ছুটির আগে স্কুলে আলু বিলি নিয়ে জট
পুজোর ছুটির আগে শেষ দিন স্কুল। স্কুল শেষে জঙ্গলমহলের পড়ুয়ারা অনেকেই বাড়ি ফিরল এক কেজি আলু নিয়ে! সময়ে স্কুলে আলু না পৌঁছনোয় অনেকে আবার আলু পেল না। কোনও কোনও স্কুলে কম আলু পৌঁছনোয় সমস্যা
দেখা দিল।
লাগামছাড়া মূল্যবৃদ্ধি যাতে মিড ডে মিলে প্রভাব না ফেলে, সে জন্য জঙ্গলমহলের স্কুলগুলোয় ছাত্রপিছু ১ কেজি আলু দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। প্রথমে ঠিক ছিল, বরাদ্দ আলু মিড ডে মিল রান্নায় ব্যবহৃত হবে। কিন্তু, চলতি সপ্তাহ থেকে স্কুলগুলোয় ছুটি পড়তে শুরু করেছে। দীর্ঘ ছুটিতে স্কুলে আলু রাখলে নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই পড়ুয়াদের হাতে হাতে আলু দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় প্রশাসন। জঙ্গলমহলের প্রাথমিক স্কুলগুলির বেশিরভাগই মঙ্গলবার ক্লাস হয়ে ছুটি পড়েছে। আর আলু পৌঁছেছে মঙ্গলবার বিকেলে। ফলে, অনেক পড়ুয়াই আলু পায়নি। হাইস্কুলগুলি অবশ্য বুধবার অথবা বৃহস্পতিবার ক্লাস শেষে ছুটি পড়েছে। ফলে, এ ক্ষেত্রে তেমন সমস্যা হয়নি।
নয়াগ্রাম স্কুলে চলছে আলু দেওয়ার কাজ। ছবি: রামপ্রসাদ সাউ।
মেদিনীপুর সদরের কেশবপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাধন দে বলেন, “মঙ্গলবার বিকেলের মধ্যে আলু আসার কথা ছিল। কিন্তু, আসেনি। বুধবারও কয়েকজন ছাত্রছাত্রী স্কুলে আসে। কিন্তু, আলু না আসায় তারা খালি হাতেই ফেরে।” বেশ কিছু স্কুলে আবার কম আলু পৌঁছয়। যেমন, শালবনির ভাদুতলা হাইস্কুল। এখানে পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ুয়া ৬৫৭ জন। কিন্তু বরাদ্দ হয়েছে ২ কুইন্ট্যাল আলু। শালবনির মৌপাল হাইস্কুলে এখানে পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ৬৩৬। মঙ্গলবার বিকেলে স্কুলে মাত্র ৩ কুইন্ট্যাল আলু আসে। প্রধান শিক্ষক প্রসূনকুমার পড়িয়ার কথায়, “পরে ব্লকে যোগাযোগ করি। বুধবার সকালে আরও সাড়ে ৩ কুইন্ট্যাল আলু আসে। আমরা তা পড়ুয়াদের দিয়েছি।”
এখন প্রশ্ন যে সব স্কুলে ছুটির পর আলু পৌঁছেছে, সেখানে কী হবে? এতদিন পরে কি ওই আলু খাওয়ার উপযুক্ত থাকবে? মেদিনীপুর সদর দক্ষিণ চক্রের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক অরুণাভ প্রহরাজ বলেন, “কিছু ক্ষেত্রে সমস্যা হয়েছে। সমাধানে পদক্ষেপ করা হবে।” জেলাশাসক গুলাম আলি আনসারিরও বক্তব্য, “অধিকাংশ স্কুলেই ছাত্রছাত্রীদের আলু দেওয়া হয়েছে। ছুটি পড়ে যাওয়ায় কিছু স্কুলে সমস্যা হতে পারে। সমস্ত দিক খতিয়ে দেখে উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হবে।” জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক পরিদর্শক (মাধ্যমিক) সঙ্ঘমিত্র মাকুড় বলেন, “তেমন কোনও সমস্যা হয়নি। কয়েকটি স্কুলে কিছু সমস্যা হয়েছে। বিষয়টি দেখছি।” মিড ডে মিলের জেলা প্রকল্প আধিকারিক নীলাঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, “সরকারের নির্দেশ মতো আলু পৌঁছনো হয়েছে।” একই বক্তব্য জেলা খাদ্য নিয়ামক পার্থপ্রতিম দাসের।
আলু বিলি নিয়ে শুরু হয়েছে চাপানউতোর। সিপিএমের শিক্ষক সংগঠন নিখিলবঙ্গ শিক্ষক সমিতির জেলা সম্পাদক অশোক ঘোষের মতে, “পরিকল্পনার অভাবে এই অবস্থা। ছুটির পর বহু স্কুলে আলু পৌঁছেছে। ওই সব আলু নষ্ট হবেই।” পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির জেলা যুগ্ম আহ্বায়ক নারায়ণ সাঁতরা বলেন, “এক মাস রাখা থাকলে আলু নষ্ট হয়ে যাবে, এটা ঠিক। তবে, অধিকাংশ স্কুলেই আলু বিলি হয়েছে। এ নিয়ে ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে খুব উৎসাহ ছিল। কারণ, এ ভাবে স্কুল থেকে আলু পাওয়া বলে কেউ ভাবতেই পারেনি।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.