পুরসভার মেয়র পারিষদ (রাস্তা) সুশান্ত ঘোষ বুধবার জানান, ইতিমধ্যেই ওই সেতুর সমীক্ষা-রিপোর্ট জমা দিয়েছে রাইটস। ইঁদুরের কারণেই যে সেতুটি বসে যাচ্ছে, তা জানানো হয়েছে ওই রিপোর্টে। এর পরেই গত ৭ সেপ্টেম্বর থেকে সেতু সারানোর কাজ শুরু করেন রাইটস-কর্তৃপক্ষ। সংস্থার প্রোজেক্ট-কোঅর্ডিনেটর দুলালচন্দ্র মিত্র বলেন, “সিমেন্টের সঙ্গে রাসায়নিক ও ছাই মেশানো মণ্ড দিয়ে ইঁদুরের গর্তগুলো বোজানো হচ্ছে। আর তাতেই বেরোতে শুরু করেছে গর্তে থাকা ইঁদুরের দল।” পুরসভার এক ইঞ্জিনিয়ার জানান, গর্ত থেকে উৎখাত হওয়া ইঁদুরের দল আশপাশের এলাকায় পালাতে থাকে। আর রাস্তার উপর দিয়ে চলার সময়ে গাড়ির চাকায় পিষ্ট হয়ে মারাও যায় বেশ কয়েকটি।”
ওই এলাকায় গড়িয়াহাট (পশ্চিম) রোডে থাকেন স্থানীয় ৯২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মধুছন্দা দেব। তিনি বলেন, “বেশ বড় আকারের কয়েকটি ইঁদুর আমার বাড়িতে ঢুকে রীতিমতো তাণ্ডব চালাচ্ছে। পাড়াতেও অনেকেই ইঁদুর সামলাতে ব্যতিব্যস্ত।” তিনি জানান, সেতুর নীচ থেকে তাড়া খেয়ে আশপাশের অলিগলিতে ঘুরছে মূষিকের দল। তাদের উপদ্রবে নাজেহাল হয়ে পাড়ার কেউ কেউ ইতিমধ্যেই ইঁদুর মারার সরঞ্জামও জোগাড় করে ফেলেছেন।
কী ভাবে রোখা যাবে ইঁদুরবাহিনীর এই দৌরাত্ম্য?
দুলালবাবু জানান, ইঁদুরের উৎপাতের খবর তাঁদের কানেও এসেছে। তাই সেতুর নীচ থেকে বেরিয়ে আসা ইঁদুর-কুলকে ঘায়েল করতে ডাকা হচ্ছে এক সংস্থাকে। সমস্যা সমাধানে এক বিশেষ ধরনের ট্যাবলেট ব্যবহার করা হবে। বিশেষ যন্ত্রের সাহায্যে সেই ট্যাবলেট থেকে বেরোনো গ্যাস সুড়ঙ্গের মধ্যে ছড়িয়ে ইঁদুর দমন করবে সংস্থাটি।
কিন্তু কবে?
দুলালবাবু জানিয়েছেন, দু’-তিন দিনের মধ্যেই তাঁরা কাজ শুরু করবেন। আশা করা যাচ্ছে, তাতেই সেতুর নীচে বা আশপাশের এলাকায় আর ইঁদুরের বংশ থাকবে না।
কিন্তু ওই এলাকায় ইঁদুরের বাড়বাড়ন্ত তো প্রধানত লাগোয়া একটি ভ্যাটের কারণেই। সেটা তো এখনও সরানো হয়নি। তা হলে কী ভাবে রোখা যাবে এই উপদ্রব?
রাইটস-এর বিশেষজ্ঞের মতে, পুরসভা আগেই জানিয়ে দিয়েছে, ওয়ার্ডের অন্যত্র জায়গা না থাকায় ওই ভ্যাটটি সরানো সম্ভব হচ্ছে না। সেটা মাথায় রেখেই ব্যবস্থা নিতে হয়েছে। যে পদ্ধতিতে কাজ করা হচ্ছে, তাতে ভ্যাট থাকলেও সেতুর ধারেকাছেও এখন ঘেঁষতে পারবে না মূষিক-বাহিনী। এমনকী, ভবিষ্যতেও তার সম্ভাবনা নেই বলেই দাবি ওই বিশেষজ্ঞদের।
পুরসভা সূত্রের খবর, প্রথমে সেতুর নীচে থাকা গর্ত ভরাট করা হচ্ছে। সেই কাজ সম্পূর্ণ হলে সেতুর উপরের কাজ শুরু হবে। এ দিকে, পুজোর আগেই ওই সেতুর কাজ শেষ করতে চান পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। সেই মতো জোরকদমে কাজ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে রাইট্স-কে। মেয়র পারিষদ সুশান্তবাবু জানান, সেতুর উপরে কাজ চলাকালীন রাতের দিকে যান-নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। এ ব্যাপারে পুলিশের সঙ্গে কথা হয়েছে। রাইট্স সূত্রের খবর, ওই কাজের জন্য রাতে কয়েক ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ রাখতে হবে। কলকাতা পুলিশের ডিসি (ট্রাফিক)-র সঙ্গে রাইটস-এর কথাও হয়েছে বলে দুলালবাবু জানান। |