ভাবে দেখা যাবে কলকাতার অনেকগুলি বড় পুজো। সেলিমপুর পল্লি, বাবুবাগান, বড়িশা ক্লাব, বড়িশা যুবকবৃন্দ, চক্রবেড়িয়া সর্বজনীন, নাকতলা উদয়ন, লেকপল্লি, বাদামতলা আষাঢ় সংঘের মতো নানা বিখ্যাত পুজোর আবহ ধরা পড়েছে ছবিটিতে। ছবির প্রয়োজনে ব্যবহৃত হয়েছে বাংলার ঐতিহ্যবাহী নাচ, থাকছে মন্দির ও তার ভাস্কর্য অলংকরণ। এই মুহূর্তে শুটিং চলছে মল্ল রাজাদের বিষ্ণুপুর মন্দির চত্বরে।

সিরাজ-স্মরণ
‘তাৎক্ষণিকতা মানুষকে দার্শনিক বোধ থেকে বিযুক্ত করছে। সিরিয়াস বলতে জীবনে যেন আর কিছু অবশিষ্ট নেই। খাঁটি সাহিত্য আসলে জীবনের সিরিয়াস ব্যাপারগুলো নিয়েই। দার্শনিকতাই তার ভিত্তি।’ লিখেছেন প্রয়াত সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজ, তাঁর ‘আত্মকথা’য়, সাহিত্য সৃষ্টির সংকট নিয়ে। তাঁকে নিয়ে বিশেষ সংখ্যা প্রকাশ করেছে সমকালের জিয়নকাঠি (সম্পা: নাজিবুল ইসলাম মণ্ডল)। তাতে ‘আত্মকথন’ বিভাগে এই বিশিষ্ট সাহিত্যিকের একগুচ্ছ রচনা, যা নতুন করে পাঠককে ভাবাবে। ‘আত্মজনের কথা’য় স্ত্রী-সহ স্বজনেরা স্মরণ করেছেন তাঁকে। আর ‘প্রবন্ধ’ বিভাগে তাঁর সাহিত্যসৃষ্টির মূল্যায়ন বহুবিধ রচনায়। সঙ্গে লেখকের সাক্ষাৎকার, চিঠিপত্র, জীবনপঞ্জি, গ্রন্থতালিকা।

ক্যালিগুলা
বোন বা প্রেমিকা দ্রুসিলার মৃত্যু আয়নার সামনে এনে দাঁড় করিয়ে দিয়েছিল ক্যালিগুলা’কে। নিরুপদ্রব বেঁচে থাকার বদলে তিনি বেছে নিয়েছিলেন ধ্বংসের পথ, যার শেষে পড়ে থাকে আত্মবিনাশের অনিবার্য পরিণতি। এই রোমান সম্রাটকে নিয়ে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সমকালে লেখা আলবেয়ার কামু’র নাটক ‘ক্যালিগুলা’র নামচরিত্রে অভিনয়ের পূর্ব মুহূর্তে নিজের ভাবনার কথা বলছিলেন গৌতম হালদার, ‘এ এমন এক চরিত্র যাঁর ধ্বংসাত্মক আকাঙ্ক্ষা লুকনো আছে প্রতিটি মানুষের মধ্যেই’। নভেম্বরে কামু’র শতবর্ষ পূর্তি উপলক্ষে প্রাচ্য’র নতুন প্রযোজনা এই ‘ক্যালিগুলা’র প্রথম অভিনয় আজ ২৮ অক্টোবর সন্ধে সাড়ে ছ’টায় অ্যাকাডেমিতে। নির্দেশক বিপ্লব বন্দ্যোপাধ্যায় সাম্প্রতিক ভয়ঙ্কর সময়ের নিরিখে চিত্রিত করতে চাইছেন ক্যালিগুলাকে, ‘রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে তাঁর অস্থিরতা বা মতিচ্ছন্নতা চিনিয়ে দেবে চারপাশের পৃথিবীর হযবরল সমাজটাকে।’ আর এ-নাটকের ক্যাসিওনিয়া পৌলোমী চট্টোপাধ্যায় জানালেন: ‘আমার চরিত্রটায় এত শেড যে সেটা রীতিমতো চ্যালেঞ্জিং। গৌতম আর বিপ্লব আমাকে অসম্ভব সাহায্য করছেন চরিত্রটাকে অথেনটিক করে তুলতে।

সমাজশিক্ষা
গ্রামীণ মানুষের উন্নতির জন্য স্বামী বিবেকানন্দের নানা চিন্তা ছিল। স্বামীজি বলেছিলেন ‘গরিবদের খাওয়াতে হবে, তাদের শিক্ষিত করতে হবে’। সেই ভাবনায় অনুপ্রাণিত হয়েই রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রম, নরেন্দ্রপুর থেকে প্রকাশিত হয়ে আসছে গ্রামোন্নয়নমূলক বাংলা মাসিক পত্রিকা ‘সমাজশিক্ষা’। এই পত্রিকার প্রবন্ধ-নিবন্ধে গ্রামের মানুষের স্বাস্থ্য, শিক্ষা, চাষবাস থেকে শুরু করে উঠে আসে সমগ্র গ্রামীণ সমাজ। ‘সমাজশিক্ষা’ সম্প্রতি ৫৭ বছরে পড়ল। স্বামী দেবেন্দ্রানন্দ সম্পাদিত সাম্প্রতিক সংখ্যায় স্বামীজির সার্ধশতজন্মবর্ষের শ্রদ্ধার্ঘ্য। অন্য দিকে একই উপলক্ষে জগদ্দলের বিবেকানন্দ এডুকেশন সোসাইটি ফর চিলড্রেন থেকে প্রকাশিত হয়েছে সচিত্র শিশু শ্রমিকদের কথা ও কাহিনী। প্রতিষ্ঠানটি ৩০০ শিশুশ্রমিকের দেখভাল করে, যাতে তারা জীবনে এগিয়ে যেতে পারে। তাদের কথাই উঠে এসেছে বইটির পাতায় পাতায়।

আত্মরক্ষা
মোমবাতি মিছিল বা শুধু আন্দোলন নয়। কাগজ খুললে রোজই যেখানে ধর্ষণের খবর, সেখানে মেয়েদের দরকার আত্মরক্ষার কৌশল শেখা। তাই এগিয়ে এসেছে সিনকিয়োকুসিনকাই ইন্ডিয়া। জাপানি এই সংস্থার কলকাতা শাখা কিছু দিন ধরে আয়োজন করছে ‘আত্মরক্ষা’র প্রশিক্ষণ শিবির। ষোল বছরের উপরে যে কোনও মেয়েই এতে আসতে পারবেন। ওড়না, ফোল্ডিং ছাতা বা পেন এ সবই হতে পারে আত্মরক্ষার মাধ্যম। তা দিয়ে কী ভাবে অতর্কিত আক্রমণের হাত থেকে নিজেকে রক্ষা করবেন তা শেখা যাবে। নভেম্বরে ভবানীপুরের হরিশ পার্কে এই প্রশিক্ষণ হবে। কলেজ বা বিভিন্ন সংস্থাতেও এরা প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। সংস্থার ওয়েবসাইট sgmartialartindia.com

লোকশিল্প
দুর্গাপুজোয় লোকশিল্পীদের কাজ দেখতে কলকাতা এখন অভ্যস্ত। এ বার শ্যামাপুজোয় অন্য ভাবে দেখা যাবে বাংলার লোকশিল্পীদের। থিমের মণ্ডপ সাজাতে নয়, শিল্পীরা আসছেন পুজো প্রাঙ্গণে তাঁদের শিল্পশৈলীর নমুনা নিয়ে প্রদর্শনীতে। আদি বালিগঞ্জ শ্রীশ্রীশ্যামা পূজা পরিষদ গড়িয়াহাটের মেঘমল্লার ভবনের পাশের রাস্তায় এই ব্যতিক্রমী পুজোর উদ্যোগে সঙ্গে পেয়েছেন কলাবতী মুদ্রা, বঙ্গীয় এবং পারম্পরিক কারু ও বস্ত্রশিল্পী সদস্যদের। দুই বাংলার শিল্পীরা আনছেন পূর্ব মেদিনীপুরের গালাপুতুল, চড়িদার মুখোশ, বীরভূমের কাঁথা, নয়া-র পট, বিকনা-র ডোকরা, গমিরা মুখোশ, বিষ্ণুপুরের তাস, নতুনগ্রামের কাঠের পুতুল, আরও অনেক কিছুর সঙ্গে ঢাকা আর টাঙ্গাইলের কাপড়। প্রদর্শনী ৩১ অক্টোবর-৩ নভেম্বর।

কল্পনির্ঝর
স্পেনের সিনেমা বলতেই লুই বুনুয়েল, কার্লো সাওরা, কিংবা পেদ্রো আলমোদোভারের মতো ডাকসাইটে পরিচালকদের কথা মনে পড়ে। কিন্তু স্বল্পদৈর্ঘ্যের কাহিনিচিত্র তৈরি করেও তাক লাগিয়ে দিচ্ছেন, এমন পরিচালকের সংখ্যা কম নেই সে দেশে। এমনই একগুচ্ছ স্পেনের ছবি নিয়ে ‘কান্ট্রি ফোকাস’ বিভাগটি শুরু হচ্ছে এ বারের একাদশ কল্পনির্ঝর ইন্টারন্যাশনাল শর্ট ফিকশন ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল-এ, জানালেন উৎসব-অধিকর্তা এস ভি রামন। এ বারেও সারা দুনিয়ার ফিল্ম ইনস্টিটিউট থেকে বাছাই-করা ছবি উৎসবে। পুণে-র পাশে কলকাতার সত্যজিৎ-নামাঙ্কিত ফিল্ম স্কুলটিরও (সঙ্গে সেখানকারই ছাত্রী শ্রীদেবী টি এম-এর ছবি ‘হাইড অ্যান্ড সিক’-এর স্থিরচিত্র) বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য ছবি সে তালিকায়। রয়েছে ছোট ছবির বিখ্যাত ফেস্টিভ্যাল ওবেরহাউজেন থেকে নির্বাচিত ফিল্মের রেট্রো। ম্যাক্সমুলার ভবনে, ১-৬ নভেম্বর (২ নভেম্বর বাদে)। উদ্বোধন করবেন এস আর এফ টি আই-এর চেয়ারম্যান দীপঙ্কর দে। উদ্যোক্তা কল্পনির্ঝর ফাউন্ডেশন, গ্যেটে ইনস্টিটিউট। সহায়তায় অ্যাডলাইফ কেয়ারিং মাইন্ডস।

পাথরের ভাষা
কর্মসূত্রে থাকেন ঝাড়খণ্ড-পশ্চিমবঙ্গের সীমানায়। চিত্তরঞ্জনের রুক্ষ প্রকৃতিই টানে ভারতীয় রেলের কর্মী সঞ্জয় বন্দ্যোপাধ্যায়কে। সেই সব পাথুরে উপত্যকার ছবিই ফুটে ওঠে তাঁর ক্যানভাসে। অ্যাকাডেমি অব ফাইন আর্টস, রাজ্য চারুকলা পর্ষদ বা ইন্ডিয়ান সোসাইটি অব ওরিয়েন্টাল আর্ট-এর মতো প্রতিষ্ঠানের সম্মান রয়েছে তাঁর ঝুলিতে। শিল্পীর ছবিতে উপত্যকার রুক্ষ পাথরও এক একটি রূপ নিয়ে নেয়। সঞ্জয়ের কথায়, ‘পাথরের যেন ভাষা আছে, পাথরও কথা বলে’। এই সব ছবি নিয়েই সঞ্জয়ের পঞ্চম একক প্রদর্শনী ‘ভয়েস অব লিথোস’ শুরু হচ্ছে ২৯ অক্টোবর আকাদেমি অব ফাইন আর্টস-এ। চলবে ৪ নভেম্বর পর্যন্ত (৩-৮টা)। সঙ্গে তারই একটি ছবি।

পোস্টকার্ড
আমজনতার জন্য ভারতীয় ডাক বিভাগ প্রথম ‘মেঘদূত’ পোস্টকার্ড প্রবর্তন করেন ২০০২-এর ২ সেপ্টেম্বর। স্বাধীনতার পর নাসিক সিকিউরিটি প্রেসে যে পোস্টকার্ড ছাপা হত, তাতে থাকত অশোকস্তম্ভের ছবি। ’৬১-তে প্রথম বাণিজ্যিক পোস্টকার্ডের উদ্ভাবক ছিলেন ফিলাডেলফিয়ার জন পি চার্লটন। টেলিগ্রাফের পঞ্চত্বপ্রাপ্তি ঘটল সদ্য। আশঙ্কা, এ বার হয়তো পোস্টকার্ডের পালা। অথচ নন্দলালের রেখাচিত্র বা বনফুলের অনুগল্প সবই এক সময় সযত্নে ধারণ করেছে পোস্টকার্ড। তাই তা নিরুদ্দেশ হওয়ার আগেই কলম ধরেছিলেন অচিন্ত্য মারিক। পোস্টকার্ডের জন্মবৃত্তান্ত, তার বিচিত্র তথ্য ও মূল্যবান ছবি নিয়ে লিখেছেন পোস্টকার্ড: নির্বিকার মরুপথযাত্রী (অমিত্রাক্ষর, ৮০ টাকা)।

রাজবাড়িতে রায়বাবু
বাঙালির শৈশব আর কৈশোরের জাদুকাঠি সুকুমার রায়। তাঁর ১২৬ তম জন্মবর্ষে মহুল আবৃত্তির ব্যান্ড-এর শ্রদ্ধার্ঘ্য ‘রাজবাড়িতে রায়বাবু’ ৩০ অক্টোবর সন্ধে সাড়ে ছ’টায় শোভাবাজার রাজবাড়িতে। নাটক পাঠে থাকছেন শোভাবাজার রাজবাড়ির সদস্যরা। মহুলের আবৃত্তি, বিশিষ্ট শিল্পীদের পরিবেশনা তো থাকছেই।

অন্য চোখে
শম্ভুপ্রসাদ সিংহর মতো একজন সাধারণ নাগরিক, যখন উন্নয়নের নামে উচ্ছেদ করা হচ্ছিল মানুষজনকে, বেঘর করে দেওয়া হচ্ছিল, তখন লড়াই শুরু করেছিলেন। কলকাতায় এক বিরাট হাউজিং কমপ্লেক্স, শপিং মল বা মাল্টিপ্লেক্স গড়ে ওঠার মূল্যে বেশ কিছু মানুষকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছিল। শম্ভুপ্রসাদ শুধু তাঁদেরই একজন ছিলেন না, লড়াইও শুরু করেন তাঁদের জন্যে। বছর দুই আগে তিনি মারা যান এক পথ-দুর্ঘটনায়। তাঁকে নিয়েই রানু ঘোষের ছবি ‘কোয়ার্টার নং ৪/১১’, কিছুদিন আগে দেখানো হল ম্যাক্সমুলার ভবনে। সেই সূত্রেই রানু জানাচ্ছিলেন, কী ভাবে কোন সময় জুড়ে ছবিটি তৈরি করেছিলেন... ক্ষমতাসীন বামফ্রন্ট সরকার তখন স্লোগান তুলেছিল ‘শিল্প আমাদের ভবিষ্যৎ’। মানবাধিকার ও পরিবেশ নিয়ে ছবি করেন বলেই রানু আগ্রহী হন শম্ভুপ্রসাদকে নিয়ে এ-ছবি করতে: ‘ওঁর ওই সাহস সভ্যতার তথাকথিত উন্নয়নের বিরুদ্ধে, আমাকে ছবিটা করতে শক্তি জুগিয়েছিল’। ইতিমধ্যেই ছবিটি দেখানো হয়েছে গোয়ার ‘ইফি’-সহ পৃথিবীর নানান ফিল্মোৎসবে। এর আগেও বদলে-যাওয়া কলকাতার মানচিত্র আর তার দূষণ নিয়ে কাজ করেছেন রানু। এ মুহূর্তে ভারতীয় গণতন্ত্র নিয়ে দীর্ঘমেয়াদি এক ছবির প্রকল্পে কাজ করছেন সিনেমাটোগ্রাফার ও সংযুক্ত পরিচালক হিসেবে। আন্তর্জাতিক নানা ছবির প্রকল্পে প্রায়ই ব্যস্ত থাকেন দেশবিদেশে। তবু যখন কেতকী দত্তের মতো বিশিষ্ট অভিনেত্রীকে নিয়ে ছবি করেন ‘কার্টেন কল’, তখন এ শহরের প্রতি তাঁর টান টের পাওয়া যায়।


বিস্মৃত গবেষক
পেশাগত জীবনে ছিলেন রেলের জনসংযোগ আধিকারিক। কিন্তু সাহিত্যসাধনা ছিল আবাল্যের সঙ্গী। অজস্র বই লিখেছেন, অনুবাদ ও সম্পাদনা করেছেন গৌরাঙ্গগোপাল সেনগুপ্ত। ছোটদের জন্য বাংলায় অনুবাদ করেন টয়লার্স অব দি সি, চিলড্রেন অব দি নিউ ফরেস্ট ইত্যাদি। জন্ম ১৯১৩-এর ২০ অক্টোবর বীরভূমে। পারিবারিক দায়িত্ব পালনে এম এ না পড়ে যোগ দেন চাকরিতে। পরে প্রাচীন ভারতের ইতিহাস ও ভারতীয় সংস্কৃতির চর্চায় আত্মনিয়োগ করেন। বিদেশীয় ভারতবিদ্যা পথিক বইটির ভূমিকায় আচার্য সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় বাংলায় এমন বই লেখার জন্য তাঁকে ‘পথিকৃৎ’ আখ্যা দেন। লিখেছেন স্বদেশীয় ভারত-বিদ্যা সাধক, প্রাচীন ভারতের পথ পরিচয়, সাংবাদিক কেশরী হরিশ্চন্দ্র মুখোপাধ্যায়-এর মতো মূল্যবান গবেষণাগ্রন্থ। তাঁর চীন-ভারত ও ভারত-চীন পরিব্রাজকবৃন্দ বইটি টেগোর রিসার্চ ইনস্টিটিউট-এর পুরস্কার পেয়েছিল। ইংরেজি ও সংস্কৃতে তাঁর অনায়াস দক্ষতা ছিল। সযত্নে সম্পাদনা করেন আ বায়োগ্রাফিকাল স্কেচ অব ডেভিড হেয়ারভারতকোষ, বিশ্বকোষ এবং এনসাইক্লোপিডিয়া অব ইন্ডিয়ান লিটারেচার-এ তাঁর নিবন্ধের সংখ্যা শতাধিক। বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় ছড়িয়ে আছে বহু প্রবন্ধ। বিস্মৃতপ্রায় বাঙালি সাংবাদিকদের নিয়ে তাঁর শেষ পর্বের গবেষণা আকরসূত্রের মর্যাদা পেতে পারে। কয়েকটি বই পুনর্মুদ্রিত হলেও তাঁর অনেক বই বহু দিন অমুদ্রিত। ২০০৬-এর ৩ মার্চ ৯৩ বছর বয়সে প্রয়াত হন গৌরাঙ্গগোপাল। সম্প্রতি নীরবেই পেরিয়ে গেল এই গবেষকের জন্মশতবর্ষ।
   

Content on this page requires a newer version of Adobe Flash Player.

Get Adobe Flash player


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.