সঙ্গীত সমালোচনা...
কুড়ি+কুড়ি বছরের পার
ছর চল্লিশেক আগে।
তরুণ এক শিল্পীর জন্য সুরের মুখড়াটা তৈরি করছেন ‘পঞ্চম’। গানের কথা, ‘কতদিন আর এ ভাবে বসে থাকি’...। বাসু চক্রবর্তী যেন কথাটা সম্পূর্ণ করার জন্যই বলে উঠলেন, “জিতনে দিন তুমহারা বাপ গায়েগা তুমকো বৈঠনা পড়েগা।”
গল্পটা বলতে বলতে হো হো করে হেসে উঠলেন সে দিনের সেই তরুণ শিল্পী অমিতকুমার। আবার তাঁর গান ফিরছে এ শহরে। অমিতকুমার আর অন্তরা চৌধুরীর পুজোর গানের অ্যালবাম ‘ফিরে এলে সাগরিকা’র (ইউনিভার্সাল ও অমিতকুমার ফ্যান ক্লাবের উদ্যোগে, সুর দেবজিৎ) লঞ্চিং আজ। দুবাইয়ে বসে ই মেল-আড্ডায় অমিত খুলে দিলেন স্মৃতির ঝাঁপি।
“বাবার গানই অনুষ্ঠানে গাইছি তখন। ১৯৭২-এ দুটো অনুষ্ঠান করেছিলাম রবীন্দ্রসদনে। টিকিট না পেয়ে অনেকে হলে ভাঙচুর করেছিল। আত্মবিশ্বাসটা তৈরি হচ্ছিল তখনই। কিন্তু সবই তো বাবার গান। নিজের গান কই? স্বপ্নটা রয়েই গিয়েছিল।” অর্থাৎ রিমেকে তখন আর মন ভরছিল না অমিতের। তত দিনে রাহুল দেববর্মন আর কিশোরকুমার পুজোর গানের বাজার কাঁপিয়ে দিয়েছেন।
ফেলে আসা দিনের গল্প বলে চললেন অমিতকুমার, “বাবাকে আমার ইচ্ছেটার কথা বললাম। তৈরি হল ‘জিনিসের দাম বেড়েছে’ গানটা। মুকুল দত্তের কথা, বাবার সুর। বাসুদা মিউজিক অ্যারেঞ্জমেন্ট করেছিলেন। পঞ্চাশের দশকে রোশনসাবের একটা হিন্দি গান থেকে তৈরি হয়েছিল গানটা। রেকর্ডিং হয়েছিল এইচএমভি-র পুরনো স্টুডিয়োতে।”
‘জিনিসের দাম বেড়েছে’র রেকর্ডিং-এ
১৯৭৩-এর পুজোয় প্রকাশিত হয়েছিল অমিতকুমারের প্রথম বাংলা গানের রেকর্ড। এক পিঠে ‘জিনিসের দাম বেড়েছে’, আর এক পিঠে ‘মনে মনে কত দিন’। কথা মুকুল দত্তের, সুর কিশোরকুমার। পুজোর গানের ইতিহাসে রেকর্ড গড়েছিল রেকর্ডটা। কী রকম? “তখন বিখ্যাত শিল্পীদের হাজার পঁচিশেক রেকর্ড তৈরি করত এইচএমভি। আমি আনকোরা। মোটে ছ’হাজার কপি তৈরি হল। রেকর্ডটা বেরনোর তিন দিনের মাথায় বাড়িতে এলেন এইচএমভি-র সিইও মিস্টার দুবে। বাবাকে বললেন, কিশোরদা, দারুণ খবর আছে। আপনারা লিজেন্ড। কিন্তু আজ একটা নেংটি ইঁদুর আপনাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে দিয়েছে। ঘটনাচক্রে সে আপনার ছেলে!”
অন্তরা চৌধুরীর সঙ্গে অমিতকুমারের একটা ডুয়েট আছে ‘ফিরে এলে সাগরিকা’ অ্যালবামে, ‘ফিরে আসছি আমি কাল’। অমিত-অন্তরা ডুয়েট এই প্রথম বার। সবিতা চৌধুরীর সঙ্গে অমিতকুমার কাজ করেছেন। কিশোরকুমারের গানেও শিশুশিল্পী হিসেবে অন্তরা ছিলেন। অমিতাভ বচ্চন অভিনীত ‘কালিয়া’য় কিশোর-আশার ডুয়েটে অন্তরাকে দিয়ে শুধু চারটে বর্ণ গাইয়েছিলেন পঞ্চম, এল ও ভি ই। কিন্তু অমিতকুমার-অন্তরা-র গান এই প্রথম।
সলিল চৌধুরীর কথা উঠতেই অমিত বললেন, “১৯৬০-৬১ থেকে সিরিয়াসলি পুজোর গান শুনতে শুরু করি। প্রধানত হেমন্ত মুখোপাধ্যায় ও শ্যামল মিত্র। পাড়ার মাইকে ‘যা যারে যা যা পাখি’ শুনে শুনে ভালবেসে ফেলেছিলাম। মান্না দে, দ্বিজেন মুখোপাধ্যায়ও শুনতাম। কিন্তু সব থেকে বেশি করে শ্যামল মিত্র। সলিল চৌধুরীর সুরে শ্যামল মিত্র...উফ্ টেরিফিক!”
‘জিনিসের দাম বেড়েছে’র পরে অমিতকুমারকে আর বসে থাকতে হয়নি। কিন্তু মূলত হিন্দি গান জুড়ে ছিল তাঁর জগৎ। চোদ্দো বছর আগে ‘সাগরিকা’ অ্যালবাম দিয়ে হইহই করে ফের বাংলায় ফিরেছিলেন কিশোরপুত্র। প্রায় দু’লক্ষ ক্যাসেট বিক্রি হয়েছিল সাগরিকা-র। জিতেছিল গোল্ড ডিস্ক। এ বার, অমিত ফিরছেন সেই সাগরিকা নিয়েই।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.