পুজোর দিনগুলিতে বিকেলের পরে শহরের বড় রাস্তায় অটো না-চলতে দেওয়ার সরকারি সিদ্ধান্ত আগেই ঘোষণা হয়েছে। এ বার পাম্পগুলিতে অটো-এলপিজির আকাল দেখা দেওয়ায় সমস্যা জটিল আকার নিয়েছে। রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্র সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চলছে বলে দাবি করলেও কলকাতা ও শহরতলির বহু রুটে ষষ্ঠীর দিন থেকে কার্যত অটো চলছে হাতেগোনা। অনেক রুটে ইচ্ছেমতো অটোর ভাড়া বাড়িয়েও দেওয়া হয়েছে।
রাজ্য সরকার বাসভাড়া না বাড়ানোয় সরকারি-বেসরকারি বাস কমতে শুরু করেছে অনেক আগে থেকেই। ফলে শহরের ‘লাইফলাইন’ হয়ে উঠেছে অটো। এই অবস্থায় পুজোর দিনগুলিতে বিকেল থেকে অটো তুলে নেওয়ার সরকারি সিদ্ধান্ত ঘোষণায় এক দিকে যেমন অটোমালিকদের মাথায় হাত পড়েছিল, তেমনই যাত্রীরাও এক অজানা আশঙ্কার মধ্যে ছিলেন। এখন গোদের উপর বিষফোঁড়ার মতো অটোর গ্যাসের আকাল উভয়পক্ষকে আরও সঙ্কটের মধ্যে ঠেলে দিয়েছে।
পুজোর দিনগুলিতে শহরের রাস্তায় অটো না মিললে দর্শনার্থীদের যে চরম দুর্ভোগের মধ্যে পড়তে হবে, তা মানছেন পরিবহণ কর্তারা। আশঙ্কায় রয়েছেন পরিবহণমন্ত্রীও। বৃহস্পতিবার তিনি বলেন, “অনেকে বেশি বেশি করে গ্যাস ভরে নেওয়ায় সমস্যা বেড়েছে। তবে সমস্ত মহলে কথা বলে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চলছে।” কিন্তু এই পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে বহু রুটে স্থানীয় ভাবে অটো ভাড়া বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, প্রায় সব রুটেই ভাড়ার অতিরিক্ত টাকা দাবি করছেন অটোচালকেরা।
গ্যাসের এই আকালে চিন্তিত অটোচালকেরা। অটো ইউনিয়নের এক নেতা বলেন, “সরকার কড়াকড়ি করায় চালকেরা এমনিতেই অসুবিধের মধ্যে রয়েছেন। এখন গ্যাস না-পাওয়ার সমস্যা শুরু হওয়ায় বাধ্য হয়ে অনেক মালিকই পুজোয় গাড়ি বাড়িতে বসিয়ে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এতে সাধারণ মানুষ অসুবিধেয় পড়বেন।”
গ্যাসের আকালের কারণ কী? অটো-এলপিজি সরবরাহকারী হিন্দুস্তান পেট্রোলিয়াম সংস্থার এক কর্তা বলেন, “শুধু কলকাতা নয়। অটো-এলপিজি’র আকাল চলছে দেশ জুড়েই। তার জের পড়েছে এ রাজ্যেও।”
ওয়েস্ট বেঙ্গল পেট্রোলিয়াম ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি তুষার সেন জানিয়েছেন, একমাত্র ইন্ডিয়ান অয়েল ছাড়া অন্য সব সংস্থাই পর্যাপ্ত পরিমাণে অটো-এলপিজি সরবরাহ করতে পারছে না। তিনি বলেন, “কলকাতা-হাওড়া মিলিয়ে ৪০ টার মতো এলপিজি পাম্প রয়েছে। তার মধ্যে অন্তত ১৫টি থেকে এলপিজি পাওয়া যাচ্ছে না।”
তবে ইন্ডিয়ান অয়েলের ডিজিএম (এলপিজি) রবীন্দ্রনাথ ঘোষ জানান, তাঁদের কাছে যথেষ্ট অটো-এলপিজি মজুত আছে। তিনি বলেন, “প্রশাসনের নিয়মকানুন মেনে সরবরাহ করতে গিয়ে দেরি হতে পারে। কিন্তু গ্যাস মিলবে।” |