সম্পাদক সমীপেষু...
আদরে বাঁদর
আজকাল বেশির ভাগ ছেলেমেয়েই মা-বাবার একমাত্র সন্তান। তারা আদরে বাঁদর হয়। তারা ছোট বয়সে খেলার সুযোগ পায় না। বয়স দু’বছর হলেই স্কুল। বই পড়া, আঁকা শেখা, গান শেখা। সবার মা-বাবাই চান, তাঁদের সন্তান স্কুলের পরীক্ষায় প্রথম হবে। নাচে-গানে প্রথম হবে। যে খেলাটা মনের ও শরীরের জন্য প্রয়োজন তা তারা পায় না। তাই স্কুলে গিয়ে এক জনের বই আর এক জনকে চোর বানাতে তার স্কুল-ব্যাগে ভরে দেয়। কারও পেন্সিল নিয়ে শিস ভেঙে দেয়। ওটাই ওদের খেলা। এক জনের টিফিন অন্যেরা খেয়ে ফেলে। এ সব বাবা-মা জানলেও বেশি শাসন করতে পারে না। ওই যে— আদরে বাঁদর।
তবে সবাই নয়। শিক্ষিত রুচিশীল বাবা-মায়ের ছেলেমেয়ে সাধারণত ভদ্র-সভ্য, রুচিশীলই হয়।
প্রান্তিকা বাস স্ট্যান্ড
দুর্গাপুরের প্রান্তিকা বাস স্ট্যান্ডের ভগ্নদশা (২৪-৮) বিষয়ে প্রকাশিত একটি সংবাদের পরিপ্রেক্ষিতে আমি দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার পক্ষ থেকে কয়েকটি কথা বলতে চাই।
প্রান্তিকা বাস স্ট্যান্ডটির অবস্থান হল দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার সেই ২৪,০২৬ একর জমির উপরে, যা ২ ডিসেম্বর ১৯৯৪ সালে আসানসোল দুর্গাপুর ডেভেলপমেন্ট অথরিটিকে হস্তান্তর করা হয় পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের ৫ সেপ্টেম্বর ১৯৯৪ সালে প্রকাশিত ১৫৫৬ এল আর সংখ্যক বিজ্ঞপ্তি অনুসারে। সংবাদে বলা হয়েছে যে উল্লিখিত জমিটি, যেখানে প্রান্তিকা বাস স্ট্যান্ড অবস্থিত, তা ডি এস পি-র অধীনে। তথ্যটি ঠিক নয়। ঘটনা হল, আলোচ্য জমিটি এ ডি ডি এ-র অধীনে রয়েছে এবং ফলে জমিটির রক্ষণাবেক্ষণের দায়দায়িত্ব কোনও ভাবেই ডি এস পি-র উপর বর্তায় না।
শ্রুতিধর রবীন্দ্রনাথ
সুমনামি’ (২২-৯)-তে রবীন্দ্রনাথের ‘ও যে মানে না মানা’-র সুররচনা নিয়ে কবীর সুমনের বক্তব্যের প্রেক্ষিতে উৎপল চক্রবর্তীর চিঠির কথা জানা গেল। সুমনের মত খণ্ডন করে শ্রীচক্রবর্তী জানিয়েছেন যে, রবীন্দ্রনাথের বহু আগেই শার্ঙ্গদেবের ‘সংগীত রত্নাকর’ বা মতঙ্গের ‘বৃহদ্দেশী’-তে এই ধরনের রচনাশৈলীর পরিচয় মেলে। কবীর সুমনের বক্তব্যকে সমর্থন জানিয়েই এখানে বলতে হয় যে, রবীন্দ্রনাথ ‘সংগীত রত্নাকর’ বা ‘বৃহদ্দেশী’ পড়েই এ ধরনের সুররচনা করেছিলেন তার কোনও প্রমাণ মেলে না। উচ্চাঙ্গসংগীতে রবীন্দ্রনাথের প্রথাগত শিক্ষা না-থাকলেও ছোটবেলা থেকে শুনে শুনে এ বিষয়ে একটা অধিকার লাভ করেছিলেন। অন্যান্য দেশি সংগীত ও পাশ্চাত্য সংগীত সম্পর্কেও তাঁর একটা স্বচ্ছ ধারণা ছিল। বিভিন্ন সংগীত সম্পর্কে এই সার্বিক বোধই নিশ্চয়ই কাজ করেছিল তাঁর সুরসৃষ্টিতে। কথা অনুযায়ী স্বতঃস্ফূর্ত ভাবেই সুর এসেছিল। রবীন্দ্রনাথ শ্রুতিধর ছিলেন— বলেছেন সুমন। একটি অসামান্য ঘটনার উল্লেখ এখানে অপ্রাসঙ্গিক হবে না। ‘তৌর্য্যক্তিক’ পত্রিকার (১৯৬৬) রবি প্রদক্ষিণ সংখ্যায় সঙ্গীতজ্ঞ বীরেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী এক লেখায় ১৯৩৬ সালের একটি ঘটনার কথা বলেছেন। এক জায়গায় বীরেন্দ্রকিশোর ও তাঁর বন্ধুদের পীড়াপীড়িতে রবীন্দ্রনাথ মিঞা তানসেন রচিত দরবারি কানাড়ার একটি চৌতাল ধ্রুপদ শুনিয়েছিলেন। শুনে বীরেন্দ্রকিশোরের প্রতিক্রিয়া: ‘...তাঁর গান শুনে আমার বিস্ময় শতাধিক পরিমাণে বর্ধিত হল। কেননা তিনি গাইলেন তানসেনের পুত্রবংশের বন্দেজী মীড় বহুল একটি নিখুঁত উচ্চাঙ্গের ধ্রুপদ। আমি ইতিপূর্বে মহম্মদ আলি খান সাহেব ব্যাতীত এরূপ ঢং-এর ধ্রুপদ কখনও শুনিনি। সম্ভবত রাধিকা গোস্বামীজি এই রীতিতেই গাইতেন। এই জাতীয় ধ্রুপদকে আমরা গৌড়হরবাণীর ধ্রুপদ বলে থাকি। আমি আমার মনের কথা তাঁকে নিবেদন করলাম ও বললাম— যিনি এরূপ গান গাইতে পারেন তিনি যদি ওস্তাদ না-হন তবে ওস্তাদ কাকে বলব! রবীন্দ্রনাথ ঈষৎ হাস্যসহকারে বললেন যে, শুনে শেখা বহু গান তিনি ভুলে গেছেন, বোধকরি শ’খানেক এখনও তাঁর মনে আছে।’


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.