নাছোড় বৃষ্টিতে চিন্তিত মমতাও
কাশের কপালে পরিয়ে দিন কাজলের টিপ! পুজোর উদ্বোধনে এসে বাসিন্দাদের এ কথা বললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার বিকেলে তিনি যান হরিদেবপুর ৪১ পল্লির মণ্ডপে। সেখানে দাঁড়িয়ে থাকা একটি বাচ্চাকে দেখে তিনি বলেন, “নজর লাগা এড়াতে বাচ্চাদের যেমন কাজলের টিপ পরানো হয়, তেমনই আকাশের কপালেও কাজলের টিপ পরিয়ে দিন।”
পুজোয় বৃষ্টি নিয়ে আম-বাঙালির চিন্তা যে মুখ্যমন্ত্রীকেও ছুঁয়েছে, তা শনিবারই বোঝা গিয়েছিল তাঁর কথায়। তিনি নবান্ন থেকে যখন বেরোন, তখনই আকাশ কালো। দক্ষিণ কলকাতার এক মণ্ডপে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন, “বৃষ্টিটা কমিয়ে দাও মা।” রবিবার বৃষ্টি না হলেও সোমবার ধুয়ে গিয়েছে শহর। তার মধ্যেই আটটি পুজোর উদ্বোধন সারেন তিনি। যার মধ্যে রয়েছে মমতার মন্ত্রিসভার সদস্য অরূপ বিশ্বাসের সুরুচি ও ফিরহাদ হাকিমের চেতলা অগ্রণীও। বেহালা নূতন দল, বড়িশা ক্লাব, হরিদেবপুরের ৪১ পল্লি , অজেয় সংহতি, ৬৬ পল্লি ও বাদামতলা আষাঢ় সঙ্ঘেও যান তিনি।
মমতাময় উদ্বোধন
বৃষ্টির মধ্যেই দিনভর পুজো উদ্বোধন করলেন মুখ্যমন্ত্রী
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। চেতলা অগ্রণী। ছিলেন ফিরহাদ হাকিম।
এ দিনের শেষ উদ্বোধন ছিল চেতলা অগ্রণীর। সেখানে ছিলেন মমতা, ফ্রান্সের কনসাল ফাব্রিস এতিয়েন ও রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ। আর ছিল মাথায় ছাতা ধরা বড়সড় ভিড়। বৃষ্টিতে জেরবার মুখ্যমন্ত্রী এ দিন বলেন, “মাঝেমধ্যে অল্প বৃষ্টি হলে ভাল হয়। ঠান্ডা-ঠান্ডা পড়ে। ভাল করে খাওয়াদাওয়া করা যায়।” কিন্তু উত্‌সবের মুখে নাগাড়ে বর্ষা যে তাঁর না-পসন্দ, সে কথাও জানান তিনি। হরিদেবপুর অজেয় সংহতিতে তিনি চণ্ডীপাঠ করতে করতে সেই সুরেই বলেন, “যা দেবী সর্বভূতেষু, বৃষ্টি বন্ধ করা রূপেণ সংস্থিতা।”
মহালয়ার দিন থেকে নাগাড়ে বৃষ্টিতে জেরবার শহর। সোমবার দুপুরের পরও ঝেঁপে বৃষ্টি নামে। পাল্লা দিয়ে বাড়তে থাকে যানজট। বর্ষা যে শুধু উত্‌সবমুখর বাঙালিকে বিপাকে ফেলবে তা নয়, বিদেশিদের সামনেও তুলে ধরা যাবে না এই আন্তর্জাতিক মানের উত্‌সবকে। দুর্গাপুজোকে বারবার বিশ্বের পর্যটন বাজারে তুলে ধরার কথা বলেছেন মমতা। রবিবার বোসপুকুর তালবাগানের পুজোর উদ্বোধনে গিয়েও সে কথা বলেন তিনি।
বৃষ্টির জেরে এখনও অনেক পুজোর কাজ শেষ হয়নি। কাজ শেষ না হওয়ায় ঘটা করে উদ্বোধনের পরিকল্পনা বাতিল করেছে হাতিবাগানের শিকদারবাগান পুজো কমিটি। বেলেঘাটা নব জাগ্রত সঙ্ঘে কাজ শুরু করেও বন্ধ করতে হয়। আজ, মঙ্গলবার চতুর্থীর সন্ধ্যায় শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু ও ক্রেতা সুরক্ষা মন্ত্রী সাধন পাণ্ডে আসবেন উদ্বোধন করতে। পুজো-কর্তা প্রবীর মজুমদারের আশা, বুধবার দুপুরের মধ্যেই কাজ শেষ হবে তাঁদের।
বৃষ্টি বিপাকে ফেলেছে তৃতীয়ায় রাস্তায় বেরনো নাগরিকদেরও। নিউ মার্কেট কিংবা হাতিবাগানে যাঁরা কেনাকাটা করতে বেরিয়েছিলেন, মুষলধারে বৃষ্টি আর ঝোড়ো হাওয়ার দাপটে তাঁদের নাকাল অবস্থা। জমা জলে যানজটের জেরে নাকাল হয়েছেন অফিস ফেরত মানুষজনও। এ দিন বিকেলে সল্টলেক থেকে ধর্মতলায় আসছিলেন অর্ণব বন্দ্যোপাধ্যায়। যানজটের জেরে মৌলালিতে নেমে পড়েন তিনি। জল-গাড়ি এড়িয়ে এসএন ব্যানার্জি রোড ধরে হেঁটে হেঁটে ধর্মতলায় পৌঁছন তিনি।
সুরুচি সঙ্ঘ। ছিলেন অরূপ বিশ্বাস। হরিদেবপুর অজেয় সংহতি।
ট্রাফিক পুলিশ জানায়, চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউয়ে বেশির ভাগ জায়গায় হাঁটু-জল। মহম্মদ আলি পার্কের সামনে থইথই জল দেখে পুকুর বলে বিভ্রম হতে পারে। আমহার্স্ট স্ট্রিটেও হাঁটু-জল। সায়েন্স সিটির সামনে বাইপাস, পার্ক সার্কাস কানেক্টরেও বৃষ্টিতে গাড়ি আটকে। রাত সাড়ে ন’টাতেও যথেষ্ট যানজট ছিল ধর্মতলা, শিয়ালদহে। পুলিশ জানায়, বৃষ্টির জন্য এই অবস্থা। এ ছাড়া, এ দিন ট্রাম লাইনে জল জমে। ফলে দাঁড়িয়ে যায় ট্রামও। এ দিকে, পুজোর জন্য ইতিমধ্যেই রাস্তায় খানিকটা ব্যারিকেড দেওয়া হয়েছে, ছিল পথচারীদের যথেষ্ট ভিড়ও। এ সব কারণেও যানজট হয়। উত্‌সবের মরসুমে যান চলাচল স্বাভাবিক করতে নাকাল হয়েছে পুলিশ।

—নিজস্ব চিত্র।
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.