|
|
|
|
ভি কে সিংহকে নিয়ে নয়া বিতর্ক, নিশানায় মোদীও |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
ভোটের মরসুমে প্রাক্তন সেনাপ্রধান ভি কে সিংহের বিরুদ্ধে নতুন অভিযোগের আঁচ এসে পড়ল নরেন্দ্র মোদীর উপরে।
ভি কে সিংহ সেনাপ্রধান থাকার সময়েই তাঁকে নিয়ে বিস্তর বিতর্ক হয়েছে। অবসরের পরেও বিতর্ক তাঁর পিছু ছাড়েনি। আজ সেনা গোয়েন্দা বিভাগে তাঁর গড়ে তোলা দফতর ‘টেকনিক্যাল সার্ভিসেস ডিপার্টমেন্ট’-এর (টিএসডি) বিরুদ্ধে কিছু চাঞ্চল্যকর অভিযোগ এনেছে সংবাদমাধ্যমের একাংশ। তাদের দাবি, ওই দফতর জম্মু-কাশ্মীর সরকারকে ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করেছিল। সে জন্য জম্মু-কাশ্মীরের মন্ত্রী গুলাম হাসান মীরকে টাকাও দিয়েছিল তারা। আবার বর্তমান সেনাপ্রধান বিক্রম সিংহের ওই পদে বসা ঠেকাতে কাশ্মীরের এক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনকে দিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করিয়েছিল টিএসডি। বেআইনি ভাবে আড়িপাতার যন্ত্র কিনে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকে গোয়েন্দাগিরি করারও চেষ্টা করেছিলেন টিএসডি অফিসাররা। সেনার এক গোপন তদন্তের রিপোর্ট উদ্ধৃত করে এই খবর প্রকাশ করেছে একটি সংবাদপত্র। প্রতিরক্ষা মন্ত্রী এ কে অ্যান্টনি ওই রিপোর্ট প্রধানমন্ত্রীর দফতরে পাঠিয়েছেন বলে দাবি সংবাদমাধ্যমের। স্বভাবতই এই বিষয়ে অভিযোগের আঙুল উঠেছে ভি কে সিংহের দিকে।
অবসরের পরে অরবিন্দ কেজরিওয়ালদের ‘আম আদমি পার্টি’-র দিকে ঝুঁকতে শুরু করেন ভি কে সিংহ। কিন্তু সম্প্রতি হরিয়ানায় প্রাক্তন ফৌজিদের আয়োজিত এক জনসভায় বিজেপির প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী নরেন্দ্র মোদীর পাশে বসেছিলেন তিনি। বিজেপি তথা মোদীর দিকে ঝোঁকারও ইঙ্গিত দিয়েছিলেন প্রাক্তন সেনাপ্রধান।
ফলে, তাঁর তৈরি দফতরের বিরুদ্ধে অভিযোগের খবর প্রকাশিত হতেই তাতে রাজনৈতিক রং লেগেছে। আজ কংগ্রেসের নেতা রশিদ আলভি বলেন, “বিরোধী দল বা প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থীর সঙ্গে যুক্ত কোনও ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলে তাঁকে রেয়াত করা হবে, এমন নয়। আইন আইনের পথেই চলবে।” পরোক্ষে তাঁর পাশে এসে দাঁড়িয়েছে বিজেপি।
সংবাদমাধ্যমেই প্রকাশ, সেনার গোপন তদন্ত রিপোর্ট কেন্দ্রের হাতে এসেছে মার্চ মাসে। বিজেপি মুখপাত্রদের বক্তব্য, তা হলে এত দিন ভি কে সিংহের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়নি কেন সরকার? তাঁদের দাবি, মোদীর জনসভায় উপস্থিত থাকাতেই সিংহের বিরুদ্ধে সুকৌশলে নতুন অভিযোগ তোলা হচ্ছে। বিজেপি নেত্রী নির্মলা সীতারামনের বক্তব্য, “সরকার ভুলে যাচ্ছে, এই কৌশলের মাধ্যমে আসলে সেনার মতো প্রতিষ্ঠানকেই লঘু করছে তারা।” ভি কে সিংহের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ বিশ্বাস করতে রাজি নন প্রাক্তন সেনাদের একটি বড় অংশও। হরিয়ানায় মোদীর সভায় হাজির ছিলেন অলিম্পিকে পদকজয়ী শ্যুটার রাজ্যবর্ধন রাঠৌর। সদ্য বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন তিনি। তাঁর বক্তব্য, “নরেন্দ্র মোদীর সভার আয়োজন ছিল প্রাক্তন সেনাদের নিয়ে। সেই সূত্রে প্রাক্তন সেনাপ্রধানও সেখানে ছিলেন। আজ তাঁর বিরুদ্ধে তোলা অভিযোগের পিছনে স্পষ্ট উদ্দেশ্য রয়েছে।”
অনেক প্রাক্তন সেনাকর্তার মতে, ভি কে সিংহ সেনাপ্রধান থাকাকালীনই বয়স বিতর্কে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন। অবসরের পরে অন্য ভাবে সক্রিয় হয়েছেন। অবসরপ্রাপ্ত সেনা, আধাসেনাদের অনেক ক্ষোভ আছে। প্রাক্তন সেনাপ্রধান রাজনৈতিক-অরাজনৈতিক মঞ্চের মাধ্যমে তাঁদের সংগঠিত করার চেষ্টা করছেন। মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থানের মতো রাজ্যের ভোটে এর প্রভাবও পড়তে পারে। ফলে, তিনি যে শাসক দলের নিশানায় থাকবেন তাতে আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই। |
|
|
|
|
|