|
|
|
|
খাদ্য সুরক্ষার বিধি মেনে ‘স্মার্ট’ হচ্ছে রেশন কার্ড
কাজী গোলাম গউস সিদ্দিকী • কলকাতা |
রাজ্যের সাড়ে ৯ কোটি মানুষের রেশন কার্ড নতুন করে তৈরি করা হবে। এই নতুন স্মার্ট রেশন কার্ড অনেকটাই এটিএম কার্ডের মতো হবে। আগামী ২৯ অক্টোবর থেকে এই নতুন কার্ড তৈরির কাজ শুরু হবে বলে খাদ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে।
কিন্তু কেন রেশন কার্ডকে এ ভাবে স্মার্ট রেশন কার্ডে পরিণত করা হচ্ছে?
 |
খাদ্যমন্ত্রী |
খাদ্য দফতরের কর্তারা জানিয়েছেন, সম্প্রতি পাশ হওয়া খাদ্য সুরক্ষা আইনের জন্যই এই ধরনের কার্ড তৈরি করা হচ্ছে। খাদ্য দফতরের কর্তারা জানিয়েছেন, এই স্মার্ট রেশন কার্ডে বারকোড বা কম্পিউটার চিপ রাখা হবে। যার ফলে এই বৈদ্যুতিন স্মার্ট কার্ডের মাধ্যমে কোন গ্রাহক কবে কতটা খাদ্যশস্য নিয়েছেন, তা সহজেই জানা যাবে। এতে বার বার এই কার্ড ব্যবহার করে যথেচ্ছ পরিমাণ খাদ্যশস্য তোলা সম্ভব হবে না। খাদ্যশস্য নিয়ে দুর্নীতি এবং অপচয় রোখা সম্ভব হবে।
তবে নতুন এই স্মার্ট কার্ডে এপিএল-বিপিএল ভাগাভাগি থাকবে না বলে জানিয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। নতুন কার্ড তৈরি হয়ে যাওয়ার পরে সব কার্ড-ই একই রকম দেখতে হবে। কিন্তু খাদ্য সুরক্ষা আইনের শর্ত মেনে কত পরিমাণ খাদ্যশস্য তোলা যাবে, তা ওই কার্ডের বৈদ্যুতিন ব্যবস্থায় নথিভুক্ত করা থাকবে। কার্ডে থাকা তথ্য অনুযায়ীই সবাই তাঁদের প্রাপ্য সুবিধা পাবেন। খাদ্য সুরক্ষা আইন পুরোদস্তুর কার্যকর হয়ে গেলে এই কার্ডই গণবণ্টন ব্যবস্থা চালু রাখার জন্য প্রয়োজনীয় হয়ে উঠবে। তামিলনাড়ু, অন্ধ্রে এই ধরনের কার্ড আগেই হয়ে গিয়েছে বলে জানান খাদ্য দফতরের এক কর্তা।
খাদ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, কত কার্ড তৈরি হবে এবং তার খরচ কত পড়বে তা বোঝার জন্য এখনকার এপিএল ও বিপিএলের পরিসংখ্যানের উপর নির্ভর করতে হচ্ছে। খাদ্য দফতরের কর্তারা জানিয়েছেন, এ ধরনের একটি কার্ড তৈরি করতে খরচ পড়বে ১৭ টাকা। এই পরিসংখ্যান অনুযায়ী এখন যাঁরা বিপিএল তালিকাভুক্ত, তাঁরা এই কার্ড বিনামূল্যে পাবেন। এই খাতে প্রায় ৫১ কোটি টাকা খরচ হবে। খাদ্যমন্ত্রী বলেন, “দারিদ্রসীমার নীচে থাকা মানুষদের নতুন কার্ড দিলেও তার জন্য দাম নেওয়া সম্ভব নয়। বিপিএল গ্রাহকের জন্য ওই কার্ড তৈরির প্রয়োজনীয় অর্থ সংস্থানের কথাও রাজ্য সরকারকে ভাবতে হচ্ছে।” খাদ্য দফতরের এক কর্তা জানান, রাজ্য চায়, কেন্দ্রই ওই খরচ দিক।
এখন যে সব মানুষের কাছে এপিএল (দারিদ্রসীমার উপরে থাকা) কার্ড রয়েছে, তাঁরা অবশ্য ওই কার্ড বিনামূল্যে পাবেন না। খাদ্য দফতর সূত্রের খবর, এই সব গ্রাহকদের থেকে ১১ টাকা করে নেওয়া হবে। বাকি ৬ টাকা ভর্তুকি দেবে রাজ্য সরকার। খাদ্য দফতর সূত্রের খবর, এ ধরনের সাড়ে ৬ কোটি কার্ড তৈরি হবে এবং সে জন্য রাজ্য সরকারের ৩৯ কোটি খরচ হবে।
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, “এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় অনুমোদন চেয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে ফাইল পাঠানো হয়েছে। তাঁর অনুমোদন পেলেই খাদ্য দফতর কার্ড তৈরির কাজ শুরু করবে।” খাদ্য দফতরের অফিসারেরা জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রীর অনুমোদন মিললে আগামী অক্টোবরের ২৯ তারিখ থেকে নতুন কার্ড তৈরির কাজ শুরু হবে। এই কার্ড তৈরির ভার দেওয়া হচ্ছে সরকারি সংস্থা ন্যাশনাল ইনফরমেটিক সেন্টার (এনআইসি)-কে। সরকারের কাছে যে তথ্য রয়েছে, তা দিয়েই এই কার্ড তৈরি করে দেওয়া হবে। এর জন্য গ্রাহকদের আলাদা কোনও ফর্ম ভরার দরকার হবে না বলে খাদ্য দফতরের কর্তারা জানিয়েছেন। খাদ্য দফতর সূত্রের খবর, নতুন কার্ড তৈরির কাজ শেষ হলে কবে, কোথায় গেলে গ্রাহকরা নতুন রেশন কার্ড পাবেন, তা বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হবে। এখনকার রেশন কার্ড জমা দিয়ে গ্রাহকদের নতুন রেশন কার্ড সংগ্রহ করতে হবে। |
|
|
 |
|
|