যে কোনও মূল্যে রাজকোষ ঘাটতিকে নির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে বেঁধে রাখতে মরিয়া কেন্দ্র। এতটাই যে, তার জন্য প্রয়োজনে চলতি অর্থবর্ষের ভর্তুকির একটা বড় অংশ পরের বছরের বাজেটে দেখানোর কথাও ভাবনাচিন্তা করছে কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রক।
মন্ত্রকের এক কর্তার কথায়, সামনেই লোকসভা ভোট। তাই এই মুহূর্তে চাইলেও তেল বা গ্যাসের দাম বাড়ানোর মতো অপ্রিয় সিদ্ধান্ত নেওয়া সে ভাবে সম্ভব হচ্ছে না মনমোহন-সরকারের পক্ষে। মাঝে-মধ্যে দর বাড়ছে ঠিকই। কিন্তু ভর্তুকি ছাঁটাইয়ের মাধ্যমে ঘাটতিতে রাশ টানতে তা যতখানি বাড়ানো প্রয়োজন, তা সম্ভব হচ্ছে না রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতার কারণে। ফলে বাড়ছে ভর্তুকির বোঝা। |
পি চিদম্বরম। ছবি: রয়টার্স |
কিন্তু উল্টো দিকে আবার ঘাটতি কোনও ভাবেই জাতীয় আয়ের ৪.৮ শতাংশের বেশি হবে না বলে জানিয়ে দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম। কিন্তু মন্ত্রকের কর্তাটির কথায়, যা পরিস্থিতি, তাতে ভর্তুকির বিপুল বোঝা কাঁধে নিয়ে ওই লক্ষ্য পূরণে নাজেহাল হচ্ছে কেন্দ্র। আর সেই কারণেই ভাবনাচিন্তা হচ্ছে ১,৫০০ কোটি ডলার ভর্তুকি পরের বছরের বাজেটে দেখানোর। তাঁর দাবি, আগের বারও একই ভাবে ঘাটতিকে ৫ শতাংশের নীচে রাখতে ১,৫০০ কোটি ডলার ভর্তুকি এ বারের বাজেটে দেখানো হয়েছে।
অর্থনীতির বেহাল দশা নিয়ে ইতিমধ্যেই চিদম্বরমকে বেশ কয়েকবার নিশানা করেছেন নরেন্দ্র মোদী। প্রশ্ন তুলেছেন চড়া মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে। জানতে চেয়েছেন, বৃদ্ধি বা ঘাটতির এমন আশঙ্কাজনক দশা কেন। তাই ভোটের আগে অর্থনীতির অবস্থা যতটা সম্ভব মেরামত করার চেষ্টা করছে ইউপিএ সরকারও। আর সেই কারণেই অন্তত এই মুহূর্তে চিদম্বরম কিছুতেই রাজকোষ ঘাটতির লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না-হওয়ার দায় নিতে রাজি হবেন না বলে মন্ত্রকের কর্তাটির দাবি।
শুধু তা-ই নয়। ঘাটতি মাত্রাছাড়া হলে, আন্তর্জাতিক মূল্যায়ন সংস্থাগুলির কাছে রেটিং খোয়ানোর আশঙ্কাও তৈরি হতে পারে ভারতের। যে ভাবে হোক সেই সঙ্কট চিদম্বরম এড়াতে চান বলেই ওই কর্তার দাবি। |