ভাগীরথীতে ভাসছিলেন বৃদ্ধা। পুজোর সময়ে নতুন জামাকাপড় কেনা নিয়ে পুত্রবধূর সঙ্গে অশান্তির জেরেই নদীতে ঝাঁপ দিয়েছিলেন তিনি, বিপর্যয় মোকাবিলা দল উদ্ধার করার পরে দাবি করলেন তিনি। মঙ্গলবার সকালে কাটোয়ার ঘটনা। দুপুরে তাঁর এক ছেলে বৃদ্ধাকে বাড়ি নিয়ে যান।
পুলিশ জানায়, বৃদ্ধার নাম শ্যামলী সাহা। বাড়ি কেতুগ্রামের কান্দরার তালগোনা পাড়ে। শ্যামলীদেবী পুলিশকে জানান, দিন কয়েক আগে বড় বৌমার সঙ্গে তাঁর অশান্তি হয়। তার পর থেকে বড় ছেলে জয়ন্ত তাঁর সঙ্গে কথা বন্ধ করে দেন। শ্যামলীদেবী পুলিশকে অভিযোগ করেন, বাড়ির ভাগ নিয়ে প্রায়ই অশান্তি হয়। পুজোর সময়ে নতুন জামাকাপড় কেনা নিয়ে অশান্তি তাঁর সহ্য হয়নি। সে কারণেই তিনি পুজোর আগে নদীতে ঝাঁপ দেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন ভোরে কান্দরা থেকে বাসে করে কাটোয়া আসেন ওই বৃদ্ধা। সেখান থেকে প্রায় দু’কিলোমিটার হেঁটে দেবরাজ ঘাটে পৌঁছন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, স্নানের নাম করে নেমে নদীতে ঝাঁপ দেন তিনি। তার পরে ভাসতে ভাসতে ওই ঘাট থেকে বেশ কিছুটা দূরে হরিসভা পাড়ায় কাটোয়া-বল্লভপাড়া ঘাটের দিকে চলে যান। সেখানে ডিউটি করছিলেন কাটোয়া পুরসভার বিপর্যয় মোকাবিলার সদস্যেরা। তাঁরা দেখেন, এক বৃদ্ধা ভাসতে ভাসতে এগিয়ে আসছেন। ওই দলের সদস্য নীতিন রায় বলেন, “আমাদের এক জন নদীতে ঝাঁপ দেন। ওই বৃদ্ধাকে পাড়ে তোলা হয়। সেখান থেকে কাটোয়া থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।” বিপর্যয় মোকাবিলা দলের সদস্যেরা জানান, ওই বৃদ্ধা সাঁতার জানায় কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। পুরসভার ত্রাণ ও বিপর্যয় মোকাবিলা অফিসার সুকুমার সরকার বলেন, “এর আগেও আমাদের সদস্যদের প্রচেষ্টায় প্রাণ বেঁচেছে।”
ওই বৃদ্ধার তিন ছেলে। দুপুরে খবর পেয়ে কান্দরা থেকে আসেন তাঁর মেজ ছেলে প্রদীপ সাহা। তিনি পুলিশের কাছে মুচলেকা দিয়ে মাকে বাড়ি নিয়ে যান। যাওয়ার আগে বৃদ্ধা বলেন, “আমার হাতে টাকা থাকলে, পুজোর সময়ে ছেলেদের হাতে দিতে পারলে আমাকে কেউ কষ্ট দিতে পারত না!” তাঁর বড় ছেলে ও বড় বৌমার সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। |