শব্দবাজি ৯০ ডেসিবেল ছাড়ালেই পুলিশি ব্যবস্থা
দীর্ঘ টালবাহানার পরে শব্দবাজি নিয়ে অবস্থান স্পষ্ট করল রাজ্য সরকার। পরিবেশমন্ত্রী সুদর্শন ঘোষদস্তিদার বৃহস্পতিবার জানান, কলকাতা-সহ রাজ্যের সর্বত্র ৯০ ডেসিবেলের বেশি শব্দের বাজি বানালে বা ফাটালে পুলিশ কড়া ব্যবস্থা নেবে। এ বিষয়ে বুধবার একটি সরকারি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে বলেও জানান মন্ত্রী।
কিন্তু ১২৫ ডেসিবেলকে ঊর্ধ্বসীমা ধরে তৈরি করা প্রায় ২৫০ কোটি টাকার শব্দবাজি ইতিমধ্যেই বাজারে এসে গিয়েছে। তার ব্যবহার ঠেকানো সম্ভব হবে কি না, সেই ব্যাপারে পুলিশও আশ্বস্ত করতে পারছে না।
১৯৯৭ থেকে পশ্চিমবঙ্গে বাজির শব্দসীমা ধার্য আছে ৯০ ডেসিবেল। কিন্তু প্রস্তুতকারকদের বক্তব্য, ৯০ ডেসিবেলের মধ্যে কালীপটকা, দোদোমা বা চকোলেট বোমার মতো কোনও শব্দবাজি তৈরি করা সম্ভব নয়। প্রস্তুতকারকদেরই একটি মামলায় গত ২১ অগস্ট জাতীয় পরিবেশ আদালত জানিয়ে দেয়, দেশের সর্বত্র ১২৫ ডেসিবেলের মধ্যে শব্দবাজি ব্যবহার করা যাবে। কিন্তু এই ব্যাপারে আপত্তি রয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। মনে করা হচ্ছে, সেই কারণে শেষ পর্যন্ত সরকারি বিজ্ঞপ্তি জারি করে শব্দবাজির ক্ষেত্রে এত দিন ধরে প্রচলিত ৯০ ডেসিবেলের সীমাই বহাল রাখার কথা জানিয়ে দিল রাজ্য। সরকারের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে নাগরিক সমাজ এবং পরিবেশ নিয়ে কাজ করা স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা সবুজ মঞ্চ।
জাতীয় পরিবেশ আদালত ১২৫ ডেসিবেল পর্যন্ত শব্দসীমার বাজিকে ছাড়পত্র দেওয়া সত্ত্বেও বাংলা কেন ৯০ ডেসিবেলেই অনড় থাকছে, তার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে পরিবেশ রক্ষার তাগিদের কথাই জানান সুদর্শনবাবু। তিনি বলেন, “পশ্চিমবঙ্গের জনসাধারণের স্বাস্থ্য রক্ষা করতে এবং পরিবেশ দূষণ-মুক্ত রাখতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”
কিন্তু জাতীয় পরিবেশ আদালতের রায়ের পরে এই সিদ্ধান্ত নিতে দেরি হল কেন? এর মধ্যে যে বাড়তি শব্দসীমার প্রচুর বাজি তৈরি হয়ে বাজারে বেরিয়ে গেল, তার কী হবে?
জবাবে মন্ত্রী বলেন, “গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নিতে অনেক ক্ষেত্রে একটু সময় লাগে।” তার পরেই অবশ্য পরিবেশমন্ত্রী জানিয়ে দেন, সীমা ছাড়ানো শব্দবাজি ব্যবহার করলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রস্তুতকারকেরা জানান, জাতীয় পরিবেশ আদালতের রায় জানার পরেই তাঁরা ১২৫ ডেসিবেলকে শব্দসীমা ধরে বাজি তৈরি করতে শুরু করে দেন। তাঁদের দাবি, এই রাজ্যে ইতিমধ্যে প্রায় ২৫০ কোটি টাকার শব্দবাজি ঢুকেছে। এখন রাজ্য সরকার আচমকা বিজ্ঞপ্তি জারি করলেও এত বিপুল পরিমাণ শব্দবাজির ব্যবহার কী ভাবে আটকানো সম্ভব, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরাও। লালবাজারের এক শীর্ষ কর্তার কথায়, “ক্ষতি যা হওয়ার, তা ইতিমধ্যেই হয়ে গিয়েছে। এখন আমরা অনেকটাই অসহায়।”
সারা বাংলা আতশবাজি উন্নয়ন সমিতির অভিযোগ, জাতীয় পরিবেশ আদালতের রায়ের পরে রাজ্য সরকারের এই বিজ্ঞপ্তি বেআইনি। এর বিরুদ্ধে ১৮ অক্টোবর তারা ফের জাতীয় পরিবেশ আদালতেরই দ্বারস্থ হবে। তার আগে পুলিশ ধরপাকড় করলে রাস্তাও আটকানো হবে বলে হুমকি দিয়েছে ওই সমিতি।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.