|
|
|
|
ঝঞ্ঝার আশঙ্কা কাটলেও কাঁটা হতে পারে বৃষ্টি |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
প্রবল ঝড়-ঝঞ্ঝার আশঙ্কা অনেকটা কাটলেও অস্বস্তির বৃষ্টি কাঁটা হয়ে উঠতে পারে বাঙালির অষ্টমী-নিশি উদযাপনে।
রাতভর উপগ্রহ চিত্রে চোখ রেখে বসেছিলেন আবহবিদেরা। চলেছে জটিল হিসেবনিকেশ। ঘন ঘন ফোনে খবর নিয়েছেন ছুটিতে থাকা কর্তারাও। বুধবার রাতভর আলিপুরের আবহাওয়া অফিসে ঘুরে ফিরে এসেছে একটাই প্রশ্ন, অষ্টমীর রাতে কি ঘুর্ণিঝড় ধেয়ে আসছে বাংলায়?
উত্তর মিলল বৃহস্পতিবার বেলা গড়াতে। বায়ুমণ্ডলের গতিপ্রকৃতি, উপগ্রহ চিত্রের খুঁটিনাটি খতিয়ে দেখে আবহবিদেরা জানান, বঙ্গোপসাগরের তৈরি হওয়া ঘূর্ণিঝড় পিলিন বয়ে যাবে ওড়িশা-অন্ধ্র উপকূলের দিকেই। অর্থাৎ, শেষ মুহূর্তে গতি বদলে সে যদি বাংলামুখো না হয়, অষ্টমীর রাত বা নবমীর সকাল থেকে কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গে ঝড়-ঝঞ্ঝার আশঙ্কা এক রকম নেই বললেই চলে।
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, আজ, সপ্তমীতেও আকাশ পরিষ্কার থাকবে। অষ্টমীর সকালেও আপাতত বৃষ্টির সম্ভাবনা দেখছেন না বিজ্ঞানীরা। তবে অষ্টমীর রাত কিংবা নবমীতে হয়তো বৃষ্টি এড়াতে পারবে না উৎসবমুখর বাঙালি। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের এক বিজ্ঞানীর কথায়, “ওড়িশা-অন্ধ্র উপকূলে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বৃষ্টি হবে কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গে। উপকূলবর্তী এলাকার কোথাও কোথাও ভারী বৃষ্টিও হতে পারে।” আশঙ্কা কাটলেও অস্বস্তির কাঁটা রয়ে গেল। সোমবার রাতে দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে (আন্দামান সাগরে) নিম্নচাপ দানা বাঁধতে দেখে আবহাওয়া অফিস প্রমাদ গনেছিল। বুধবার রাতে সেই নিম্নচাপ পরিণত হয় ঘূর্ণিঝড়ে। তাইল্যান্ডের বিজ্ঞানীরা নাম দিয়েছেন পিলিন তাঁদের ভাষায় যার অর্থ নীলকান্ত মণি।
ঘূর্ণিঝড় তৈরি হওয়ার আঁচ পেয়েই বুধবার দুপুরে মৌসম ভবনের বিজ্ঞানীরা জানিয়েছিলেন, ঘূর্ণিঝড়টি শনিবার রাতে আছড়ে পড়বে ওড়িশা-অন্ধ্র উপকূলে। তবে সেই সম্ভাব্য গতিপথ যে বজায় থাকবেই, নিশ্চিত করে তা বলতে পারেননি তাঁরা। আবহবিদেরা বলেছিলেন, সম্ভাব্য গতিপথে সামান্য কয়েক ডিগ্রির বদল হলেই ঘূর্ণিঝড় চলে আসতে পারত ওড়িশা-বাংলা উপকূলে। যার ফলে পুজো মাথায় উঠতে পারত আম-বাঙালি। যদিও সে আশঙ্কা রয়েই যাচ্ছে, তবে তার সম্ভাবনা বেশ কম বলেই দাবি আবহবিদদের। |

ভয় দেখাচ্ছে বৃষ্টি |
অষ্টমী-নবমীতে বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েই গেল। আবহবিদেরা জানিয়েছেন, ওড়িশা-অন্ধ্রের দিকেই
বয়ে যাচ্ছে ঘূর্ণিঝড় পিলিন। শেষ মুহূর্তে গতি পাল্টে সে বাংলামুখো না-হলে পুজোয় প্রবল ঝড়-ঝঞ্ঝার
ভয় প্রায় নেই। কিন্তু ওড়িশা-অন্ধ্র উপকূলে পিলিন-এর প্রভাবেই অষ্টমীর রাতে কিংবা নবমীতে
কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টির আশঙ্কা করছেন তাঁরা। উপকূলবর্তী এলাকার কোথাও কোথাও
ভারী বৃষ্টিও হতে পারে। তবে আজ, সপ্তমীতে আকাশ পরিষ্কার থাকবে
বলেই আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে। |
|
কেন্দ্রীয় আবহবিজ্ঞান দফতরের এক কর্তার কথায়, “আন্দামান দ্বীপপুঞ্জ না পেরোলে ঘূর্ণিঝড়টির গতিপথ নিয়ে পুরোপুরি নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছিল না।” আবহাওয়া অফিস সূত্রের খবর, বুধবার রাতেই আন্দামান দ্বীপপুঞ্জ পেরিয়ে ভারতের মূল ভূখণ্ডের দিকে রওনা দিয়েছিল পিলিন। তার পর থেকে ক্রমাগত বায়ুপ্রবাহের অভিমুখ, বায়ুমণ্ডলের উপরিস্তরের গতিপ্রকৃতি-সহ বিভিন্ন বিষয় খতিয়ে দেখে আবহবিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, বাংলাকে স্বস্তি দিয়ে ওড়িশা-অন্ধ্রের দিকেই বয়ে যাচ্ছে পিলিন।
তবে বৃহস্পতিবার দুপুরের মধ্যে চরিত্র বদলেছে পিলিন। দিল্লিতে মৌসম ভবনের বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, বুধবার রাতে জন্ম নেওয়ার পরে ১২ ঘণ্টা পেরোতে না-পেরোতেই শক্তি বাড়িয়ে অতি-প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের চেহারা নিয়েছে পিলিন। আপাতত পারাদীপ থেকে ৮০০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্ব দিকে অবস্থান করছে এই অতি-প্রবল ঘূর্ণিঝড়। এক আবহবিদ বলেন, “সাধারণত ঘূর্ণিঝড় ধাপে ধাপে শক্তি বাড়ায়। ঘূর্ণিঝড় থেকে প্রবল ঘূর্ণিঝড় হয়ে অতি-প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের চেহারা নিতে দিন দুয়েক সময় লাগে।” এ ক্ষেত্রে বঙ্গোপসাগরে অতিরিক্ত জলীয় বাষ্প থাকার ফলেই পিলিন চরিত্র বদলেছে বলে বিজ্ঞানীদের অনুমান।
মৌসম ভবন এ দিন জানিয়েছে, অষ্টমীর রাত থেকেই ওড়িশার গোপালপুর-পারাদীপ এবং অন্ধ্রের শ্রীকাকুলাম-কলিঙ্গপত্তনমে ঘণ্টায় ১৭৫ থেকে ১৮৫ কিলোমিটার বেগে ঝড় বয়ে যাবে। হবে অতি-ভারী বৃষ্টিপাতও। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে পুরী, গঞ্জামের মতো উপকূল এলাকায় জলোচ্ছ্বাস হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। পূর্ব উপকূলের সব রাজ্যের মৎস্যজীবীদের সাগরে মাছ ধরতে যেতে বারণ করা হয়েছে।
|
পুরনো খবর: নীলকান্তের মর্জি-সুতোয় ঝুলে পুজোর ভাগ্য |
|
|
 |
|
|