জল নামছে, ঘরের পথে দুর্গতেরা
গ্রাম থেকে দ্রুত নামছে জল। নদী ও খালে জলের স্রোতও কমেছে। পুজোর সময় টানা বৃষ্টির জেরে জলমগ্ন হয়ে যাঁরা ঘর ছেড়ে ত্রাণশিবিরে আশ্রয় নিয়েছিলেন, তাঁদের অধিকাংশই বৃহস্পতিবার বিকেলের মধ্যে নিজেদের ঘরে ফিরে গিয়েছেন। সব মিলিয়ে প্লাবন কাটিয়ে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরেছে বাঁকুড়া জেলার দামোদর ও কংসাবতী নদী তীরবর্তী গ্রামগুলি। পরিস্থিতি বিপদমুক্ত বুঝে সোনামুখী, সারেঙ্গা ও বড়জোড়া ব্লকের ৯টি ত্রাণশিবির আপাতত তুলে দিয়েছে জেলা প্রশাসন।
ঘরে ফিরে সংসার সাজানোর চেষ্টা। সারেঙ্গার কৃষ্ণপুরে। ছবি: উমাকান্ত ধর।
বাঁকুড়ার জেলাশাসক বিজয় ভারতী বৃহস্পতিবার বলেন, “জেলার সব এলাকা থেকেই জল দ্রুত নেমে গিয়েছে। সারেঙ্গা ব্লকের ৫টি, সোনামুখী ব্লকের ২টি ত্রাণশিবিরে আশ্রয় নেওয়া সকলেই এ দিন দুপুরে বাড়ি ফিরেছেন। বড়জোড়ার দু’টি ত্রাণ শিবির থেকেও অধিকাংশ মানুষ বাড়ি ফিরছেন। তাই ত্রাণশিবিরগুলি আপাতত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।” জেলাশাসক জানিয়েছেন, এ দিন ক্ষতিগ্রস্তদের ত্রিপল ও চাল দেওয়া হয়েছে। যে-সব পরিবারের ঘর আংশিক বা সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তাঁদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। সোনামুখীর বিডিও বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বলেন, “উত্তর চর ও লালবাবা মানাচরের দু’টি ত্রাণ শিবির থেকে এ দিন দুপুরে খাওয়াদাওয়ার পরে ৪০০ জন ঘরে ফিরেছেন। বিদ্যুৎ না থাকায় উত্তর চরের ৭০টি পরিবারকে এক লিটার করে কেরোসিন দেওয়া হয়েছে। ওই দু’টি গ্রামেই মেডিক্যাল টিম পাঠানো হয়েছিল। গ্রামের জল পরীক্ষা করে দেখা হয়েছে।”
ধানের জমিতে দামোদরের জল। সোনামুখীর রাঙামাটির গ্রামে। ছবি: শুভ্র মিত্র।
অন্য দিকে, জলের তোড়ে বড়জোড়া, সোনামুখী, ওন্দা, বাঁকুড়া-২, পাত্রসায়র, সারেঙ্গা, রাইপুর ও সিমলাপাল ব্লকের বেশ কিছু এলাকায় আউশ ধান ও সব্জির ক্ষয়ক্ষতি হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন চাষিরা। সোনামুখীর নবগ্রামের চাষি দিলীপ তালুকদারের আক্ষেপ, “অতিবৃষ্টির জেরে আমাদের আমন ধানের গাছ নষ্ট হয়ে গিয়েছে। সব্জি খেত ধুয়ে মুছে সাফ। এখন সারা বছর খাব কী? বিকল্প চাষই বা করব কী করে?” ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের জন্য অবশ্য বিকল্প চাষের পরামর্শ দিয়েছে জেলা কৃষি দফতর। জেলা উপ কৃষি-অধিকর্তা (বিশ্বব্যাঙ্ক প্রকল্প) অশ্বিনীকুমার কুণ্ডু বলেন, “কিছু এলাকায় জমির ধান পুরোপুরি নষ্ট হয়েছে। সেখানকার জমি থেকে জল নেমে গেলে ধানের বিকল্প হিসাবে সর্ষে জাতীয় রবিশস্য লাগাতে হবে। আর যে-সব জমির ধানগাছ নুইয়ে পড়েছে, সেগুলির গোড়া আখগাছের মত বেঁধে সোজা করে রাখলে ক্ষতি বিশেষ হবে না বলে আমরা আশাবাদী।”
মুকুটমণিপুর জলাধার থেকে কংসাবতী নদীতে পাঁচ হাজার কিউসেক হারে জল ছাড়া অব্যাহত রয়েছে। ফলে, খাতড়া থেকে সাহেববাঁধ হয়ে রানিবাঁধ ও রাইপুর যাওয়ার রাস্তা বন্ধ।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.