এ বার পুজোয় মুম্বই মাতাবে বাঁকুড়ার ঘোড়া। এ ঘোড়া অবশ্য ছোটে না। খড়ের এই ঘোড়ার নান্দনিক সৌন্দর্য দেখতে মণ্ডপে ছুটবে মুম্বই।
ঘোড়া যদিও খড়ের, তবু রঙে ঢঙে দেখতে হুবহু খ্যাতনামা পোড়ামাটির ঘোড়া।
বাড়তি হিসেবে এই মণ্ডবে দেখা মিলবে রামকিঙ্কর বেইজের অসাধারণ সব ভাষ্কর্য ও যামিনী রায়ের চিত্রকলা। সে সবও খড়ের। তৈরি করছেন বাঁকুড়ার বড়জোড়ার মালিয়াড়া গ্রামের শিল্পী সমরেন্দ্র মিশ্র। নবি মুম্বই বেঙ্গলি অ্যাসোসিয়েশনের পুজোর মণ্ডপ সেজে উঠতে চলেছে এই বর্ষিয়ান হস্তশিল্পীর শিল্পকলায়। দেবীপক্ষের সূচনার আগেই তিনি পাড়ি দিয়েছেন দেশের বাণিজ্য নগরীতে। |
সমরেন্দ্রবাবুর খ্যাতি শুধু বাঁকুড়া জেলাতেই সীমাবদ্ধ নয়। দক্ষিণবঙ্গের সঙ্গে পড়শি রাজ্যেও তাঁর শিল্পের কদর রয়েছে। অল্প বয়স থেকেই পাথর খোদাই করে বিভিন্ন দেবদেবীর মূর্তি তৈরি করছেন তিনি। রাজ্য হস্তশিল্প প্রতিযোগিতায় একাধিকবার প্রথম হয়েছেন। পরবর্তী কালে খড়ের কাজে হাত দেন। শিল্পীর কথায়, “সরকারি চাকরি পেয়েও কাজে বাধা হওয়ায় তা ছেড়ে দিয়েছি।” তাঁর খড়ের শিল্পকলা দেখে অভিভূত হয়ে ‘‘লালপাহাড়ির দ্যাশে যা’’ - খ্যাত গীতিকার অরুণ কুমার চক্রবর্তী লিখেছিলেন, ‘‘খড়ের বুকে লুকিয়ে ছিল অধরা যে লাবণ্য। তারই হাসি ফুটিয়ে দিয়ে শিল্পী সামু ধন্য’’।
নিজের এই শিল্পকলাকে নতুন করে ফের একবার জাতীয় স্তরে তুলে ধরার সুযোগ করে দিয়েছেন সমরেন্দ্রবাবুরই ছাত্র তথা নবি মুম্বই বেঙ্গলি অ্যাসোসিয়েশনের অন্যতম সদস্য মনোহর চন্দ। মুম্বই থেকে টেলিফোনে মনোহরবাবু বলেন, “কয়েক বছর ধরেই মাস্টারমশাইকে মুম্বইয়ে নিয়ে আসার কথা ভাবছিলাম। এ বছর তা সম্ভব হয়েছে। তিনি এখানে মণ্ডপের কাজে হাত দেওয়ার পর থেকেই দর্শকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে শুরু করেছেন।” পুজো কমিটির সভাপতি সুকান্ত নাথ বলেন, “সমরেন্দ্রবাবুর কাজের নমুনা দেখেই আমরা তাঁকে মুম্বইয়ে আনতে আগ্রহ দেখাই। বাঁকুড়ার নিজস্ব শিল্পকলাকেই সমরেন্দ্রবাবু খড়ের মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলছেন। ওই জেলা চারু ও কারু শিল্পের খনি। যা আমাদের দেশের গর্বের বিষয়। আমরা চাই তামাম মুম্বই বাঁকুড়ার শিল্পকলাকে চিনুক।” লালমাটির ওই জেলার হস্তশিল্পীর শিল্পকলায় তাঁদের মণ্ডপ সাধারণ মানুষের মন জয় করবে বলে সুকান্তবাবু নিশ্চিত।
নবি মুম্বইয়ের সেক্টর- ১ এর নেতাজি সুভাষ ক্রীড়াঙ্গনে পুজো মণ্ডপের কাজ শেষ করতে এখন তুমুল ব্যস্ত সমরেন্দ্রবাবু। কাজের ফাঁকেই টেলিফোনে তিনি বললেন, “আগে দেশের বিভিন্ন জায়গায় কাজ করেছি। কিন্তু মুম্বইয়ে কাজ করার অভিজ্ঞতা একেবারেই আলাদা। এখানকার মানুষজন বেশ শিল্পরসিক। তাঁদের কাছে আমার সেরা কাজটাই তুলে ধরতে পারব বলে আমি আশাবাদী।”
|
ব্যালট পেপার লুঠের নালিশ
নিজস্ব সংবাদদাতা • সোনামুখী |
গ্রন্থাগার পরিচালন সমিতির নির্বাচনে গণনার সময় ব্যালট পেপার ছিনতাইয়ের অভিযোগ উঠল সোনামুখী টাউন লাইব্রেরিতে। রবিবার বিকেলের ঘটনা। সিপিএমের বাঁকুড়া জেলা সম্পাদক অমিয় পাত্রের দাবি, “ওই গ্রন্থাগারে সিপিএম সমর্থিত ৮ প্রার্থীই গণনায় এগিয়ে ছিলেন। হঠাৎ সোনামুখীর তৃণমূল বিধায়ক দীপালি সাহার নেতৃত্বে জনা ১৫ দলীয় কর্মী গণনাকেন্দ্রে ঢুকে ব্যালট পেপার ছিনতাই করে পালান। পুলিশ ও জেলা গ্রন্থাগার আধিকারিকের কাছে আমরা অভিযোগ করেছি।” যদিও পুলিশ জানিয়েছে, নির্দিষ্ট কোনও অভিযোগ পাওয়া যায়নি।দীপালিদেবীর পাল্টা দাবি, “আমি অন্যত্র একটি স্কুলের নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম। আমাকে মিথ্যা অভিযোগে জড়ানো হচ্ছে।” বাঁকুড়ার জেলা গ্রন্থাগার আধিকারিক তপন বর্মন বলেন, “দ্বিতীয় রাউন্ডের গণনার সময় ব্যালট পেপার ছিনতাই হয়েছে। প্রিসাইডিং অফিসারকে তখনই গণনা স্থগিত রাখতে বলা হয়েছে। টেলিফোনে পুলিশকে জানিয়েছি।” তিনি জানান, আজ সোমবার পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ জানাবেন। |