স্বামী ব্রহ্মানন্দ মহারাজের দুর্গাপুজোটি বসিরহাট মহকুমায় জমিদার পুজোগুলির মধ্যে অন্যতম। প্রতি বছর এই পুজো দেখার জন্য দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ আসেন শিকড়া কুলিনগ্রামে।
শ্রীরামকৃষ্ণের মানস পুত্র ব্রহ্মানন্দ মহারাজের আসল নাম ছিল রাখাল চন্দ্র ঘোষ। তবে লোকে তাঁকে রাখাল মহারাজ বলে ডাকত। আনন্দমোহন ঘোষের ছেলে রাখাল চন্দ্রের জন্মস্থান বসিরহাটের শিকড়া কুলিনগ্রামে। তাঁদের বাড়ির পুজো তিন শতাধিক বছরের, মহকুমার মধ্যে অন্যতম প্রাচীন পুজো। ব্রহ্মানন্দ মহারাজ ছিলেন বিবেকানন্দের চেয়ে কয়েকদিনের ছোট। এক সময়ে বেলুড় মঠ ও মিশনের প্রেসিডেন্টও হয়েছিলেন তিনি। বেলুড় মঠে তাঁর নামে মন্দির রয়েছে। শিকড়া কুলিনগ্রামেও রয়েছে তাঁর নামে একটি আশ্রম। স্থানীয় প্রবীণেরা জানান, ১৭০০ সালে ব্রহ্মানন্দ মহারাজের বাড়ির পুজো শুরু হয়েছিল। সেই পুজোর প্রথম উদ্যোক্তা ছিলেন জমিদার দেবীদাস ঘোষ। পুজোর শুরুতে দেবীর ঘট বসত মাটির আটচালা ঘরে। ওই ঘরেই পুজোর আয়োজন এবং দেবীকে প্রতিষ্ঠা করা হত। পরবর্তী সময়ে জমিদার কালীপ্রসাদ ঘোষ পাঁচ খিলান-সহ পুজোর দালান তৈরি করেন। তারপর থেকে ওই দালানেই নিয়ম ও নিষ্ঠার সঙ্গে দেবী দুর্গার পুজো হয়ে আসছে। পরিবার সূত্রে জানা গেল, পরিবারের নিয়মে দেবীর বোধনের দিন নিদ্রাকলস বসানো হয়। থাকে দশমী পর্যন্ত। একবার পশুবলির সময়ে এক কোপে ছাগলের গলা না কাটায় পশুবলি বন্ধ হয়ে গিয়েছে।
এ বছরেও পুরনো নাটমন্দিরটি সুন্দর ভাবে সাজানো হয়েছে। লাগানো হয়েছে আলো। সারা বছর কেউ না থাকলেও পুজোর দিনগুলিতে পরিবারের সদস্যরা শিকড়ের টানে চলে আসেন গ্রামে। আনন্দে মেতে ওঠেন দেবী দুর্গার আরাধনায়। |