কংগ্রেসি পুজোয় সোমেন, লেবুতলা চায় মমতাকে
লোকসভা ভোটের আগে রকমারি জল্পনা এখন ভাসছে হাওয়ায়। এ বার পুজোর বাজারও সেই জল্পনায় নতুন বাতাস দিতে চলেছে!
রাজ্য রাজনীতিতে কংগ্রেস-তৃণমূলের স্নায়ুযুদ্ধই এখন চর্চার প্রধান বিষয়। পুজো উদ্বোধনের খেলাতেও তার আঁচ দেখছেন দুই শিবিরের অনেকে। পুজো আয়োজনের সঙ্গে এমনিতে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে কংগ্রেস ও তৃণমূল নেতারা। কার পুজোয় কে ডাক পেলেন, তা-ও থাকে নজরবন্দি! এবং সেখানেই এ বার রাজনৈতিক তাৎপর্যের গন্ধ পাচ্ছে দু’পক্ষ!
মধ্য কলকাতায় এক কংগ্রেস নেতার পুজোর উদ্বোধন করার আমন্ত্রণ স্বীকার করেছেন তৃণমূলের বিক্ষুব্ধ সাংসদ সোমেন মিত্র। আবার মধ্য কলকাতারই কংগ্রেস নেতা প্রদীপ ঘোষ চান, তাঁর পুজো দেখতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যদি এক বার আসেন! সোমেনবাবুর ভবিষ্যৎ পদক্ষেপ নিয়ে যেমন জল্পনা চলছে, তেমনই হচ্ছে প্রদীপবাবুকে নিয়েও। দুই শিবিরের কেউ কেউ বলছেন, সোমেনবাবুকে রুখতে তাঁর খাস তালুক মধ্য কলকাতায় প্রদীপবাবুকেই হাতিয়ার করতে পারেন মমতা। মূলত মধ্য কলকাতার পুজো ঘিরেই কংগ্রেস ও তৃণমূলের অন্দরে চর্চা চলছে!
পুজো ও ঈদ সুষ্ঠু ভাবে সম্পন্ন করার ব্যাপারে গত সপ্তাহে নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে বিভিন্ন উৎসব কমিটির কর্মকর্তাদের নিয়ে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। সন্তোষ মিত্র স্কোয়ারের (লেবুতলা) পুজোর উদ্যোক্তা, কংগ্রেস নেতা প্রদীপবাবুও ছিলেন। মমতা তাঁকে খাতির করে মঞ্চে ডেকে নেন। মুখ্যমন্ত্রীর সৌজন্যে মুগ্ধ প্রদীপবাবু। তিনি জানান, বাংলাকে বঞ্চিত করে রেলমন্ত্রী নীতীশ কুমার রেলের ডিভিশন ভাগ করেছিলেন। প্রতিবাদ জানিয়ে রেল বিভাজন নিয়ে সে বার সন্তোষ মিত্র স্কোয়ারের মণ্ডপ হয়েছিল। সে দিনের বিরোধী নেত্রী মমতা পুজোর উদ্ধোধন করেছিলেন। প্রদীপবাবু বলেন, “এ বার মুখ্যমন্ত্রী আমার পুজোয় এলে খুব খুশি হব!”
প্রদীপবাবুকে মুখ্যমন্ত্রী খাতির করেছেন শুনে অস্বস্তি বেড়েছে বিধান ভবনে! প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্বের অনেককেই বিষয়টি ভাবিয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে সোমেনবাবুর কলকাতার বাড়িতে রবিবার সন্ধ্যায় হাজির হন প্রদেশ কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক অমিতাভ চক্রবর্তী ও বড়বাজার জেলা কংগ্রেস সভাপতি সন্তোষ পাঠক। মেডিক্যাল কলেজের বিপরীতে ‘মধ্য কলকাতা উত্তরণ’-এর পুজোর প্রধান উদ্যোক্তা অমিতাভ সোমেনবাবুর কাছে যান তাঁদের পুজো উদ্বোধনের আমন্ত্রণ নিয়েই। বড়বাজারের সত্যনারায়ণ পার্কের উদ্যোক্তা সন্তোষ ও যুব কংগ্রেস নেতা মহেশ শর্মা। দু’টি পুজোর উদ্বোধনেই তিনি যাবেন বলে সোমেনবাবু সম্মতিও দিয়েছেন।
মঙ্গলবার অমিতাভদের পুজোর উদ্বোধন করবেন সোমেনবাবু। তৃণমূল সাংসদের বক্তব্য, “এর মধ্যে রাজনীতি নেই। ৮-১০টি পুজোর উদ্বোধনের আমন্ত্রণ পেয়েছি। সব ক’টাতেই যাব।” অমিতাভও বলেন, “সোমেনদা এই এলাকার মানুষ। ওঁকে নিজেদের লোক বলেই মনে করি। এর মধ্যে রাজনীতি খোঁজা উচিত নয়।” পরের দিন সন্তোষের পুজো উদ্ধোধন করার কথা সোমেনবাবুর। ডায়মন্ড হারবারের সাংসদের সঙ্গে তৃণমূলের নেতৃত্বের এখন যা দূরত্ব, সেই প্রেক্ষিতেই তাঁকে পুজো উদ্বোধনে আমন্ত্রণ জানানোর ঘটনাকে তাৎপর্যপূর্ণ বলে ধরছেন কংগ্রেস ও তৃণমূল নেতাদের একাংশ।
আবার যাঁকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের সঙ্গে সোমেনবাবুর সম্পর্কে ফাটল ধরতে চলেছে, সেই কুণাল ঘোষের পুজো উদ্বোধন করার কথা ছিল মুকুল রায়ের। উত্তর কলকাতার ‘রামমোহন সম্মিলনী’র পুজোর প্রধান উদ্যোক্তা কুণাল। মমতা ২০১১-এ সেই পুজোর উদ্বোধন করেন। এখন ছবিটা বদলেছে। এ বার কোনও তৃণমূল নেতা নেই। কুণাল বলে, “আমি সাসপেন্ড হয়েছি। দলের কাউকে বিব্রত করতে চাই না বলেই এক জন সাহিত্যিককে দিয়ে উদ্বোধন হবে।” কংগ্রেসের নেতা বা মন্ত্রীকে দিয়ে উদ্বোধন করানো যেত না কি? কুণালের মন্তব্য, “ভুল বার্তা যেতে পারে! তাই রাজনীতির বাইরে উদ্বোধনকে রাখা হয়েছে।”
তবে তিনি যে দলের প্রতি এখনও ‘দায়বদ্ধ’, তা জানান দিতে এ বারও কুণালের পুজোয় থাকবে তৃণমূলের মুখপত্রের স্টল। বাম আমলে রামমোহন রায় রোডে যে স্টল করা নিয়ে এক বার হ্যাপা পোহাতে হয়েছিল কুণালকে!
কংগ্রেস-তৃণমূলের পুজোর থিমই এ বার টানাপোড়েন!
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.