|
|
|
|
আনন্দplus এক্সক্লুসিভ |
পঞ্চমীর বোধন |
এই বোধন দেবীর সামনে বন্ধুত্বের! যাতে ধরা পড়লেন বাংলার যুদ্ধং দেহি
দুই সুপারস্টার! দেব আর জিৎ। ক্যামেরার পিছনে তখন? লিখছেন নিবেদিতা দে |
‘‘জিৎ, শো মি ইওর চেস্ট...’’ |
মুনমুন সেনের প্রশ্রয়মিশ্রিত হালকা নির্দেশ জিৎকে!
অর্থাৎ জামার বোতাম খুলে জিৎ যেন তাঁর ফর্সা মসৃণ বিভাজিকাটি মেলে ধরেন!
অনন্তযৌবনা মুনমুনের কথামতো ময়ূরকণ্ঠী আচকানের বোতাম খুলে মসৃণ বক্ষদেশ দেখালেন জিৎ! আলগা করে।
পাশে লাল ধুতি-কুর্তায়, ‘টল অ্যান্ড হ্যান্ডসাম’... যেন কৈলাস থেকে ভেসে এলেন ‘দেব’! |
|
ছবি: দেবাশিস মিত্র। |
“গিভ মি আ সেক্সি পোজ দেব...” |
মুনমুনের দিকে তাকিয়ে দেব মিষ্টি হাসলেন।
মুনমুন বললেন, “পারফেক্ট”। ...ক্যামেরা রেডি।
একই সঙ্গে ঝিলমিলিয়ে এসে পড়লেন ক্ষীণ কোমরের অধিকারিণী মিষ্টি দুই নায়িকা! রাইমা ও সায়ন্তিকা।
আর ঠিক তখনই কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়, মুনমুনের সঙ্গে পরামর্শ করে বলে উঠলেন “অ্যাকশন”!
সঙ্গে সঙ্গে সবাই ‘স্ট্যাচু’!
...আশ্চর্য! কোথায় অ্যাকশন বললে, সংলাপ বলতে বলতে এগিয়ে আসবে নায়ক-নায়িকা, তা নয়! পোজ নিয়ে স্ট্যাচু! ‘ফ্রিজ ফ্রেম’!
হ্যাঁ, ঠিক এ ভাবেই সল্ট লেকের এফ ডি ব্লকের পুজোমণ্ডপে আরম্ভ হয়ে গেল আনন্দplus-এর পুজোর ফটোশ্যুট!
পরিচালনায়: মুনমুন সেন। |
‘রীনা ব্রাউন’ লুকে মুনমুন |
খয়েরি টপ, বেজ স্কার্ট, চোখে সারাক্ষণের মেদুর ফ্লার্ট...একটা আই ব্রাও একটু তোলা... টিপিক্যাল ‘রীনা ব্রাউন’ লুকে মুনমুন পৌঁছে গেলেন সকাল ন’টার মধ্যেই। নির্দিষ্ট ভ্যানিটি ভ্যানে বসে, কখনও মোবাইলে, কখনও এমনিই পরামর্শ দিলেন সাজগোজের খুঁটিনাটি। টুকটাক কামড়ও বসালেন শিঙাড়া-জিলিপিতে। বললেন, “ঠিক বাঙালি জিলিপি নয় কিন্তু।” রীনা ব্রাউন জিলিপিও খান!
অন্য ভ্যানে দেব, জিৎ, রাইমা ও সায়ন্তিকা।
জিৎ ও দেব দু’জনেই একবার একবার করে ততক্ষণে দেখা করে গিয়েছেন মুনমুনের সঙ্গে। |
দেব-জিৎ ছবি হিট |
আসলে কুমারটুলিতে শ্যুটিং করতে চেয়েছিলেন মুনমুন। কিন্তু একে হেভিওয়েট দুই নায়ক ফটোশ্যুটে একসঙ্গে এই প্রথম, একটা টেনশন তো রয়েছেই... তার ওপর ওঁদের নিয়ে ছবি তোলার জন্য যে রকম নিরিবিলি প্রয়োজন, তা কুমারটুলির গিজগিজে পরিবেশে কি সম্ভব? তাই সল্ট লেকের এফ ডি পার্কের পুজোয় ছবি তোলার বন্দোবস্ত। ফাঁকায় ফাঁকায় যদি করা যায়। অন্তত নায়কের ভ্যানদুটো পার্ক করা যাবে নিরাপদে, কেউ তেমন খেয়াল করবে না।
আরম্ভ হল ফটোশ্যুট। কে যেন বলল, “দেব-জিৎ একসঙ্গে বাব্বা!” শুনে মনে হল, মোহনবাগান-ইস্টবেঙ্গল, কিংবা ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড-চেলসির খেলা চলছে চোখের সামনে। |
ইস্ ইজাজত.. |
মুনমুনের ভ্যানে বসেই জানতে চাইলাম এই যে ফটোশ্যুট পরিচালনা করতে এসেছেন, ফুল ফ্লেজেড ফিচার-ফিল্ম পরিচালনা করতে ইচ্ছে করে না আপনার?
মুনমুন টিপিক্যাল স্টাইলেই বললেন, “না-আ-আ প্লিজ। এই দ্যাখো, এখানেই কেউ আমার কোনও কথা শুনছে? শুনছেই না (হাসি)...যার যা ইচ্ছে জামা-কাপড় পরছে...ছবি বানালেও যে যা ইচ্ছে ডায়ালগ বলবে... (হাসতে হাসতে)।
যদিও ঠিক সাক্ষাৎকার নয়, তবু মুনমুনকে বলেই ফেললামআপনাকে দেখলেই ‘বৈদুর্য রহস্য’, ‘হান্ড্রেড ডেজ’ থেকে ‘লেকিন’...সব কথা মনে পড়ে। বললেন, “গুলজার তো আমাদের ফ্যামিলি ফ্রেন্ড। ‘লেকিন’-এর সময় বলেছিলেন, ‘বিনোদ খন্নার বান্ধবী হিসেবে শুধু তোমাকেই মানাবে’... একটু অন্যমনস্ক তিনি। বললেন, “ডেটের কারণে ‘ইজাজত’-এ অনুরাধার (পটেল) চরিত্রটা করতে পারিনি।”
ইস্, তার মানে তো ‘...মেরা ও সমান লৌটা দো’ গানটা আপনার লিপেই থাকত! হাসলেন মুনমুন।
আচ্ছা, আপনি তো কিছু দিনের মধ্যেই অনিরুদ্ধ রায় চৌধুরীর ‘বুনো হাঁস’ ছবির শ্যুটিং করতে চলেছেন। আগের সময় আর আপনার মেয়েদের সময় কত পাল্টে গেছে, তাই না?
“মা তো বলে, মেয়েদের গান শেখাও, নাচ শেখাও।” আমি বলেছি, “অনেক শিখিয়েছি মা, আর পারব না।”
কথা শেষ হয় না। মাঝেই চলে আসেন হেয়ার-ড্রেসার প্রিসিলা। ‘জুন টমকিন্স’-এর কর্ত্রী। প্রিসিলা ও তাঁর মা জুনের হাতেই সুচিত্রা-মুনমুন-রিয়া-রাইমাতিন প্রজন্মই মেলে দেন নিজেদের কেশরাশি। আসলে তিনিও এসেছেন শ্যুটে সাহায্য করার জন্য
(কাগজের শ্যুটে এই প্রথম)। মুনমুনের সঙ্গে টুকিটাকি কথা সেরে চলে গেলেন তিনিও। আর তখনই মুনমুন নেমে পড়লেন ভ্যান থেকে। |
নিছক বন্ধুত্ব... |
মুনমুনের অনুরোধেই কৌশিক এসেছেন ফটোশ্যুটের আসরে। নিছক বন্ধুত্বের তাগিদে। ফটোশ্যুটের ক্রিয়েটিভ প্রোডিউসর তিনি। মুনমুনের পাশে... ‘শব্দ’-র পরিচালককে এই রূপে কে কবে দেখেছে?
ও দিকে, নির্জন সল্ট লেকের পথচলতি বাসিন্দাদের চোখে প্রবল বিস্ময়! হচ্ছেটা কী এখানে? সিনেমার শ্যুটিং নাকি পুজোর উদ্বোধন? কিন্তু এই সাতসকালে! “আরে, ওই তো মুনমুন সেন...আর ওই...ওই তো ওর মেয়ে রাইমা!”...“আরে দেব-জিৎ একসঙ্গে? সত্যি!” ভিড় বেড়ে গেল হঠাৎ করে।
ভাল কথা, শ্যুটিং-এ সবার আগে পৌঁছেছিলেন মুনমুন। অন্য গাড়িতে আসছিলেন রাইমা। শোনা গেল, রাইমা পথ ভুলে চলে গিয়েছিলেন বর্ধমান রাজবাড়িতে। “কী কাণ্ড, একই বাড়ি থেকে মা-মেয়ে বেরিয়ে...দু’দিকে চলে গেল”, আশ্চর্য দেব! মুখে ফিচেল হাসি। |
শ্যুটের পরেই... দে ছুট... |
শ্যুটিং শেষেই জিৎ সো-জা-আ ছুটবেন এয়ারপোর্ট। মুম্বই হয়ে স্পেন, নেদারল্যান্ডস। বৌ-মেয়ের সঙ্গে পুজোর ছুটি কাটাতে। ফিরবেন লক্ষ্মীপুজোর পর। বললেন, “গত বেশ কয়েক বছর ধরে ইউরোপ যাই এই সময়টায়।”
দেব, এক দিন আগেই সাউথ আফ্রিকা থেকে ফিরেছেন, সত্যিকারের সিংহ, অর্থাৎ মা দুর্গার বাহনের সঙ্গে ‘চাঁদের পাহাড়’ ছবির শ্যুটিং সেরে। সপ্তমীতে নতুন ছবি ‘রংবাজ’ রিলিজ। মাঝে একটু হালকা। এই ফটোশ্যুট শেষে তাই তিনি ফিরবেন তাঁর আস্তানা, কলকাতার ‘কৈলাস’, সাউথ সিটিতে।
রাইমা ভ্যানে পোশাক বদলে চলে গেলেন আনন্দবাজারেরই ব্র্যান্ডের অনুষ্ঠানে, বললেন, “সপ্তমী পর্যন্ত উদ্বোধন আর অষ্টমী-নবমীতে বাবা-মা-বোনের (রিয়া) সঙ্গে কলকাতার নতুন নতুন রেস্তোরাঁগুলোয় যাব লাঞ্চে।”
সায়ন্তিকা পাক্কা পাড়ার মেয়ে। থাকেন লাবণী হাউজিং-এ। বললেন, “লাঞ্চ করে জিমে যাব।”
জানা গেল সায়ন্তিকার বাবা গুরুপ্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায় এক সময়ে রাজ্যপালের চিফ সিকিওরিটি অফিসার ছিলেন। এখন সল্ট লেকেই রয়েছে তাঁদের দুটি জিম, ‘গুরু’স। সেখানেই চললেন সায়ন্তিকা।
তাই না শুনে কৌশিক, নিজের চেহারার দিকে এক ঝলক তাকিয়ে বেশ গুরুগম্ভীর ভঙ্গিতে মন্তব্য করলেন, “সত্যি সত্যি কেউ যে শেষ পর্যন্ত জিমে গিয়ে পৌঁছতে পারে...ভাবতে পারি না। জিমে যায় কী করে মানুষ! বর্ষা এলে আমি বা মুনমুনদি হয়তো ভাবি ইলিশটা ভাল উঠবে, স্বাদটা ভাল হবে... আর সায়ন্তিকার মতো জিম-মনস্করা ভাবে, কী করে জিমে যাই এই বৃষ্টিতে...!” |
মুড যখন ‘পুজো মোড’-এ |
নামেই ফটোশ্যুট, গল্পের বহর দেখে ইতিমধ্যেই বুঝতে পারা যাচ্ছে পুরো ব্যাপারটা শেষ পর্যন্ত কী দাঁড়াল। আজ্ঞে হ্যাঁ, হয়ে দাঁড়াল প্রি-পুজো সেলিব্রেশন।
সেখানে মুনমুন যতটা গুছিয়ে-টুছিয়ে ছবির কথা ভেবেছিলেন, কিন্তু হই-হই, প্রচণ্ড গরমে একটু আরাম পেতে মাঝে-মধ্যেই শীতাতপনিয়ন্ত্রিত কমিউনিটি হলে গিয়ে সকলের বসা, পুজো কমিটির মানুষজনের অতিব্যস্ত তৎপরতা, “ম্যাডাম কোনও অসুবিধে হচ্ছে না তো”... হইহই, ব্যস্ততা, প্যান্ডেলের মধ্যে ক্যামেরাম্যানের মাথাও প্রায় তালগোল অবস্থা। কার্যত পরিস্থিতি এক্কেবারে ‘পুজোর মোডে’।
শুরুতে শ্যুট নিয়ে খানিক খুঁতখুঁত করার পর, মুনমুনও ভেসে গেলেন নিখাদ আড্ডায়। চা-কফি খেলেন। স্টেজের ওপর উঠে চেয়ারে বসে ক্যামেরাম্যানকে বোঝানোর চেষ্টা করলেন টিপিক্যাল ‘মুন’ স্টাইলে। কিন্তু কে কার কথা শোনে। যে যার মতো করে মুডে। জিৎ বললেন, “অনেক শ্যুট করেছি, কিন্তু এত হোমলি কখনও ফিল করিনি”।
তারকারাও অনেক রিল্যাক্সড। সংলাপ-টংলাপের ঝক্কি নেই। |
দুই পৃথিবী... |
সত্যিই পুজোর মুডে...না হলে একই ভ্যানে মেক আপ করেন দেব-জিৎ! অবশ্য এসি সেই ভ্যানে দু’টো আলাদা ঘর। আর সেই দুই ঘরে বিরাজমান বাংলা ছবির দুই তারকা। দুই কামরার মাঝে কেবল একটা দরজা। এক সময়ে যে ব্যবধান নস্যাৎ করে, মাঝের দরজা খুলে দেবই চলে এলেন জিতের ঘরে। জিৎ এক মুহূর্ত নীরব। বললেন, “আরে আয়!” চেয়ার টেনে বসে দেব বললেন, “কেমন আছ জিৎদা?” “ভাল, শ্যুটিং কেমন হল তোর? কী খেলি সাউথ আফ্রিকায়?” জানতে চাইলেন জিৎ। দেব বললেন “ইন্ডিয়ান।”
যেন দুই বন্ধু বহুদিন পর গল্প জুড়ল। খানিক পরে যে গল্প বাংলা থেকে হিন্দি ভাষায় গড়াল।
দেখলে কে বলবে, এই দু’জনকে নিয়েই বাংলা দর্শক ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগানের মতো দুই দলে বিভক্ত।
দেব না জিৎ? র্যাপিড ফায়ারে এমন প্রশ্ন করলে অবধারিত ভাবে নায়িকারা ঠোঁট উল্টে বলে বসেন, “দু’জনেই প্লিজ।” যেন একজনের নাম করলে অপরজন দুঃখ পায় যদি। ইস্!
দুটো চেঞ্জ শ্যুটিং-এ পুজোয় অনেকগুলো প্রথম শট হবে ডিজাইনার শাড়ি আর ধুতি-কুর্তায়। পরেরটা ক্যাজুয়াল-এ। ডিজাইনার প্রণয় বৈদ্য ও অভিষেক দত্তের সঙ্গে আলোচনা করেই নায়ক-নায়িকারা বেছেছিলেন নিজেদের পোশাক। দেব ও সায়ন্তিকার পোশাক বানিয়েছেন অভিষেক। আর রাইমা জিৎ-এর পোশাক প্রণয়ের।
তবে শ্যুটের পোশাক যেমনই হোক, সত্যি সত্যি কে, কী রকম সাজবেন পুজোয়? রাইমা বললেন, “মা আমাকে সাদা, লাল পাড় একটা শাড়ি দিয়েছেন। ওই শাড়ি পরেই আমি পুজো উদ্বোধন করব। আর মাকে বলেছি আমাকে একটা মোটা সোনার বালা দিতে।” |
|
সায়ন্তিকার বাবা, মুনমুনের সঙ্গে কয়েকটা সিরিয়ালে অভিনয় করেছিলেন।
অনেক পুরনো কথা, তবু পৃথিবীটা কত ছোট বোঝা গেল! |
|
|
মুনমুন বললেন, “পারব না। প্রচুর গয়না হারায় ও...। বরং ক’দিন আগেই আমি জোধপুর থেকে অনেকগুলো শিফন কিনে এনেছি। ব্লু, অরেঞ্জ, রেড। বাদলার কাজ করা...বুড়ি (রিয়া), ডোলু (রাইমা) জানে না, ওগুলোই রেখেছি ওদের পুজোর জন্য। আর আমি নিজে প্লেন হালকা বাংলার তাঁত পরব। নৌকোর মোটিফ দেওয়া সাদার ওপর। দেখলেই বোঝা যায় বাংলাদেশি তাঁতির বোনা। বেনারসের ‘রোলিয়ানা’রও আমি ভীষণ ভক্ত। ওদের বেনারসি, টিস্যু অসাধারণ।”
আর সায়ন্তিকা? ‘হ্যাংওভার’-এ প্রসেনজিৎ, ‘আওয়ারা’-য় জিৎ, আর আগামী ছবি ‘টার্গেট’-এ দেব। মাত্র কয়েকটা ছবির অভিজ্ঞতার মধ্যেই কাজ করে ফেললেন টলিউডের প্রধান তিন তারকার সঙ্গে।
পুজোর কেনাকাটা কী করলেন, জানতে চাওয়ায় বললেন, “রোজ রোজ তো শাড়ি পরা হয় না, তাই পুজোর সময় শাড়ি মাস্ট। কিছু দিন আগেই আমার মা বেনারস গিয়েছিলেন। ওখান থেকে অনেকগুলো শিফন এনেছেন। নবমীতে পরব রেড বর্ডার দেওয়া ব্ল্যাক শিফন, আর অষ্টমীতে রেড বর্ডারে সাদা শিফন। আনারকলিও আছে। দেখি কবে পরি।”
পুজোর সাজের খুঁটিনাটি নিয়ে মেয়েদের তুলনায় ছেলেরা একটু পিছিয়েই বলা যায়। জিৎ যেমন বাইরে থাকছেন বলে, টুকিটাকি বাজার করেছেন। আর দেব বললেন, “পুজোয় ধুতি পাঞ্জাবিই পরব।” |
‘আনন্দ’ না ‘সিলসিলা’
‘নমক হারাম’ নাকি ‘শোলে’... |
কথায় কথায় শ্যুটিং গড়াল পাশে আরেকটা প্যান্ডেলে। সেখানে তুলনামূলক ছোট মূর্তি, একটু পুতুল পুতুল ধরনের, সেখানেই দ্বিতীয় শট।
শটে যেতে যেতে রাইমা জানালেন, ‘বাড়ি তার বাংলা’, ‘হৃদমাঝারে’, ‘ছায়ামানুষ’ ছাড়াও হিন্দি ছবি ‘রাখ’, ‘নো রুল ফর ফুল’, ‘দ্য বাস্টার্ড চাইল্ড’ তাঁর একগাদা ছবি রিলিজ করতে চলেছে।
প্যান্ডেল ঘিরে ততক্ষণে বেশ ভিড়। বিধাননগর পুলিশের সঙ্গে সঙ্গে পুজো কমিটির লোকজনও ব্যস্ত, যাতে তারকারা নিরাপদে থাকেন। এ বার ছবির জন্য একটা মূর্তি সামনে আনতে বললেন মুনমুন। তার পর ছবির ব্যাপারটা ফটোগ্রাফারকে বলে দিয়ে একটু দূরে সরে গেলেন।
জিৎ-এর হেয়ারস্টাইল পুরোপুরি পাল্টে গেছে। আর দেবের টি-শার্ট দেখে অনেকেই বলে উঠল, ওয়াও!
আর জিতের কাছে যে-ই জানতে চাইলাম দু’জনকে নিয়ে ছবি করলে কোন ছবির রিমেক ভাল হয়? জিৎ, পটাপট বলে গেলেন, “পরভারিশ, ‘নমকহালাল’, ‘নমকহারাম’, ‘ত্রিশূল’, ‘দোস্তানা’, ‘সিলসিলা’।”
কৌশিক তার সঙ্গে জুড়ে দিলেন, ‘আনন্দ’।
আচ্ছা বাংলায় ‘স্ত্রী’, ‘দেবদাস’...
...কথা শেষ হয় না, ছবি ওঠে আপন চিত্তে।
‘বস’ ‘খোকা’র ‘দুই পৃথিবী’
ছবি তোলার সময় কে বলবে এই দুই নায়ক প্রায় বাঙালির মোহনবাগান-ইস্টবেঙ্গলে পরিণত। আর এই ফটোশ্যুট যেন বিজয় মাল্য। মিলিয়ে দিয়েছে ‘দুই পৃথিবী’কে।
কৌশিক বলছিলেন, “প্রতিযোগিতা সব সময় ভাল। ম্যালকম মার্শাল আর গাওস্কর দু’জনে দারুণ বন্ধু ছিলেন। কিন্তু ক্রিজে থাকলে দু’জনেই চাইতেন কে কার মাথা ফাটিয়ে দিতে পারেন!” মুনমুন বললেন, “জিৎকে আমি অনেক দিন চিনি। আমার কাছে ও রিয়া-রাইমার মতো।”
খুব ভাল ছেলে...আর দেবের সঙ্গে আমার তেমন আলাপ নেই। কিন্তু দেব খুব চামির্ং। ওর নাচে অদ্ভুত একটা রিদ্ম আছে।” কিছু দিন পরেই অবশ্য ‘বুনো হাঁস’-এ একসঙ্গে কাজ করবেন মুনমুন ও দেব।
ও দিকে সায়ন্তিকার ঢিলেঢালা পালাজো প্যান্টস আর রাইমার টাইট জিন্সে ছবি উঠছে নানা ভঙ্গিতে।
কিছুক্ষণ আগেই মুনমুন বলছিলেন, “সায়ন্তিকা মেয়েটা খুব সুইট, কী বাধ্য, সব জিজ্ঞেস করে নিয়েছে কী করবে কী করবে না। আর রাইমা কোনও কথা শুনছে না আমার, দুষ্টু।”
জানা গেল বহু আগে সায়ন্তিকার বাবা, মুনমুনের সঙ্গে কয়েকটা সিরিয়ালে অভিনয় করেছিলেন। অনেক পুরনো কথা, তবু পৃথিবীটা কত ছোট বোঝা গেল! |
মুনমুনের মোবাইল ক্যামেরায় |
|
“দেব, টার্ন অ্যারাউন্ড”, পরিচালক মুনমুনের ডাকে মেক আপ ছেড়ে ঘাড় ঘুরিয়ে দেব। জিৎকে কিচ্ছুটি বললেন না মুনমুন। কারণ, আয়নার মধ্যে দিয়ে জিতের মুখ পরিষ্কার।
ছবি তোলার মতো ফ্রেম। মুনমুন বললেন, “জিৎ আয়নায় নিজের দিকে তাকিয়ে হাসছিল, দেখেই মনে হল, ছবিটা তুলি।” শ্যুটের মাঝে পরিচালক-সাহিবা বাছলেন নিজস্ব ফ্রেম। আর আনন্দplus ও পেয়ে গেল মুনমুনের মোবাইল ক্যামেরায় তোলা সেই মুহূর্ত! জয় মা! |
|
মায়ের অঞ্জলি |
রাইমা অঞ্জলি দেন? “হ্যাঁ, পাশে টুটু বসুর বাড়িতে, আমি, মা, বোন অঞ্জলি দিই। একবার তো ট্রাকে করে ভাসানেও গিয়েছিলাম। অনেক আগে। এ বছর যাব না। তবে অঞ্জলি দেব।”
আর জিৎ? “কালীঘাটের ছেলে আমি। প্রভাতফেরি দেখে বড় হয়েছি। অঞ্জলিও দিতাম। এ বছর হবে না।”
সায়ন্তিকা আপনি কোথায় অঞ্জলি দেবেন? “জাস্টিস ভগবতী প্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায় আছেন না, ওঁকে জ্যাজু বলে ডাকি, বেলেঘাটায়, ওঁদের বাড়িতে অঞ্জলি দিই।”
দেব আপনি? “অঞ্জলি মাস্ট। সাউথ সিটির কমপ্লেক্সের পুজোয় গত বছর দিয়েছি। এ বছরও দেব।”
আচ্ছা, ওই যে ছবিগুলোর রিমেক নিয়ে কথা হচ্ছিল, সেগুলোয় আপনি কোন চরিত্রটা করতে চাইতেন? দেব বলেন, “শোলে হলে আমি গব্বর সিংহ করতাম।” আর জিৎ? “পরিচালকই ঠিক করুন (হাসি)”।
তার মানে, কে অমিতাভ হবেন, আর কে-ই বা হবেন ধর্মেন্দ্র...ঠিক করতে পারছেন না!
হুম্-ম্ তার মানে, টেনশন has!
ছবি তোলা শেষ হলে কমিউনিটি হলের দোতলায় লাঞ্চের ব্যবস্থা। এলাহি আয়োজন। ধনিয়া চিকেন, কষা রুই, সরষে পটল, ভেটকি ফ্রাই, চাটনি, মালপোয়া, জলভরা নরমপাক...
ও ভাল কথা, বলতে ভুলে গেছি, সেই সকালে ভ্যানিটি ভ্যানে যখন এসে বসেন মুনমুন, তখনই সৌজন্য সাক্ষাৎ-এ এসেছিলেন ক্লাব প্রেসিডেন্ট প্রদীপ সেনগুপ্ত। মুনমুন তখনই তাঁকে বলেছিলেন, “অষ্টমী পুজোর অঞ্জলির জন্য এনেছি। মা-কে একটু পরিয়ে দেবেন প্লিজ। অন্তত ঘটে হলেও হবে।”
লাল-সাদা-জরির কাজে বাংলার তাঁতের শাড়ি। মা দুর্গার জন্য প্রণামী।
সত্যিই, স্কার্ট-টপের ‘সপ্তপদী’র রীনা ব্রাউন লুকের মধ্যেও যে এমন খাঁটি বাঙালি মন লুকিয়ে, কে জানত!
|
|
|
|
|
|