|
|
|
|
মাইকে লাগাম পরানোর তৎপরতা
প্রশান্ত পাল • পুরুলিয়া |
বিশ্বকর্মা পুজোয় রেল শহর আদ্রায় মাইকের দাপাদাপি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে এনেছিল পুলিশ। এ বার আদ্রার মতোই দুর্গাপুজোয় পুরুলিয়া সদর-সহ জেলার সর্বত্রই মাইক ও সাউন্ডবক্সের শব্দে লাগাম পড়াতে চাইছে জেলা পুলিশ। জেলা পুলিশ সুপার নীলকান্ত সুধীর কুমার বলেন, “উৎসবে মাইক বাজতে পারে। কিন্তু বাজাতে হবে বিধি মেনেই। সে কথা পুজোর উদ্যোক্তাদের জানিয়েও দেওয়া হয়েছে। বিসর্জনের সময়েও তীব্র শব্দে মাইক বা সাউন্ড বক্সের ব্যবহার করা যাবে না।”
পুলিশের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন পুরুলিয়া শহরের পুজো উদ্যোক্তাদের একাংশ। পুরুলিয়া প্রাইভেট রোড মহিলা মণ্ডল পুজো কমিটির সম্পাদক ডালিয়া সাহার কথায়, “আমরা অবশ্যই বিধির পক্ষে। কেন না চড়া সুরে মাইক বাজালে পুজোর পরিবেশ বিঘ্নিত হয়। মাইকের শব্দ খানিকটা কম থাকলে বরং পুজো মণ্ডপে একটা অন্য পরিবেশ তৈরি হয়।” শহরের আর এক পুজো আমলাপাড়া সবর্জনীনের তরফে কৌশিক বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, তাঁরা পুলিশের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানাচ্ছেন। বলেন, “আমাদের মণ্ডপেও গান বাজানো হয়। কিন্তু আমরা চড়া সুরে বাজাই।” কুকস কম্পাউন্ড সবর্জনীনের সম্পাদক অরিন্দম বিশ্বাসের মতে, “মিষ্টি সুরে গান বাজলে মণ্ডপে যে পুজো পুজো ভাব আসে চড়া সুরে মাইক বা সাউন্ড বক্স বাজলে তা কখনই সম্ভব নয়। তাই সবারই পুলিশের সতর্কতা মানা উচিত।” ঝালদা নামোপাড়া সবর্জনীনের সম্পাদক বিষ্ণু অগ্রবালও বলেন, “আমরাও বিধি মানার পক্ষে। তেমন ব্যবস্থাই নেওয়া হয়েছে।”
উল্লেখ্য বিশ্বকর্মা পুজোয় শব্দ নিয়ন্ত্রণের জন্য পুলিশ এ বার আদ্রায় কড়া পদক্ষেপ করেছিল। পুলিশ আগেই ঘোষণা করেছিল, নিয়ন্ত্রণহীন ভাবে মাইক বাজালে পুলিশ তা বাজেয়াপ্ত করতে পারে। নজরদারির জন্য ছিল সাদা পোশাকের পুলিশও। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আইনি ব্যবস্থা নিতে হয়নি। মণ্ডপে পুজো-পর্ব থেকে ভাসানে মাইকের ব্যবহার এক প্রকার বিধি মেনেই হয়। আগের মতো বেশি রাত পর্যন্ত মাইক বাজানো হয়নি। পরিবেশ বিধি মানায় আদ্রার ‘ওয়াগন রিপেয়ারিং শপ’ বিশ্বকর্ম পুজো উদ্যোক্তাদের পুরস্কার দেয় পুলিশ। সেই মডেলই এ বার সারা জেলার জন্য চালু করতে চলেছে জেলা পুলিশ। রঘুনাথপুরের এসডিপিও কুন্তল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “বিশ্বকর্মা পুজোর মতোই দুর্গাপুজোতেও আমরা নজরদারি চালাব। বিধি ভাঙলেই কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” পুরুলিয়া শহরের চকবাজারের বাসিন্দা নির্মল হালদার বলেন, “যে ভাবে বড় বড় প্রমাণ মাপের সাউন্ডবক্স বা মাইক নিয়ে বিসর্জনের শোভাযাত্রা বেরোয়। তাতে অনেক মানুষেরই অসুবিধা হয়। অনেকে অসুস্থও হয়ে পড়েন।” তাঁর দাবি, শুধু বিসর্জনের সময়ই নয়, সব ধরনের শোভাযাত্রার ক্ষেত্রেই শব্দবিধি মানা দরকার। মণ্ডপে মাইকের গানের বদলে ঢাকের স্বরও মিষ্টি।
শহরের হুচুকপাড়ার বাসিন্দা গৌরচন্দ্র দাসের কথায়, “প্রচণ্ড শব্দে অনেক মানুষ অসুবিধায় পড়েন। কিন্তু নানা সমস্যায় অনেকে প্রতিবাদ করতে সাহস পান না।” |
|
|
|
|
|