পুজো মানেই সারা বছরের পুরনো, মলিনকে আবছা করে দিয়ে নতুন শুরু। নিজেকে নতুন করে দেখা।
আর নিজেকে নতুন করে সাজানো মানে তো শুধু জামাকাপড় আর গয়নাগাটি নয়। বরং চোখ ,মুখ, চুল, হাত-পা সবটাকেই সুন্দর করে তোলা। কিশোরী থেকে মাঝবয়সী, তরুণী থেকে প্রৌঢ়া সবাই তাই ছুট লাগিয়েছেন শহরের বিভিন্ন পার্লারে। আর সকাল থেকে রাত পর্যন্ত কাজ করেও সামাল দিতে পারছেন না পার্লারের কর্মীরা।
চলছে প্রস্তুতি।
নিজস্ব চিত্র।
|
তবে এই ছবি কিন্তু প্রতিবারেরই। পুজোর কাউন্টডাউন শুরু হতে না হতেই অ্যাপয়েন্টমেন্ট চেয়ে বিউটি পার্লারের ফোন ঘন ঘন বাজতে থাকে। আর পঞ্চমী, ষষ্ঠীতে তো পার্লারে জায়গা পাওয়াই দায়। কারও ফেসিয়াল, কারও চুল কাটা, কারও পেডিকিওর, কারও স্পা নাওয়া খাওয়ার ফুরসত পান না কর্মীরা। বর্ধমানের টিকরহাটের এক পার্লারের মালিক ইন্দ্রাণী আইচ জানান, চুলের ক্ষেত্রে স্টেপস ও লেয়ার কাট বহু দিন থেকেই সব বয়সের মহিলাদের প্রথম পছন্দ। তবে তরুণ প্রজন্মের চাহিদা হাইলাইটিং। চুলের রঙে ব্লন্ড, ওয়ান্ডার ব্রাউন ও মোকোর মতই জনপ্রিয় এই হাইলাইটিং। ইন্দ্রাণীদেবী আরও জানান, ফেসিয়ালে অ্যন্টি ট্যানিং ও ইন্সট্যান্ট গ্লো রমরমিয়ে চলছে। নেলপালিশে হিট নিয়ন ব্লু, ফ্লুরোসেন্ট গ্রিন ও শকিং রেড। তিনি জানান, এ বছর শহরের বাইরে গ্রাম থেকেও নানা চাহিদা নিয়ে আসছেন অনেকে। বর্ধমানের ১ নম্বর পাঁকমারা লেনের একটি পার্লারের পরিচালিকা কবিতা ঠক্কর বলেন, “মেয়েরা এ বার সরাসরি পার্টি বা অনুষ্ঠানে যোগ দেবার আগে ইন্সট্যান্ট গ্লো করিয়ে নিতে চাইছেন। বিশেষ করে ক্যাটরিনা কাইফের লেয়ারকাট হেয়ার স্টাইল দারুন জনপ্রিয়।”
বড়বাজার মসজিদের পাশের আরেক পার্লারের কর্ণধার রাবিয়া নঈম বলেন, “অনেকেই রিভার্স কাট বা ভেসেল ইন্সট্যান্ট কাট করাতে চাইছেন। হাইলাইটিংয়ের দিকেও ঝোঁক রয়েছে কমবয়সীদের। টিভি সিরিয়ালের দৌলতে নিত্যনতুন স্টাইলের চাহিদা বাড়ছে।”
পার্লারে হাজির আঁকরবাগানের মৌসুমি দাসের কথায়, “সাজতে খুবই ভালবাসি। বাড়ির লোকেরাও খুশি হন আমায় সেজেগুজে দেখলে। এ বছর চুল কাটিয়েছি। ফেসিয়ালও করাব।” টাউইনহলের বাসিন্দা চন্দ্রানী পাল আবার বলেন, “মা-মাসিদের যুগে যৌথ পরিবারে সাজিয়ে দেওয়ার জন্য কাকিমা-জেঠিমারা থাকতেন। এখন তো সে সুযোগ নেই। তাই ভরসা বিউটি পার্লার। আর পার্লারে সাজার পরে নিজেকেও দেখতে ভাল লাগে। তাই ছুটে যাই চুলের স্টেপস, মুখের অ্যান্টি ট্যানিং করাতে।” |