অরুণাভ পাত্র লিখেছেন: ‘জুবিন মেটা যদি ইজরায়েলের শাসক শ্রেণির প্রতিভূ হন, তা হলে আইনস্টাইনকেও হিরোসিমা-নাগাসাকির জন্য দোষী সাব্যস্ত করতে হবে।’ (‘জুবিন মেটার ডাকে কাশ্মীর সাড়া দেবে’, ১২-৯) জুবিন মেটা ইজরায়েলের শাসক শ্রেণির প্রতিভূ কি না জানি না। কিন্তু আইনস্টাইন যে পরমাণু বিস্ফোরণের জন্য বেশ কিছুটা দায়ী, তাতে কোনও সন্দেহ থাকার কথা নয়।
১৯৩৯ সালে জার্মানি থেকে আমেরিকায় পালিয়ে আসা অ্যালবার্ট আইনস্টাইনের সতীর্থ দু’জন বিজ্ঞানী লিয়ো মিলার্ড ও ইউজেন ওয়াইগনার জানতে পারেন, জার্মান বিজ্ঞানীরা পরমাণু বিভাজন করতে পেরেছেন। তাঁদের অনুরোধে আইনস্টাইন প্রেসিডেন্ট রুজভেল্টকে লেখা একটি চিঠিতে জানান, নাত্সিরা যে পরমাণু বোমা তৈরি করার চেষ্টা করতে পারে, তার যথেষ্ট সম্ভাবনা আছে। পরমাণু-পদার্থবিদ্যায় তৎকালীন অগ্রগতি সম্বন্ধে তাঁর নিজের খুবই সামান্য ধারণা থাকলেও মিলার্ড ও ওয়াইগনারের কাছে সব কিছু জেনে তিনি চিঠিখানি লিখতে রাজি হন। অনেকটা সেই চিঠির ভিত্তিতে রুজভেল্ট ‘ম্যানহাটন প্রোজক্ট’ গড়ার আদেশ দেন এবং শেষ পর্যন্ত
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রথম পরমাণু অস্ত্র তৈরি করে।
এখানে অবশ্যই এ কথা বলে রাখা দরকার যে, পরে হিরোসিমা ও নাগাসাকিতে পরমাণু বোমা বিস্ফোরণে আইনস্টাইন গভীর দুঃখপ্রকাশ করেন। যুদ্ধের পরে আমেরিকায় পরিদর্শী জাপানি পদার্থবিদ হিদেকি ইউকাওয়ার কাছে ব্যক্তিগত ভাবে অশ্রুসিক্ত নয়নে তিনি ক্ষমা প্রার্থনা করেন। অন্য এক সময়ে তিনি বলেন, ‘জার্মানরা অ্যাটম বোমা তৈরির ব্যাপারে সফল হতে পারবে না জানলে আমি পরমাণু বোমার ব্যাপারে কোনও কিছুই করতাম না।’ মনোজ ঘোষ। কলকাতা-৬১ |