নজরুল ইসলামের থেকে বয়সে বড় ছিলেন তিনি। তবে ‘বিদ্রোহী কবি’র সঙ্গে তাঁর মিল রয়েছে এক জায়গায়। ১৯৪২ সালে নজরুলের গলা স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল। এর দু’বছর পরেই গানের জগত থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছিলেন তিনি। কোন অভিমানে এই সরে থাকা সেটা জানা যায়নি।
‘অভিমানী’ শিল্পীর আসল নাম মুন্সি মহম্মদ কাসেম। তবে মানুষ তাঁকে চেনে কে মল্লিক নামেই। বর্ধমানের কুসুমগ্রামের গরিব চাষি ঘরের এই সন্তান এক সময়ে সর্বভারতীয় সঙ্গীত জগতে ছিলেন জনপ্রিয় শিল্পী। শনিবার তাঁর ১২৫তম জন্মবর্ষ পালিত হল বর্ধমানের রাজ কলেজ অডিটোরিয়ামে। উদ্যোক্তা ছিল ‘বর্ধমান ইতিহাস সন্ধান’। উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট সংঙ্গীত গবেষক, শিল্পী ও লেখক দেবজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় ও গ্রামাফোন রেকর্ড সংগ্রাহক সুশান্তকুমার চট্টোপাধ্যায়। এ দিনের অনুষ্ঠানে কে মল্লিকের গাওয়া কিছু গান বাজিয়ে শ্রোতাদের শোনানো হয়। কে মল্লিকের গানও পরিবেশন করেন অনেকে।
মুন্সি মহম্মদ কাসেম ‘কে মল্লিক’ হয়েছিলেন কী করে? |
এই প্রশ্নের উত্তরে বর্ধমানের অন্যতম সঙ্গীতপ্রেমী শফিরুল হক জানান, পুরনো পত্রপত্রিকা অনুযায়ী শিল্পীর প্রথম রেকর্ড বার করেছিল একটি জার্মান রেকর্ড কোম্পানি। তখন ওই সংস্থার মনে হয়েছিল মুন্সি মহম্মদ কাসেম নামে রেকর্ড বের হলে মানুষ হয়তো তাঁর গান নাও শুনতে পারেন। তাই তাঁরা মুন্সি মহম্মদ কাসেমকে ‘ কে মল্লিক’ বানিয়েছিলেন।
শনিবারের অনুষ্ঠানে দেবজিৎবাবু বলেন, “নজরুল, ইন্দুবালা দেবী, পঙ্কজকুমার মল্লিকের চেয়েও বয়সে বড় ছিলেন কে মল্লিক। রবীন্দ্রনাথের সমসাময়িক এই শিল্পী গেয়ে গিয়েছেন অসংখ্য গান। ফাঁকা জায়গায় উদাত্ত কন্ঠে যন্ত্রসংগীত ছাড়াই ভাটিয়ালি, খেয়াল, রাগপ্রধান, লোক সংগীত, ভজন গাইতে পছন্দ করতেন তিনি। তাঁর অনেক গান ধরা রয়েছে গ্রামফোন রেকর্ডে।” আলোচকরা জানান, শিল্পীর আর্থিক অবস্থা ভাল ছিল না তবুও সিনেমাতে গান গাইতে অনীহা ছিল তাঁর। সুশান্তকুমার চট্টোপাধ্যায়ের কথায়, “টাকা নেই, চালচুলো নেই, বাড়ির লোকেদের উৎসাহও নেই। তবু শুধু নিজের উৎসাহেই গান গাইতেন তিনি। কোথাও বড় সঙ্গীত শিল্পী এসেছেন খবর পেলেই ছুটে যেতেন। গ্রামের মানুষ তাঁর গান শুনতে ভালবাসতেন।” কে মল্লিকের গান সংরক্ষণের অভাবে ক্রমেই হারিয়ে যাচ্ছে জানিয়ে ইতিহাস-গবেষক আবদুল সামাদ শিল্পীর সমস্ত গান একত্র করার দাবি জানান। |
সোনার হাসি
মুম্বইয়ে এক অনুষ্ঠানে সোনাক্ষী সিংহ। ছবি: পিটিআই। |
সাজঘর
বহরমপুরের একটি সৌন্দর্য প্রতিযোগিতায়। ছবি: গৌতম প্রামাণিক। |