মারা গেলেন সঙ্গীতশিল্পী মাধুরী চট্টোপাধ্যায়। বয়স হয়েছিল ৭৩ বছর। শনিবার দুপুর ৩টে ৫ মিনিটে ঢাকুরিয়ায় নিজের বাড়িতে মারা যান তিনি। ১৫ বছর আগে, ১৯৯৮ সালে সেরিব্রাল অ্যাটাকে শরীরের একাংশ পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে পড়েছিল তাঁর। তার পর হুইল চেয়ারেই চলাফেরা করতেন। এ ছাড়া বয়সজনিত সমস্যাতেও ভুগছিলেন মাধুরীদেবী।
‘তোমায় আমায় প্রথম দেখা গানের প্রথম কলিতে’, ‘অলি অমন করে নয়’, ‘ওই যে সবুজ বন বীথিকা’, ‘নিজেরে হারায়ে খুঁজি’ এ সবই মাধুরীদেবীর গাওয়া অতি জনপ্রিয় গান। সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের কবিতা থেকে গান মাধুরীদেবীই প্রথম রেকর্ড করেন। সলিল চৌধুরী, নচিকেতা ঘোষ, অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ বহু বিশিষ্ট সঙ্গীত পরিচালকের সুরে গান গেয়েছেন এই শিল্পী।
অভিজিৎবাবু বলেন, “সরল, সহজ কথাবার্তার গানগুলো মাধুরী যে আবেগ আর ভাব দিয়ে কোন উচ্চতায় নিয়ে যেত, ভাবা যায় না!” প্রবীণ সঙ্গীত পরিচালক জানালেন, ‘তোমায় আমায় প্রথম দেখা গানের প্রথম কলিতে’ এবং ‘অলি অমন করে নয়’ মাধুরীদেবীর রেকর্ড করা প্রথম দিককার গান। অভিজিৎবাবুর কথায়, “একেবারে নতুন এক শিল্পীকে দিয়ে ওই রকম গান করানোর সাহস আমার হত না। নচিকেতা ঘোষ করিয়েছিলেন। জহুরি জহর চেনেন। এর পরে পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি মাধুরীকে।”
এক সাক্ষাৎকারে মাধুরীদেবী জানিয়েছিলেন, তাঁদের বেলঘরিয়ার বাড়িতে পেয়িং গেস্ট থাকতেন একজন গানের মাস্টারমশাই। দরজার আড়ালে দাঁড়িয়ে সেই মাস্টারমশাইয়ের গানের রেওয়াজ শুনতেন তিনি। মাস্টারমশাইয়ের সুপারিশেই গান শেখা শুরু মাধুরীদেবীর। প্রথম দিকে গাইতেন আগমনী গান। সঙ্গীতশিল্পী দ্বিজেন মুখোপাধ্যায় বলেন, “মাধুরীর মতো শিল্পী আর আসবে কি না সন্দেহ। যেমন চমৎকার গানের গলা, তেমন মিষ্টি ব্যবহার ছিল ওর। নিয়মিত যোগাযোগ রাখত।” দিন তিনেক আগে বিজয়ার শুভেচ্ছা জানাতে মাধুরীদেবী টেলিফোন করেছিলেন অভিজিৎবাবুকে। অভিজিৎবাবু বলেন, “তখন কথা বলতে পারিনি। ভেবেছিলাম পরে ফোন করে কথা বলে নেব। আর আজ চলেই গেল। কথাটা আর বলা হল না!”
|