নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
জলে ডুবে এক ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনায় শনিবার বেশি রাতে রামকৃষ্ণ মিশন শিল্পমন্দির ও সারদাপীঠে ভাঙচুর হয়েছে। ওই সময় পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ১৩ জনকে গ্রেফতার করে। ধৃতদের মধ্যে মৃত ছাত্রের মামাও আছেন।
শনিবারের ঘটনার পরে রামকৃষ্ণ মিশন সারদা পীঠ ও শিল্পমন্দিরের সম্পাদক স্বামী দিব্যানন্দ বলেন, “ছাত্রের মৃত্যু খুবই দুঃখজনক। এটা অনভিপ্রেত। কিন্তু আশ্রম কর্তৃপক্ষ ও সন্ন্যাসীরা এতে জড়িত নন। তবুও হামলা করা হল।” এ দিকে, দক্ষিণেশ্বর ও কালীঘাটের মতো বেলুড় মঠের নিরাপত্তা আরও জোরদার করার জন্য সেখানেও একটি পুলিশ ফাঁড়ি তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রামকৃষ্ণ মিশন সূত্রের খবর, অবিলম্বে তার কাজ শুরু হবে।
|
পুলিশ ও মিশন সূত্রে খবর, শনিবার সন্ধ্যায় শিল্পমন্দিরের পলিটেকনিক কলেজের পুকুর থেকে ইলেট্রনিক্স ও টেলিকমিউনিকেশন বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র সার্থক মজুমদারের দেহ উদ্ধার হয়। পরে পুলিশ জানায়, ফুটবল খেলে হাত-পা ধুতে গিয়ে সে ডুবে গিয়েছিল। পুলিশ জানিয়েছে, বেশি রাতে সার্থকের মামা দেবাশিস কুণ্ডু চুঁচুড়া থেকে লোকজন এনে ভাঙচুর চালান।
পুলিশ জানিয়েছে, শনিবার রাত ১২টা নাগাদ দেবাশিস প্রায় ৫০ জনের দল নিয়ে কলেজে যান। কলেজ বন্ধ থাকায় কেয়ারটেকারকে তাঁরা মারধর করেন। তাঁকে ভয় দেখিয়ে সন্ন্যাসীদের ঘর দেখিয়ে দিতে বলেন। এর পরে কেয়ারটেকারকে নিয়ে তাঁরা যান জিটি রোডে সারদাপীঠে। সেখানে প্রায় ১০ ফুট উঁচু গেট টপকে ঢুকে তিন কর্মীকে বেদম মারধর করেন। ফুলের টব, লোহার রড ও ইট ছুড়ে সারদা পীঠের দরজা জানলা ভাঙচুর করা হয়। গেটের সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন বাকিরা।
এক প্রবীণ সন্ন্যাসীর অভিযোগ, “আমরা ভয়ে দোতলায় উঠে যাই। পাশাপাশি সব বাড়িতেই আতঙ্ক ছড়ায়।” খবর পেয়ে বালি, বেলুড় ও নিশ্চিন্দা থানা থেকে পুলিশ যায়। পুলিশ গিয়ে বিক্ষোভকারীদের ধরে ফেলে। মিশন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, শনিবার ক্লাসের পরে পর পর দু’টি ফুটবল ম্যাচ ছিল। প্রথমটিতে সার্থক খেলেছিল। পরের দু’টি ম্যাচের পরে কেয়ারটেকার যখন কলেজের সব ঘরের দরজা জানলা বন্ধ করছেন তখন দেখেন, সার্থকের বইপত্র পড়ে। তখনই খোঁজ শুরু হয়। বাড়িতেও ফোন করে জানতে চাওয়া হয় সে বাড়ি চলে গিয়েছে কি না। বাড়ির লোক জানান, সার্থক সাঁতার জানত। এর পরে সব জায়গায় তাকে না পেয়ে খোঁজ শুরু হয় পুকুরে। জানা যায়, খেলা শেষে সে পুকুরে গিয়েছিল হাত-পা ধুতে। পৌনে পাঁচটা নাগাদ সার্থকের দেহ মেলে।
পুলিশ ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে। এই ঘটনায় সোমবার কলেজ ছুটি। তাই মঙ্গলবার ছাত্রদেরকেও জিজ্ঞাসাবাদ করবে পুলিশ। মিশনের নিরাপত্তা সুরক্ষিত রাখতে আপাতত একটি পুলিশ পিকেট দেওয়া হয়েছে। |