পুরুলিয়ার থানাগুলি নাজেহাল
সারদার টাকা দ্রুত ফেরানোর নির্দেশ
র্থলগ্নি সংস্থা ‘সারদা’-য় প্রতারিত লগ্নিকারীদের অর্থ ফেরত দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হল পুরুলিয়ায়। আর এই কাজ করতে কার্যত নাজেহাল অবস্থা জেলা পুলিশের। কারণ, টাকা ফেরত দেওয়ার আগে নথিপত্র যাচাইয়ের কাজের দায়িত্ব পড়েছে পুলিশেরই উপরে। পাঁচ দিনের মধ্যে প্রায় সারদার আড়াই হাজার লগ্নিকারীর সঙ্গে যোগাযোগ করে নথি পরীক্ষার কাজ কী ভাবে সম্পন্ন করা যাবে, তা ভেবেই ঘাম ছুটছে পুলিশকর্তা ও কর্মীদের। তবে, মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতোর দাবী পুজোর আগে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই প্রতারিত লগ্নিকারীদের হাতে টাকা তুলে দেওয়াতে সমস্যা হবে না।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সারদায় সর্বোচ্চ দশ হাজার টাকা লগ্নি করে প্রতারিত হয়েছেন, এই ধরনের লগ্নিকারীদের টাকা ফেরত দেওয়ার নির্দেশ গত মাসের শেষ দিকে রাজ্য অর্থ দফতর থেকে পাঠানো হয়েছিল জেলা প্রশাসনের কাছে। সর্বোচ্চ দশ হাজার টাকা লগ্নিকারী যে সমস্ত ব্যক্তি শ্যামল সেন কমিশনের কাছে অভিযোগ জমা করেছিলেন, তাঁদেরই নামের তালিকা জেলায় পাঠানো হয়েছে। পুরুলিয়ায় এমন মোট ২৪৫৫ জন আমানতকারীকে ১ কোটি ৬ লক্ষ টাকা ফেরত দেওয়া হবে। ৭ অক্টোবর জেলার ১৬টি থানায় লগ্নিকারীদের হতে চেক দেওয়া হবে। বলরামপুর, ঝালদা, রঘুনাথপুর এবং পুরুলিয়া সদর ও মফস্সল থানায় জায়গার সমস্যা থাকায় ওই এলাকার আমানতকারীদের চেক দেওয়া হবে ব্লক অফিস থেকে। আপাতত স্থির হয়েছে পুরুলিয়া ১ ব্লকে শান্তিরাম মাহাতো আনুষ্ঠানিকভাবে চেক বিলির কর্মসূচি শুরু করবেন।
প্রশাসন সূত্রের খবর, শ্যামল সেন কমিশনের কাছে আবেদন করা আমানতাকারীদের নামের তালিকা পাঠানো হয়েছিল জেলাশাসকের কার্যালয়ে। পরে তা পাঠিয়ে দেওয়া হয় সংশ্লিষ্ট ব্লক কার্যালয়গুলিতে। সেখান থেকে তালিকা যায় থানায়। নামের তালিকা অনুযায়ী ওই সমস্ত লগ্নিকারীর প্রয়োজনীয় নথি যাচাই করার দায়িত্ব বর্তেছে পুলিশের উপরে। জেলা পুলিশেরই একাংশের প্রশ্ন, এই বিশাল সংখ্যক আমানতাকারীদের সঙ্গে এত কম সময়ের (পাঁচ দিন) মধ্যে কী ভাবে যোগাযোগ করে সমস্ত নথিপত্র খতিয়ে দেখা সম্ভব? বিশেষ করে যেখানে নির্দেশ রয়েছে, প্রয়োজনে আমানতকারীর বাড়িতে গিয়ে টাকা ফেরত দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।
কী ধরনের নথি যাচাই করতে হবে পুলিশকে?
সূত্রের খবর, পুলিশ দেখবে আমানতকারীদের সচিত্র পরিচয়পত্র, কমিশনের কাছে আভিযোগপত্রর ফোটোকপি, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বর এবং সারদায় লগ্নিকরা অর্থের নথি। জেলা পুলিশের একাধিক কর্তার কথায়, “সামনেই পুজো। এমনিতেই এই সময়ে সুষ্ঠুভাবে পুজো সম্পন্ন করা-সহ অন্য অনেক চাপ থাকে পুলিশের উপরে।” ফলে, সেই চাপ সামলে সারদার লগ্নিকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাঁদের নথিপত্র খতিয়ে দেখার কাজ করতে হিমশিম খাচ্ছে থানাগুলি। মঙ্গলবার পুলিশ সুপারের মাসিক বৈঠকে ওই বিষয়ে আলোচনাও হয়। জেলার পদস্থ এক পুলিশকর্তা বলেন, “মঙ্গলবারই পুলিশ সুপার বলে দিয়েছেন, রাজ্য সরকার পুলিশের উপরে এই কাজের যে দায়িত্ব দিয়েছে, তা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করতেই হবে”
মঙ্গলবারই বিভিন্ন ব্লক অফিস থেকে লগ্নিকারীদের নামের তালিকা পাঠানো হয়েছে থানায়। প্রশাসনের দাবি, ইতিমধ্যেই পঞ্চায়েত স্তরে ওই বিষয়ে প্রচার করা হয়েছে। বিজ্ঞপ্তি টাঙানো হয়েছে ব্লক ও গ্রাম পঞ্চায়েতে। ফলে, পুলিশকে বিশেষ সমস্যায় পড়তে হবে না। গ্রামীণ পুলিশকর্মী (ভিলেজ পুলিশ) এবং থানার কর্মীদের লগ্নিকারীদের নাম ঠিকানা দিয়ে এলাকায় পাঠিয়ে তাঁদেরকে থানায় নিয়ে আসার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। থানার এক অফিসারের উপরে আমানতকারীর নথি যাচাইয়ের দায়িত্ব বর্তেছে। বুধবার থেকে জেলার প্রায় সব থানাতেই ওই কাজ শুরু হয়েছে। কিন্তু, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ সম্পন্ন হবে কি না, তা নিয়ে সন্দিহান থানার অফিসারেরাই।
মন্ত্রী শান্তিরামবাবুর অবশ্য দাবি, সমস্যা হবে না। তিনি বলেন, “আমরা চাইছি পুজোর আগে নির্দিষ্ট দিনেই প্রতারিত লগ্নিকারীদের হাতে টাকা তুলে দিতে। এ বিষয়ে প্রশাসন ও পুলিশকে নির্দিষ্ট নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অফিসার ও কর্মীরা যথেষ্ট দ্রুততার সঙ্গে সেই কাজ করছেন।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.