চাইলে এ বার থেকে ‘হিজাব’ পরেই সরকারি সংস্থায় কাজ করতে পারবেন তুর্কি মহিলারা। মঙ্গলবার এই নয়া নিয়ম প্রকাশিত হল তুরস্কের সরকারি গেজেটে। মুস্তাফা কামাল আতাতুর্কের আমল থেকে মহিলা সরকারি কর্মীদের হিজাব পরার উপর নিষেধাজ্ঞা ছিল। মঙ্গলবার তা এ ভাবে তুলে দেওয়ায় রক্ষণশীল মুসলিমরা খুশি হলেও, তুরস্কের উদারপন্থী সমাজের সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে প্রধানমন্ত্রী তায়ইপ এর্দোগানকে।
ইতিহাস বলছে, ক্ষমতায় আসার পর থেকেই আইনি, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক সংস্কারের মাধ্যমে উদারপন্থী জীবন-দর্শন তুরস্কে আমদানি করতে শুরু করেন মুস্তাফা কামাল আতার্তুক। যেমন ধর্মনিরপেক্ষতা। তুরস্কের বেশিরভাগ মানুষ মুসলিম সম্প্রদায়ভুক্ত। তবু সংবিধানে তুরস্ককে ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ দেশ হিসেবে বর্ণনা করা হয়। সরকারি দফতরের কর্মীরা যাতে ধর্মীয় পরিচিতির চিহ্ন বয়ে না বেড়ান, সে জন্য একটি ‘ডিক্রি’ জারি করেন আতার্তুক। আর তার পর থেকেই সরকারি ক্ষেত্রে যে সব মহিলা চাকরি করতে চান, তাঁদের হিজাব পরা মানা। |
নব্বই বছর ধরে এই নিয়মই মেনে আসছিল ধর্মনিরপেক্ষ তুরস্ক। কিন্তু মঙ্গলবার সে নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ায় উদারপন্থীদের প্রশ্ন, ধর্মনিরপেক্ষতার ঐতিহ্য ভেঙে তা হলে কি রক্ষণশীলতার দিকে ফিরতে চলেছে তুরস্ক? নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়া কি সেই প্রক্রিয়ারই শুরু?সমালোচনার জবাবে ইসলামিক মতাদর্শে বিশ্বাসী ‘একে’ দলের প্রধান তথা তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী এর্দোগান গণতন্ত্রের হাতিয়ার তুলে নিয়েছেন। দেশের উপ-প্রধানমন্ত্রী বেকির বোজদাগ বলেছেন, “নিজের পছন্দমতো বেশভূষা পরার তথা নিজের ইচ্ছেমতো বাঁচার অধিকারে যে নিয়ম বাধা তৈরি করত, তা এখন ইতিহাস।” তাঁদের মতে, এত দিন অনেক মুসলিম মহিলাই ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও সরকারি সংস্থায় যোগ দিতে পারতেন না। কারণ, সেখানে চাকরি করতে গেলে ‘হেড স্কার্ফ’ পরা বন্ধ করতে হবে। যা কি না তাঁদের মতের পরিপন্থী। গণতন্ত্রে এটা মানা যায় না। তাই নয়া নিয়ম। এ দিন তা প্রকাশিত হওয়ার পর থেকেই লাগু হয়েছে। তবে বিচারবিভাগ ও সেনাবাহিনীর ক্ষেত্রে এই নিয়ম প্রযোজ্য হবে না। |