উৎসবের মরসুমের শুরুতে রাজ্যের পাইকারি বাজারে বিভিন্ন ভোজ্য সামগ্রীর দাম কিছুটা নিম্নমুখী। কলকাতা-সহ রাজ্যের বাজারগুলিতে চাল, চিনি, গুড়, সরষের তেল, পাম তেল, বনস্পতি-সহ বেশ কয়েকটি জিনিসের দাম কমেছে। কলকাতার পোস্তা বাজার মার্চেন্টস্ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি বিশ্বনাথ অগ্রবাল বলেন, “বাজারে জোগান বেশি আসায় কয়েকটি জিনিসের দাম কমেছে। তবে কতদিন এমন থাকবে বলা মুশকিল।” দাম কমায় ব্যবসায়ীরা ক্ষতির মুখে পড়ছেন বলেও দাবি বিশ্বনাথবাবুর।
তবে রাজ্য সরকার মজুতদারি রুখছে, এবং বাজারে নিয়মিত নজরদারি চালানোয় জিনিসপত্রের দাম নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে দাবি করেছেন মুখ্যমন্ত্রীর কৃষি উপদেষ্টা তথা দাম নিয়ন্ত্রক টাস্ক ফোর্সের সদস্য প্রদীপ মজুমদার। তাঁর কথায়, “পাইকারি বাজারের দাম এবং খুচরো বাজারের দামের মধ্যে বিস্তর ফারাক থাকে। টাস্ক ফোর্সের বৈঠকে এ বিষয়ে কথা হয়েছিল। সেখানে সিদ্ধান্ত হয়েছিল কোথাও দাম বেশি হলে এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চকে জানানো হবে। তাঁরাই ব্যবস্থা নেবেন। তার জেরেই দাম নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।” কলকাতা পুলিশের ডিসি (এনফোর্সমেন্ট) রবীন্দ্রনাথ সরকার বলেন, ‘‘আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করছি, যাতে কেউ বেশি দাম নিতে না পারে।” |
ব্যবসায়ী মহলের বক্তব্য, মূলত তিনটি কারণে দাম কমেছে। প্রথমত, নভেম্বর থেকে নতুন করে চিনির উৎপাদন শুরু হবে। এরই মধ্যে ব্রাজিল-সহ কয়েকটি দেশ থেকে বেশ পরিমাণে চিনি আমদানি করা হয়েছে। পুরোনো মজুত খালি করার জন্য বাজারে জোগান বেড়েছে। তার জেরে কুইন্টাল পিছু প্রায় ২০০ টাকার বেশি দাম কমেছে চিনির। একই ভাবে বাজারে চালের আমদানি বেড়েছে। দক্ষিণ আফ্রিকা-সহ কয়েকটি দেশে যে চাল রফতানি করা হয় তা কমেছে। তার জেরে দাম কমেছে স্থানীয় বাজারে। সেই সঙ্গে বিদেশ থেকে পাম তেলের আমদানি বেড়েছে। তাতে স্থানীয় বাজারে তেলের দাম কমেছে।
দ্বিতীয়ত, বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে যে চোরাচালান হয়, সরকারি কড়াকড়ির কারণে চলতি সপ্তাহে তা বন্ধ রয়েছে। বাজারে জোগান বাড়লেও তা বাংলাদেশে না যাওয়ায় দাম কমেছে। এ ছাড়া বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা বিদেশ থেকে সরাসরি আমদানি করছেন। তাতে রাজ্যের ব্যবসাতে প্রভাবও পড়েছে। বিশ্বনাথবাবু বলেন, “কাঁচা চিনি বিদেশ থেকে আমদানি করে বাংলাদেশে রিফাইনারিতে শোধন করা হচ্ছে। তাতে রফতানি কমেছে।” তৃতীয়ত, রাজ্য সরকার দাম নিয়ে নিয়মিত চাপ দেওয়ায় ব্যবসায়ীরা বেশি দাম নিতে পারছেন না।
রানাঘাটে বড় দোকান রয়েছে বিধান সাউর। তিনি জানালেন, “চিনি, চাল, তেল, সব কিছুরই দাম কিছুটা কমেছে সপ্তাহ দুয়েক। এর কিছুটা লাভ ক্রেতাও পাবেন।” |