মাসে ১০ টাকাও দিতে নারাজ কর্মীরা। ফলে বর্ধমান শহরের উপকণ্ঠে পূর্ত ভবনে অরক্ষিত হয়ে পড়ে দু’টি সাইকেল ও মোটরবাইক স্ট্যান্ড। অভিযোগ, পাহারাদার না থাকায় ওই স্ট্যান্ড দু’টি থেকে প্রায়ই সাইকেল ও মোটরবাইক চুরি হচ্ছে। তবু একাংশ কর্মীদের অনীহায় সেখানে ঠিকাদার নিয়োগ করতে পারেনি পূর্ত দফতর।
২০০৬ সাল পর্যন্ত ওই স্ট্যান্ডে পূর্ত দফতর নিযুক্ত ঠিকেদার ছিলেন। পূর্ত ভবনেরই এক কর্মীর স্বামী তিনি। কিন্তু সরকারি কর্মচারীদের থেকে সাইকেল বা মোটরসাইকেল রাখা বাবাদ টাকা আদায় করতে না পেরে কাউকে না জানিয়েই পূর্ত ভবন ছাড়েন তিনি। ২০০৬ সালের অগস্টে পূর্ত ভবনের দায়িত্বে থাকা নির্বাহী বাস্তুকারের দেওয়া নোটিসে এমনটাই জানানো হয়েছে। সঙ্গে ঠিকেদার নিয়োগ না হওয়ায় সাইকেল ও মোটরবাইক আরোহীদের নিজ দায়িত্বেই সেগুলি রাখতেও বলা হয়েছে ওই নোটিসে। কিন্তু এই সিদ্ধান্তে মুশকিলে পড়েছেন প্রতি দিন পূর্ত ভবনে অবস্থিত ৫০টিরও বেশি সরকারি দফতরে নানা কাজে আসা জেলা ও ভিন জেলার মানুষেরা। তাঁদের অনেকেরই দাবি, অবিলম্বে নজরদার নিয়োগ করা হোক, যাতে বাহনটিকে নিরাপদে রেখে কাজ সারতে পারেন তাঁরা। কিন্তু সাত বছর কেটে গেলেও রক্ষীবিহীন হয়েই পড়ে রয়েছে স্ট্যান্ড দু’টি। |
পূর্ত দফতরের বর্ধমান পূর্ব মহকুমার নির্বাহী বাস্তুকার ২ ভজনলাল সরকার বলেন, “২০০৯ সালে আমরা ওই সাইকেল স্ট্যান্ড দু’টির জন্য ঠিকাদার নিয়োগ করতে চেয়ে টেন্ডার ডাকি। অনেকেই যোগ দেন তাতে। আমরা যোগ্য লোককে বেছে দায়িত্ব নিতে বলি। মাসে সাইকেল পিছু পূর্ত ভবনের কর্মচারীদের থেকে ২০ টাকা চান তিনি। কিন্তু কর্মচারীদের একাংশ টাকা দিতে রাজি হননি। ফলে লোক নিয়োগও সম্ভব হয়নি।”
পূর্ত ভবনে সবমিলিয়ে প্রায় হাজার খানেক সরকারি কর্মচারী রয়েছেন। তাঁদের দাবি, নতুন ঠিকাদার মাসে সাইকেল পিছু ১০ টাকা ও মোটরবাইক পিছু ২০ টাকা নিতেও রাজি ছিলেন। কিন্তু “এক শ্রেণির কর্মচারী দাবি করে বসেন, সরকারি সাইকেল স্ট্যন্ডে তাঁদের বিনামূল্যে সাইকেল বা মোটরবাইক রাখতে দিতে হবে। মাসে দশ টাকাও দিতে চাননি তাঁরা। তাই ওই স্ট্যান্ডে ঠিকাদার নিয়োগ করার দাবি জানিয়ে আমরা স্মারকলিপি দিলেও কর্তৃপক্ষ দাবি পূরণ করতে পারেননি” — এমনটাই বলেন ইউনাইটেড এমপ্লয়িজ ফেডারেশনের পূর্ত ভবন ইউনিটের সম্পাদক একরামূল হোসেন। ভজনলালবাবু বলেন, “ওই স্ট্যান্ড দু’টি থেকে বারবার সাইকেল, মোটরবাইক চুরি হচ্ছে। সেই জন্য এক শ্রেণির কর্মচারীরা আমাদের উপর ক্ষুব্ধ। তাঁরা চাইছেন, অবিলম্বে ওই স্ট্যান্ড দু’টির জন্য ঠিকাদার নিয়োগ করা হোক। নতুন করে টেন্ডার ডাকব ঠিক করেছি। কিন্তু তাতেও ওই কর্মচারীদের মনোভাব বদলাবে কী না জানি না।” |