বৃষ্টির কারণে বহু মানুষই অপেক্ষায় ছিলেন, বৃষ্টি কমলে বেরোবেন পুজোর বাজারে। কিন্তু আবহাওয়া না বদলানোয় বৃষ্টিকে উপেক্ষা করেই রাস্তায় বেরিয়ে পড়লেন কাতারে কাতারে মানুষ। পুজোর আগে শেষ রবিবার আর বাড়ি বসে থাকলেন না অনেকেই। ছাতা মাথায় দীর্ঘক্ষণ লাইনে থাকতে হলেও উৎসাহে খামতি নেই কচিকাঁচা থেকে বয়স্কদের। বাগদা থেকে বনগাঁ কাটার মোড় এলাকায় পুজোর কেনাকাটা করতে এসেছিলেন রিমঝিম বিশ্বাস। পুজোর আর সময় বাকি না থাকায় বৃষ্টির মধ্যেই এসেছেন বলে জানালেন তিনি। একই চিত্র দেখা গিয়েছে বসিরহাটেও। বসিরহাটের পুরাতন বাজার, বেলতলা মার্কেট, টাউন হল মার্কেটের মত বাজারগুলিতেও ভিড় ছিল চোখে পড়ার মত। ঘন্টার পর ঘন্টা লাইনে দাঁড়িয়ে দোকানদারদের সঙ্গে রীতিমত ঝগড়া-চেঁচামেচি করে পুজোর বাজার করেছেন সবাই।
একই ছবি দেখা গিয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ডায়মন্ড হারবার থেকে ক্যানিংয়েও। ডায়মন্ড হারবার স্টেশন রোড মার্কেট, কাকদ্বীপ বাজার থেকে শুরু করে বাসন্তীর গোসাবা, ক্যানিং বাজারে তিলধারণের জায়গা ছিল না। জিনিসপত্র থেকে জামাকাপড় সবকিছুরই দাম বেড়েছে। সেই কারণে কোনও কোনও জায়গায় বিক্রিবাটা কম হয়েছে বলে জানাচ্ছেন অনেক বিক্রেতারাই। ক্যানিংয়ের বস্ত্র বিক্রেতা অসিত বিশ্বাস বলেন, “গতবারের চেয়ে বিক্রি এবার একটু কম। জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে। বৃষ্টিও ছিল। তার উপর সারদার মত বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থায় টাকা রেখেও সর্বস্বান্ত হয়েছেন মানুষ। তার প্রভাব পড়েছে ব্যবসাতেও।”
একদিকে যেমন ভিড় করছেন কেনাকাটার জন্য, অন্যদিকে বৃষ্টির জন্য পুজো উদ্যোক্তাদের মাথায় পড়েছে হাত। বৃষ্টির জন্য মণ্ডপের শেষ সময়ের কাজ, প্রতিমা আনা ব্যহত হচ্ছে ভীষণভাবে। বনগাঁ অন্যতম বড় পুজো কমিটি ঐক্য সম্মিলনী। সেই পুজোর কর্ণধার দেবদাস মণ্ডল বলেন, “চতুর্থীতে উদ্বোধন। বৃষ্টির জন্য কিছু ঠিক করে হচ্ছে না। কি হবে, জানি না।” একই রকম ভাবে রাস্তা খারাপ থাকাতেও ক্ষোভ ঝরে পড়ছে পুজো উদ্যোক্তাদের গলায়। ক্যানিংয়ের রাজারলাটপাড়া সর্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটি, গোলকুটিপাড়া সর্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটির উদ্যোক্তাদের কথায়, রাস্তার অবস্থা এত খারাপ যে, যে কোনও সময়ে দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। তাও কোনও উদ্যোগ নেই প্রশাসনের। তবু ভাল মন্দ সব মিলিয়ে শারদোৎসবের জন্য প্রস্তুত হচ্ছেন সবাই। |