হা বাহন
প্রতিমা তো খাসা হয়েছে। কিন্তু বাহনদের ভারি দুর্দশা! অতটুকু পশুপাখিতে কি এমন হেভিওয়েট ঠাকুরের ভার বইতে পারে? মণ্ডপে মণ্ডপে ঘুরে থিমের বিচার করতে গিয়ে সহানুভূতি ঝরে পড়ছে প্রবীণ অভিনেত্রীর। ভবানীপুরে পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্রের পুজো বলে খ্যাত ক্লাবে ঢুকে তিনি হতবাক্! সে কী! এখানেও বাহনদের এমন অবজ্ঞা! ঢোঁক গিলে বিচারকের উদাস মন্তব্য, “বুঝেছি, এই জন্যই শহরটার পরিবহণ-ব্যবস্থার এমন করুণ দশা।”

সরস্বতীর কলার
ঠাকুর বসেছিল যথাসময়েই। বিপত্তি বাধল তার পরে। মাটি কাঁচা থাকায় সরস্বতীর গলা হঠাৎই খসে পড়েছে। এ দিকে শিল্পী কাজের চাপে জেরবার। জানালেন, ভিজিট দেওয়া অসম্ভব। ‘রোগী’কে কুমোরটুলিতেই আনতে হবে। অগত্যা মাটির প্রলেপ দিয়ে অপারেশনটা পুজো কর্তারাই সারলেন। কিন্তু তাতে সরস্বতীর গলার কাছটা ফুলে ঢোল। যেন কলার পরেছেন! শেষমেশ পঞ্চমীতে শিল্পীর দয়া হয়েছে। উত্তর কলকাতার মণ্ডপটিতে নিজে এসে বাগ্দেবীকে যন্ত্রণা থেকে মুক্তি দিলেন।

বোনাস
ফুলবাগান মোড় থেকে গিরীশ পার্ক মেট্রো স্টেশনের অটোভাড়া ১১ টাকা। পঞ্চমীর সকালে ফুলবাগান মোড় থেকে অটোতে ওঠার সময়ে অটোচালক হাঁকলেন, “১৫ টাকা দিতে হবে।” ব্যস্ত অফিসযাত্রীর প্রতিবাদ, “আরে, বেশি নিলে ষষ্ঠী বা সপ্তমী থেকে নিন। একেবারে পঞ্চমীতেই কেন হাত পাতছেন?” ঘাড় ঘুরিয়ে অটোচালক জিভ কাটলেন, “ছি, ছি! হাত পাততে যাব কেন? এটা তো বোনাস। আপনারা বোনাসটা পুজোর আগেই পান তো!”

থিমচুরি
ছিল নানা রূপে এক ডজন শিবমন্দির। হয়ে গেল নারী-নির্যাতনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ। বিধাননগর এলাকার পুজোটির থিম পাশের পাড়া নকল করছে বলে অভিযোগ চাউর হতেই শেষ মুহূর্তে পরিকল্পনা বদল। দুঁদে থিম-শিল্পী মন্দিরগুলোয় শিবকে সরিয়ে দুর্গার রিলিফ বসালেন। জুড়লেন দেবীকে অস্ত্রদানের দৃশ্য। বিচারকদের সামনে গম্ভীর মুখে ব্যাখ্যা, “নারী-নির্যাতনের বিরুদ্ধে জেহাদে নামতেই দেবী ধাপে ধাপে সশস্ত্র হচ্ছেন।” তার পরই মুচকি হাসি “শেষ মুহূর্তে কেমন দিলাম!”

ভগীরথ
গঙ্গাজলে গণ্ডগোল। সল্টলেকের পুজোমণ্ডপে নকল গঙ্গার ঘাটের চেহারা দেখেই নিন্দুক পড়শি রে-রে করে উঠেছেন। পাহাড়ের গঙ্গা হলে না হয় বোঝা যেত! কিন্তু সমতলের গঙ্গা এমন হয় কখনও! অগত্যা টলটলে জল ঘোলাটে করার সাধনা শুরু হল। পাশেই কাদা চাপা দিতে বালি ফেলার কাজ চলছিল। বুদ্ধি খেলল এক কর্মকর্তার। মেশাও জলে বালি। স্বচ্ছ জল ক্রমেই গঙ্গার মতো হল। কিন্তু একটু বাদেই বালি তলায় জমা হতে লাগল। জল ফের পরিষ্কার! তবে উপায়? এক স্বেচ্ছাসেবককে বোঝানো হল, “তুই-ই মণ্ডপের ভগীরথ।” কেন? কিছু ক্ষণ পর-পরই থিতিয়ে পড়া বালি নেড়েঘেঁটে জলে গুলতে হবে। লাগাতার জল ঘোলা রেখে গঙ্গা ‘আনতে’ হবে তাঁকেই।

সর্পবিভ্রাট
জ্যান্ত সাপ নয়! সাপের খোলস। শহর চষে তা খুঁজে বার করতে গিয়ে গড়িয়াহাট এলাকার পুজোকর্তাদের হয়রানির একশেষ। থিম প্রাচীন দেউল। তাতে সাপের খোলস না হলে চলে! কর্মকর্তারা মিনমিন করে প্রস্তাব পেড়েছিলেন, প্লাস্টিকের সাপটাপ দিয়ে ম্যানেজ করা যায় না? খুঁতখুঁতে থিম-শিল্পী শুনেই ‘না’ করেছেন। শেষটায় মফস্সলের এক সর্প উদ্যানে গিয়ে মুশকিল আসান। জানা গেল, পাড়াতেই এক সর্প বিশেষজ্ঞের ঠিকানায় খানকয়েক খোলস রাখা। পুজোকর্তাদের ঘাম দিয়ে জ্বর ছাড়ল।

অপরাজিত
আমহার্স্ট স্ট্রিট থানার উল্টো ফুটের মণ্ডপে ঢুকতেই ঠাকুর দেখার ধারাবিবরণী। নাটকীয় ভঙ্গিতে বলা হচ্ছে, অসুরের বুকে কী ভাবে মা-দুগ্গা ত্রিশূল বিঁধিয়েছেন। তাঁর ডান পাশে গণেশ-লক্ষ্মী, বাঁয়ে কার্তিক-সরস্বতীদের খুঁটিনাটি ফিরিস্তিও শোনা যাচ্ছে। দৃষ্টিহীন একদল দর্শকের জন্যই এই ব্যবস্থাপনা। মণ্ডপ-চত্বরে প্রতিবন্ধী দর্শনার্থীদের মঞ্চে ওঠার জন্য মজুত র‌্যাম্প। শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধীদের নিয়ে সচেতনতা গড়তে রয়েছে প্রদর্শনীও। দুর্ঘটনায় একটি পা খোয়ানোর পরে পুজোকর্তা আশুতোষ গুপ্ত পাড়ার পুজোর চেহারাই পাল্টে দিয়েছেন!
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.