শনিবার রাতে প্রবল ঝড়-বৃষ্টিতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন বালুরঘাটের পুজোর উদ্যোক্তারা। রবিবারও বেলা ১২ টার দিকে ফের বৃষ্টি শুরু হয়। হাতে ৩ দিনও সময় নেই। তার মধ্যে বৃষ্টিতে যে ভাবে বিভিন্ন মণ্ডপের ক্ষতি হয়েছে তাই দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে উঠেছে তাঁদের। বৃষ্টিতে বিভিন্ন এলাকার রাস্তাঘাট ডুবে গিয়েছে। বেশ কয়েকটি ওয়ার্ডে ঘরবাড়িতেও জল ঢুকে যায়। স্থানীয় আবহাওয়া দফতর সূত্রের খবর, রাতে টানা দেড় ঘন্টা ধরে বড়-বৃষ্টি হয়েছে। প্রায় ১৫০ মিমি বৃষ্টি হয়েছে। তাতেই শহর জুড়ে মণ্ডপগুলির দফারফা। পুজো উদ্যোক্তাদের বক্তব্য, পুজোর মুখে বালুরঘাট পুর নির্বাচনের জন্য এমনিতেই ক্লাবগুলি পুজোর আয়োজনের দিকে ঠিক ভাবে নজর দিতে পারেনি। চাঁদা সংগ্রহের কাজ ঠিক মতো না হওয়ায় অনেকেই অল্প বাজেটের মধ্যে থিম পুজোর আয়োজন করেন। মণ্ডপগুলিতেও শেষ পর্যায়ের কাজ চলছিল। অথচ বৃষ্টি সব পণ্ড করে দিচ্ছে। তাতে মাথায় হাত পড়েছে বড় বাজেটের পুজো উদ্যোক্তাদেরও। |
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন শহরের ১৩, ১৪, ১৫, ১৬, ২০ ও ২১ নম্বর ওয়ার্ডে বেশকিছু এলাকায় এক হাঁটু জল জমে যায়। রাস্তা ছাপিয়ে বৃষ্টির জল বাড়ি ঘরেও ঢুকে পড়ে। পুরবোর্ড গঠন না-হওয়ায় পুরসভার তরফে সে ভাবে কিছু করা সম্ভব না হলেও স্থানীয় কাউন্সিলারের উদ্যোগে পাম্পসেট বসিয়ে জমা জল বার করা হয়। তৃণমূল কাউন্সিলার বেবী বর্মন, নীতা হাঁসদার অভিযোগ, ১৬ কোটি টাকা খরচ করে আগের পুরবোর্ড নর্দমা তৈরি করেছিল। তা দিয়ে জল গড়ায় না। নতুন পুরসভার বোর্ড গঠন হয়নি। সমস্যার কথা মহকুমাশাসককে বলা হয়েছে। এই দিন মহকুমাশাসক সুদীপ মুখোপাধ্যায় বলেন, “দমকলের ইঞ্জিন পাঠিয়ে জমা জল বার করে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া হচ্ছে।” জেলা কৃষি উপ অধিকর্তা লক্ষ্মীকান্ত মান্ডির কথায়, “বর্ষার মরসুমের নির্ধারিত সময়ে এ বছর প্রায় ৮০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত ঘাটতি রয়েছে। এখন পুজোর মুখে বৃষ্টিতে পুজোর উদ্যোক্তাদের মাথায় হাত পড়েছে।” তবে এই বৃষ্টি ধান চাষের পক্ষে সহায়ক বলে ওই আধিকারিক জানিয়েছেন। শহরের বেলতলা পার্কের নিউ টাউন ক্লাবের পুজো উদ্যোক্তা অরিজিৎ মোহান্ত বলেন, “মণ্ডপে চিড়িয়াখানার দৃশ্য ফুটিয়ে তুলতে পশু-পাখির মডেল, রঙে রেখায় পাহাড় সব কিছুর কাজ প্রায় শেষ করে আনা হয়েছিল। বৃষ্টিতে ধুয়ে সব পণ্ড হয়ে গিয়েছে। শহরের কাঁঠালপাড়া এলাকার কবিতীর্থ ক্লাব মণ্ডপে গ্রাম্য পরিবেশে ফুটিয়ে তুলেছে খড়, মাটি, বাঁশের বেড়া দিয়ে। মাটির মডেলের মাধ্যমে পরিবেশ সচেতনতার প্রচারে শেষ পর্বের কাজ চলছিল। ওই পুজো উদ্যোক্তাদের অন্যতম রাম ঘোষ হতাশার সুরে বলেন, “বৃষ্টিতে মণ্ডপ ভিজে নষ্ট হয়ে গিয়েছে। রবিবারেও বৃষ্টি হয়েছে। মণ্ডপকে আগের অবস্থায় ফেরাতে শিল্পীদের নাজেহার অবস্থা।” প্লাইউডের নকশার মণ্ডপ জলে ভিজে ফুলে বেঁকে গিয়েছে বঙ্গিবাদুরতলার বিপ্লবী সঙ্ঘের পুজোয়। অন্যান্য পুজো মণ্ডপগুলির পরিস্থিতি কমবেশি এক। |