দুই লাগোয়া জেলায় জেলা পরিষদের স্থায়ী সমিতি গঠন প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হল মঙ্গলবার। সোসালিস্ট পার্টি ও সিপিআইয়ের সদস্যদের সমর্থনে মালদহ জেলা পরিষদের ৯টি স্থায়ী সমিতি দখল করল কংগ্রেস। উত্তর দিনাজপুর জেলা পরিষদের ১০টি স্থায়ী সমিতিই অবশ্য বামেরা দখলে রাখল। পঞ্চায়েত বিধি অনুযায়ী, উত্তর দিনাজপুর জেলা পরিষদের স্থায়ী সমিতিতে কংগ্রেস ও তৃণমূলের নির্বাচিত সদস্যদের মধ্যে থেকে ৫ জন করে সাধারণ সদস্য হতে পারবেন। কংগ্রেস ও তৃণমূলের তরফে সেই মতো প্রশাসনের কাছে নামও পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
তবে শরিক দলের দুজন কংগ্রেসকে সমর্থন করায় গোল বেঁধেছে মালদহে। কারণ, সেখানে বামফ্রন্টের তরফে নির্বাচিত জেলা পরিষদের সদস্যদের স্থায়ী সমিতির ভোটে অংশ না নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।নিবার্চনে সোসালিস্ট পার্টির জেলা সম্পাদক মিলন দাস ও সিপিআইয়ের কাঞ্চনবালা সিংহ হাজির হয়ে ভোটাভুটিতে অংশ নেন। সিপিএমের মালদহ জেলা সম্পাদক অম্বর মিত্র বলেন, “জেলা বামফ্রন্টে সমস্ত শরিক দলের জেলা নেতৃত্ব একসঙ্গে বসে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল স্থায়ী সমিতির নিবার্চনে কেউ হাজির হবে না। তার পরেও কেন দুই শরিক স্থায়ী সমিতির নিবার্চনে কংগ্রেসের সঙ্গে হাত মেলাল তা তাদের কাছে জানতে হবে।”
তবে সিপিআইয়ের জেলা সম্পাদক তরুণ দাস বলেন, “দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে আজকে স্থায়ী সমিতি নিবার্চনে আমাদের যে সদস্যা হাজির হয়েছিলেন, তাঁর বিরুদ্ধে দল ব্যবস্থা নেবে।” আরএসপির জেলা সম্পাদক গৌতম গুপ্ত অবস্য ভোটাভুটিতে অংশ নেওয়াকে কার্যত সমর্থন করেছেন। তিনি বলেন, “মালদহ জেলা পরিষদে আমরা তো ঘুরপথে কংগ্রেসকেই সমর্থন করছিলাম। ঘোমটার আড়াল থেকে সমর্থন না করে কেউ যদি সরাসরি কংগ্রেসকে সমর্থন করে থাকে, আমি মনে করি ভালই করেছে।”
তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি তথা রাজ্যের নারী উন্নয়ন ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্র জানান, তাঁদের ৭ জন সদস্য ভোটাভুটিতে অংশ নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। তাঁর কটাক্ষ, “আমরা লড়াই করেছি। ভোটাভুটির কংগ্রেস বামেদের সমর্থনে স্থায়ী সমিতিগুলি দখল করেছে। মালদহের মানুষ জানাল কংগ্রেসের প্রকৃত বন্ধু কারা?”
যদিও মালদহ জেলা কংগ্রেস সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী আবু হাসেম খান চৌধুরী দাবি করেন, “তৃণমূল কংগ্রেসের কোনও অধিকার নেই অন্য দলের সম্পর্কে কথা বলার। পঞ্চায়েত নিবার্চনের আগে থেকে তৃণমূল কংগ্রেস বলছিল, মালদহ জেলা পরিষদ কংগ্রেস দখল করতে পারবে না। জেলা পরিষদ কংগ্রেসের হাতে তুলে দিয়ে মালদহের মানুষ তৃণমূল কংগ্রেসকে যোগ্য জবাব দিয়েছে।”
এদিকে, উত্তর দিনাজপুর জেলা কংগ্রেস সভাপতি তথা রায়গঞ্জের বিধায়ক মোহিত সেনগুপ্ত জানান, উন্নয়নের স্বার্থে স্থায়ী সমিতিতে কারা সাধারণ সদস্য হিসেবে থাকবেন, সেই ৫ জনের নাম লিখিতভাবে জেলা প্রশাসনকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। তৃণমূলের উত্তর দিনাজপুর জেলা সভাপতি তথা ইটাহারের বিধায়ক অমল আচার্য জানান, নীতিগত কারণে জেলা পরিষদের তৃণমূল সদস্যরা কর্মাধ্যক্ষ নির্বাচনে অংশ নেননি। তিনি বলেন, “জেলার উন্নয়নের স্বার্থে বৃহস্পতিবার দলের ৫ জন সদস্য স্থায়ী সমিতিতে যোগ দেবেন। তবে উন্নয়নের কাজে বামফ্রন্ট পরিচালিত জেলা পরিষদ কোনও অনিয়ম করলে আন্দোলনে নামা হবে।” |