অর্ডিন্যান্স রুখে বেশ করেছি, ফের বার্তা রাহুলের
‘ফালতু’ অর্ডিন্যান্সের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়ে ঠিক কাজই করেছেন, জোর গলায় ফের দাবি করলেন রাহুল গাঁধী। দাগি নেতাদের সাংসদ বা বিধায়ক পদ বাঁচানোর অর্ডিন্যান্সের বিরুদ্ধে মুখ খোলায় তাঁকে নিয়ে কম বিতর্ক ও জলঘোলা হয়নি। কিন্তু সেই প্রসঙ্গ এড়িয়ে না গিয়ে সেটাকেই এখন আম-জনতার মন জয়ের অস্ত্র করছেন কংগ্রেস সহ-সভাপতি।
লোকসভা ভোটকে মাথায় রেখে সনিয়া গাঁধী ও প্রিয়ঙ্কার পরে রাহুল আজ প্রচার শুরু করলেন গোবলয়ের সব চেয়ে বড় রাজ্যে। আলিগড়ে এক সভা করেন তিনি। সেখানে রাহুলের প্রচারের অস্ত্র ছিল মূলত ৩টি। এক, অর্ডিন্যান্স-প্রসঙ্গ। অর্থাৎ দুনীতিগ্রস্ত নেতাদের বিরুদ্ধে তাঁর নিজস্ব সংগ্রাম। দুই, জাতপাতের বিরুদ্ধে কংগ্রেসের লড়াই। আর তিন, আম-আদমির কল্যাণে কংগ্রেস সরকারের কাজ।
বাতিল হওয়া অর্ডিন্যান্সটি নিয়ে বিতর্ক ছ’দিনে কিছুটা থিতিয়ে এলেও রাহুল আজ নিজেই ওই প্রসঙ্গ তোলেন। বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করেন, দুর্নীতিগ্রস্ত নেতাদের থেকে তিনি আলাদা। বরং জাতপাত ও গরিবির পাশাপাশি লড়াইটা তাঁর ওই সব দুর্নীতিগ্রস্ত রাজনীতিকদের বিরুদ্ধেও। রাগী রাহুলের কথায়, “অর্ডিন্যান্স নিয়ে নিজের ক্ষোভের কথা জানিয়েছিলাম। আমাকে অনেকেই বলেছেন, সময়টা ভুল বাছা হয়েছিল। কিন্তু সত্যি কথা বলার আবার কোনও সময় হয় নাকি?”
যুদ্ধং দেহি। আলিগড়ের জনসভায় রাহুল। বুধবার। ছবি: পিটিআই।
ফৌজদারি মামলায় দুই বা তার বেশি কারাদণ্ড হলে সাংসদ-বিধায়ক পদ খারিজ হয়ে যাবে, জুলাই মাসে রায় দিয়েছিল শীর্ষ আদালত। এর উল্টো পথে হেঁটে দাগি জনপ্রতিনিধিদের পদ বাঁচাতে অর্ডিন্যান্সে সায় দেয় মনমোহন মন্ত্রিসভা। কিন্তু এই অর্ডিন্যান্সকে ‘একেবারে ফালতু, ছিঁড়ে ছুড়ে ফেলে দেওয়া উচিত’ বলে মন্তব্য করে বিতর্ক উস্কে দেন খোদ কংগ্রেস সহ-সভাপতি। প্রধানমন্ত্রী তখন বিদেশে থাকায়, তাঁকে অপমান করা হয়েছে বলে অভিযোগ তোলে বিজেপি। শেষমেশ মূলত রাহুলের আপত্তির জেরেই গত ৩ অক্টোবর বিতর্কিত অর্ডিন্যান্সটি প্রত্যাহার করে কেন্দ্র। পর দিনই রাহুল স্বীকার করে নেন, ভাষা ব্যবহারে আরও সতর্ক হওয়া উচিত ছিল তাঁর। তবে তাঁর ভাবনায় ভুল ছিল না। দাগি নেতাদের সাংসদ বা বিধায়ক পদ বাঁচাতে কংগ্রেস তৎপর, মানুষের কাছে যাতে কোনও ভাবেই এই বার্তা না যায়, এ বিষয়ে বিশেষ সতর্ক তিনি। সে কারণেই আজও জোর গলায় নিজের সেই পদক্ষেপকেই সমর্থন করলেন তিনি।
জাতপাত ও ধর্ম নিয়ে রাজনীতির সমালোচনা করতে গিয়ে রাহুল এ দিন বিজেপি-র পাশাপাশি নিশানা করেন উত্তরপ্রদেশে ক্ষমতাসীন সমাজবাদী পার্টি ও রাজ্যে তাদের বিরোধী বহুজন সমাজ পার্টিকেও। রাহুলের অভিযোগ, আদৌ স্বতঃস্ফূর্ত নয়, মুজফ্ফনগরের গোষ্ঠী সংঘর্ষ আসলে রাজনৈতিক দলগুলির তৈরি করা। তাঁর কথায়, “ধর্ম, জাতের বিভেদই উত্তরপ্রদেশকে পিছন থেকে টেনে ধরছে। স্তব্ধ করে দিচ্ছে উন্নয়নের গতি।” রাহুলের দাবি, এই অবস্থার বদল আনতে পারে শুধু আম-আদমির দল, কংগ্রেসই। তাঁরা যে সাধারণ মানুষের পাশেই আছেন, তা বোঝাতে খাদ্য সুরক্ষা বিল, জমি অধিগ্রহণ বিলের প্রসঙ্গও তোলেন তিনি। তাঁর কথায়, “তিন বছর ধরে লড়াইয়ের পর পাশ হয়েছে খাদ্য সুরক্ষা বিল। আধা রোটি খায়েঙ্গের জমানা বদলে গিয়েছে। এখন নতুন স্লোগান হল, ভর পেট খায়েঙ্গে।”
কৃষকদের স্বার্থ রক্ষার প্রশ্নে রাহুল মনে করিয়ে দেন, ২০১১ সালে কৃষকদের জমি অধিগ্রহণকে কেন্দ্র করে রণক্ষেত্র হয়ে উঠেছিল গ্রেটার নয়ডার ভাট্টা পারসল। প্রাণ যায় কয়েক জনের। এর পরে চাষিদের বাঁচাতেই লোকসভায় নয়া জমি অধিগ্রহণ বিল পাশ করিয়েছে ইউপিএ সরকার।
জমি বিল নিয়ে রাহুলের এই মন্তব্যের পরই আসরে নামেন বিজেপি নেত্রী সুষমা স্বরাজ। লোকসভার বিরোধী দলনেত্রী অভিযোগ করেন, আসল সত্যটা না বলে জমি বিলের পুরো কৃতিত্ব কংগ্রেস একাই নিতে চাইছে। “জমি বিল পাশের সময় কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ যে বিজেপি নেত্রীর ভূমিকা আলাদা করে উল্লেখ করেছিলেন, কংগ্রেসের এই তরুণ নেতাটি সে কথা বেমালুম ভুলে গিয়েছেন,” টুইট করেন ক্ষুব্ধ সুষমা।

পুরনো খবর:


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.