কলকাতার পুজোর ডাকে মুছে যায় কাঁটাতারের বেড়া
কাঁটাতারের বেড়া আলাদা করে দু’দেশের সীমানাকে আলাদা করে দিয়েছে বটে। কিন্তু তা যে দুর্গাপুজো নিয়ে দু’পারের মানুষের আবেগে বিন্দুমাত্র আঁক কাটতে পারেনি প্রতিবছর দুর্গাপুজো এলেই তার প্রমাণ স্পষ্ট হয়ে ওঠে। না হলে কেন, এ পার বাংলার পুজো দেখতে অনেকেই চলে আসেন আত্মীয়ের বাড়ি। আর যাঁর সেই ঠাঁই নেই, তাঁরও কুছপরোয়া নেই। পুজোর ক’দিন এ বঙ্গে এসে হোটেলে থেকেই পুজোর আনন্দ চুটিয়ে ভোগ করে ফের ফিরে যান ওপার বঙ্গে নিজের ঘরে, কাজের জগতে।
বাংলাদেশের গাজিপুর জেলার জয়দেবপুর বঙ্গবন্ধু কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সত্যরঞ্জন সাহা। এ পার বাংলার পুজোর খবর পড়েন ইন্টারনেটে। থিমের পুজো নিয়ে এখানকার মত্ততা তাঁকে বড়ই টানে। এ বার তাই ঠিকই করে ফেলেছেন এখানে এসে পুজো দেখবেন। অনেক আগে এক বার এসেছিলেন বটে। ফিরে গিয়ে স্ত্রীকে শুনিয়েছিলেন সে বৃত্তান্ত।
পেট্রাপোলে এ দেশের পুজো দেখতে আসা বাংলাদেশিরা। —নিজস্ব চিত্র।
স্বামীর মুখে শুনে এখানকার পুজো নিয়ে মনে মনে একটা ছবিও তৈরি করে ফেলেন শিউলিদেবী। কল্পনায় এঁকে নিয়েছিলেন মণ্ডপ, আলো আর কলকাতার ভিড়ের ছবি। তবু সাধ ছিল একবার স্বচক্ষে দেখবেন। কেমন এই দেশ। কেমন এই বাংলা। কেমন এখানকার পুজো। এ বার সেই সাধ পূর্ণ হতে চলেছে। বৃহস্পতিবার সকালে স্বামীকে নিয়ে যখন বেনাপোল সীমান্ত পেরিয়ে পেট্রাপোল বন্দরে এসে পৌঁছলেন তখন গায়ে কাঁটা দিচ্ছিল তাঁর। কথা বলতে গিয়েও চাপতে পারছিলেন না উত্তেজনা। হুগলির চন্দননগরে আত্মীয়ের বাড়িতে যাচ্ছেন সত্যরঞ্জনবাবু। বললেন, “আমাদের দেশে পুজোয় এত আড়ম্বর নেই। ছোট মণ্ডপে পুজো হয়। তাই এখানে পুজোটা বুঝতে পারি।”
পেট্রাপোল বন্দরে দীর্ঘ দিন ধরেই মুদ্রা কেনা বেচার ব্যবসা করছেন কার্তিকচন্দ্র ঘোষ। তাঁর কথায়, “অন্য বছরের তুলনায় এ বার বাংলাদেশ থেকে পুজো দেখতে আসা মানুষের সংখ্যা অনেক বেড়েছে। অষ্টমী পর্যন্ত চলবে এই আসা। দশমীর পর থেকে ফিরে যাবেন ওঁরা।”
ছেলে ও স্ত্রীকে নিয়ে এ বার কলকাতার দুর্গাপুজো দেখবেন বলে বেরিয়েছেন দুর্গাচরণ মাঝি। বাংলাদেশের মুন্সীগঞ্জ জেলার বিক্রমপুরের এই বাসিন্দা জানালেন, “আমাদের ওখানে এত ঝলমলে পুজো হয় না। তাই পুজোর গন্ধ নিতে এসেছি এখানে। ছেলে ও স্ত্রীকেও এনেছি।”
শুধু হিন্দুরা নন, এ পার বাংলার পুজোয় নিজেকে খুঁজে পান মুসলমানরাও। শুধু এখানকার পুজো দেখবেন বলেই ঢাকা থেকে সপরিবার চলে এসেছেন সঙ্গীতশিল্পী সামসুল হুদা। বললেন, “আত্মীয় স্বজন তেমন নেই এখানে। কিন্তু পুজোর টান তো রয়েছে।”





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.