|
|
|
|
বাড়ি থেকে উদ্ধার ৮৫০ সাপ, অবৈধ ব্যবসায় অফিসার
সংবাদ সংস্থা • নিউ ইয়র্ক |
একটা নয়, দু’টো নয়। খোদ পশু সুরক্ষা আধিকারিকের বাড়ি থেকে উদ্ধার হল ৮৫০টি জলজ্যান্ত সাপ!
প্রশাসনের নাকের ডগায়, নিউ ইয়র্কের ব্রুকহেভেনের ওই বাড়িতেই দীর্ঘদিন ধরে চলছিল বেআইনি সাপের ব্যবসা। দেশের মধ্যে তো বটেই, দেশের বাইরেও বিষধর-নির্বিষ নানা প্রজাতির সাপ পাচারের কাজ চলছিল অবাধে। রিচার্ড প্যারিনেলো নামের ওই আধিকারিকের বাড়িটিই কার্যত পরিণত হয়েছিল একটি সরীসৃপ সংরক্ষণ কেন্দ্রে। বাড়ি সংলগ্ন গ্যারাজটিতে বাক্সবন্দি ছিল ৮৫০টি জলজ্যান্ত সাপ। এ ছাড়াও ছিল বহু সংখ্যক বিরল প্রজাতির কচ্ছপ, ইঁদুর, বিষাক্ত ট্যারেন্টুলা মাকড়সা আরও কত কী!
পরিবেশ সংরক্ষণ দফতরের খোঁজ তল্লাশিতে অবশেষে সন্ধান মিলল ঘোঘের বাসার। বৃহস্পতিবার রিচার্ডের বাড়িতে হানা দিয়ে ওই গ্যারাজ ঘরে তালা ঝোলালেন দফতরের কর্মীরা। বন্ধ হল সাপের ব্যবসা। |
|
উদ্ধার হওয়া দুই বার্মিজ পাইথনের একটি। ছবি: এপি। |
পরিবেশ কর্মীদের তৎপরতায় রিচার্ডের বাড়ি থেকে উদ্ধার হল ছ’ফুট লম্বা দু’টি বার্মিজ পাইথন। সন্ধান মিলেছে ময়াল, কেউটে গোত্রের শয়ে শয়ে সাপেরও। গ্যারাজেই ছিল একাধিক রেফ্রিজারেটার। তার ডালা খুলতেই বেরিয়ে এল জমে যাওয়া কুমিরের মৃতদেহ। এ ছাড়াম গ্যারাজ ঘরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল প্রচুর কচ্ছপের ডিম। বার্মিজ পাইথন দু’টিকে উদ্ধারের পর আপাতত ম্যাসাচুসেটসের সরীসৃপ সংরক্ষণ কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। বাকি সাপগুলো এখনও গ্যারাজেই বন্দি।
বেআইনি সাপের ব্যবসায় জড়িত থাকলেও এখনই রিচার্ডের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা আনতে পারছে না নিউ ইয়র্ক পুলিশ। সম্ভবত ব্যবসার স্বার্থেই ছোট্ট ওই গ্যারাজ ঘরটিতে বহু অর্থ খরচ করে সাপ সংরক্ষণের সমস্ত বন্দোবস্ত করেছিলেন রিচার্ড। গ্যারাজটিতে ইতিমধ্যেই ঢুঁ দিয়ে গিয়েছেন পশু চিকিৎসকেরা। তাঁরা জানিয়েছেন, সব ক’টি সাপই মোটামুটি সুস্থ। অযত্ন হত না গ্যারাজের অন্য প্রাণীগুলিরও। তাই রিচার্ডের বিরুদ্ধে বন্য প্রাণী নির্যাতনের অভিযোগ ধোপে টিকবে না বলেই মনে করেন তাঁরা।
বসত এলাকায় সাপের ব্যবসা চালানো যে বেআইনি এ কথা অবশ্য মেনে নিয়েছেন রিচার্ড নিজেই। মার্কিন মুলুকে বার্মিজ পাইথন নিয়ে এসে দেশের আইন ভঙ্গের অভিযোগও মেনেছেন তিনি। তবে বেআইনি হলেও ব্যবসা এতটাই রমরমিয়ে চলছিল যে একটা সময় পর তা রিচার্ডের নেশায় পরিণত নয়। ব্যবসা চালু হয় অনলাইনেও। সম্প্রতি ‘স্নেকম্যানস এক্সোটিক’ বলে একটি ওয়েবসাইটও খুলেছিলেন তিনি। যার মাধ্যমেই চলত বিদেশি ক্রেতাদের সঙ্গে লেনদেন। ওয়েবসাইটটি খুললেই দেখা মিলবে রিচার্ডের হেফাজতে থাকা নানা প্রজাতির অজগরের দীর্ঘ তালিকা। তবে সাপ কেনা-বেচার মতো ব্যবসা দীর্ঘদিন ধরে চালানোর জন্য এক নিম্ন আদালতে ইতিমধ্যেই একটি মামলা দায়ের হয়েছে রিচার্ডের বিরুদ্ধে। আদালত সমনও পাঠিয়েছে তাঁকে। অনুমতি ছাড়া বাড়িতে বন্য জীবজন্তু রাখার জন্য রিচার্ডের সর্বোচ্চ ২৫০ ডলার জরিমানা হতে পরে বলে মনে করেন আইনজীবীরা।
ব্রুকহেভেনে রিচার্ডের ওই বাড়িতে থাকতেন তাঁর স্ত্রী ও দশ বছরের পুত্র সন্তানও। সুপারভাইজার এড রোমানির আশঙ্কা, রিচার্ডের ব্যবসা প্রকাশ্যে এলে প্রতিবেশীদের মনে অযথা আতঙ্ক তৈরি হতে পারত। ঠিক সময় ধরা না পড়লে রিচার্ডের শখের খেসারত হয়তো দিতে হত তাঁর স্ত্রী, ছেলেমেয়েকেও। |
|
|
|
|
|