গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় রাজনৈতিক কর্তৃত্ব কায়েমকে কেন্দ্র করে সিপিএম ও তৃণমূলের দফায় দফায় সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে মালদহের বৈষ্ণবনগরের বাখরাবাদ এলাকা। বুধবার রাতে দুই দলের সংঘর্ষে জখম হন পঞ্চায়েতে এক সিপিএম সদস্য-সহ দুপক্ষের ১১ জন। সংঘর্ষের সময় বোমা ছাড়া গুলি ছোড়া হয় বলে অভিযোগ। গুলিতে জখম হন দুই তৃণমূল কর্মী। গুলিবিদ্ধ ৫ জনকে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। স্থানীয় সিপিএম পঞ্চায়েতে সদস্যের ভাইয়ের চিকিৎসা চলছে বেদরাবাদ হাসপাতালে। ধারালো অস্ত্রে তাঁকে কোপানো হয় বলে অভিযোগ। এ দিন দুপুর অবধি কেউই পুলিশে অভিযোগ জানায়নি। মালদহের পুলিশ সুপার কল্যাণ মুখোপাধ্যায় বলেন, “গন্ডগোলের খবর পেয়ে রাতে পুলিশ গিয়েছিল। দুপুর পর্যন্ত কোনও পক্ষই অভিযোগ জানায়নি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ১৩ আসনের বাখরাবাদ গ্রাম পঞ্চায়েতে গত নির্বাচনে কংগ্রেস-৫, সিপিএম-৫ ও তৃণমূল ৩টি আসন পায়। ৩ তৃণমূল সদস্যের মধ্যে একজন কংগ্রেসে যোগ দেন। বাকি দুজন যোগ দেন সিপিএমে। তৃণমূল ছেড়ে সিপিএমে যোগ দিয়ে প্রধান হন শ্যামাচরন মন্ডল। এর পর থেকে ধীরে ধীরে এলাকায় গোলমাল শুরু হয়।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে, গত মঙ্গলবার রাত ১০টায় বাখরাবাদের শবদলপুর কুম্ভিরা বাজারে প্রথমে দুই দলের সংঘর্ষ হয়। অভিযোগ, পঞ্চায়েতের সিপিএম সদস্য জয়চাঁদ সিংহের বাড়িতে তৃনমূল কর্মীরা হামলা চালায়। ওই সদস্যকে বাড়িতে না পেয়ে হামলা হয় তাঁর ভাই পালু সিংহের বাড়িতে। তাকে হাঁসুয়া দিয়ে কোপানো হয়। সংঘর্ষের সময় সিপিএম কর্মীরা তৃণমূল কর্মীদের লক্ষ করে গুলি ছোঁড়ে বলে অভিযোগ। গুলিতে জখম হন শিশির প্রামাণিক ও দিলীপ মণ্ডল। দুজনেরই পায়ে গুলি লেগেছে। তৃণমূলের জেলা সভানেত্রী তথা নারী ও সমাজকল্যাণ দফতরের মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্র বলেন, “এত দিন এলাকায় সিপিএম রাজত্ব করেছে। এ বার ওখানে তৃণমূল ভাল ফল করেছে। অনেকেই সিপিএম ছেড়ে তৃনমূলে যোগ দিচ্ছেন। আর সেটাই সিপিএমের ক্ষোভের কারণ। আমাদের দুই জনের গুলি লেগেছে। পুলিশকে বলেছি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে।” সিপিএমের জেলা সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য বিশ্বনাথ ঘোষ বলেন, “পালু সিংহের পরিবারে ২৫টি ভোট। নির্বাচনের আগে তাকে তৃণমূলে যোগ দিতে বলা হলেও তিনি সিপিএমের পক্ষেই ছিলেন। এলাকার বুথে তৃণমূল প্রার্থী ২০টি ভোটে হেরে যাওয়ার পর থেকেই এলাকায় তৃণমূল দাপানো শুরু করেছে। ওই ক্ষোভেই তাঁকে কোপানো হয়। আমাদের কেউ গুলি ছোড়েনি।” |