অতিবর্ষণে আসেনি কুঁড়ি,
পদ্মের জোগানে টান তমলুকে
তিবর্ষণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পদ্ম চাষ। ফলে এ বার দুর্গাপুজোয় পদ্মের জোগান নিয়ে চিন্তায় পড়েছেন কোলাঘাটের প্রায় দু’শোর বেশি পদ্ম চাষি ও ব্যবসায়ী। চাহিদার সঙ্গে তাল মিলিয়ে পুজোর সময় পদ্মের দাম অনেকটা বেড়েও যেতে পারে। বিশ্বকর্মা পুজোর দিনেই ভোগপুর স্টেশনে তিন টাকা দরে এক-একটা পদ্ম বিক্রি হয়েছে। পুজোর চার দিনে এই দাম ১৫ থেকে ২০ টাকা হতে পারে--গত বছরের তুলনায় যা অনেকটাই বেশি।
এ রাজ্যে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা ছাড়াও হাওড়া, বর্ধমান, মালদহ ও মুর্শিদাবাদে পদ্মের চাষ হয়। এ ছাড়াও ওড়িশার সম্বলপুর থেকে পদ্ম ফুল আসে। পূর্ব মেদিনীপুর ও হাওড়া জেলায় দক্ষিণ-পূর্ব রেলের হাওড়া-খড়গপুর শাখায় ও পাঁশকুড়া-হলদিয়া শাখার রেললাইনের দু’ধারে ঝিল লিজ নিয়ে পদ্ম চাষ করেন অনেকে। এ ছাড়াও কোলাঘাট, শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকের বিভিন্ন গ্রামে নিচু জলাজমি, পুকুর-ঝিলে পদ্ম ফুলের চাষ হয়ে থাকে। মেচেদা ও পাঁশকুড়া রেলস্টেশনের মাঝে ভোগপুর স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে প্রতিদিন সকালে শুধুমাত্র পদ্ম বেচা-কেনার জন্য বাজার বসে। এই বাজারে প্রতিদিন গড়ে ৮-১০ হাজার পদ্ম নিয়ে আসেন চাষিরা। সেখান থেকে পদ্ম কিনে ব্যবসায়ীরা কলকাতার মল্লিকঘাট-সহ রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে গিয়ে বিক্রি করেন। পদ্ম ফুল হয় ফাল্গুন থেকে কার্তিক মাস পর্যন্ত। তবে, দুর্গাপুজোর সময়ই চাহিদাটা থাকে মূলত। অষ্টমীতে ১০৮টি পদ্ম লাগে পুজোর জন্য। ফলে ওই সময় ফুলের চাহিদা থাকে সবচেয়ে বেশি। ওই দিন সারা রাজ্যে প্রায় ৩০ লক্ষ পদ্মফুল লাগে। জোগান দেওয়ার জন্য কোলাঘাটের চাষি ও ব্যবসায়ীরা পাঁশকুড়ার মেচগ্রাম, হাওড়া জেলার সাঁকরাইল, হাওড়া ও কলকাতার উল্টোডাঙা, মানিকতলার হিমঘরে পদ্ম কুঁড়ি রেখে সংরক্ষণ করে। ষষ্ঠীর দিন থেকে ওই হিমঘরের পদ্ম বের করা হয় বিক্রির জন্য। এ বার হিমঘরেই পদ্মের জোগান খুব কম।
এই অবস্থা কেন?
পদ্ম চাষিরা জানান, সম্প্রতি কাঁসাইয়ের বাঁধ ভেঙে বন্যা কবলিত হয়েছিল পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়া ও তমলুকের বিস্তীর্ণ এলাকা। পাশেই কোলাঘাট ব্লক বন্যার কবল থেকে রক্ষা পেলেও ভোগপুর, সাগরবাড় এলাকার ঝিল ও পুকুরের জলস্তর বেড়ে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পদ্মের উৎপাদন। কোলাঘাটের ভোগপুর গ্রামের অজিত কোলে রেলের ঝিল ও পুকুর মিলিয়ে পদ্ম চাষ করেন প্রায় তিন একর জমিতে। প্রায় ১১ বছরের বেশি সময় ধরে এই কাজের সঙ্গে যুক্ত অজিতবাবু বলেন, “সাধারণত বর্ষাকালে পদ্মের ঝিল ও পুকুরে জলস্তর থাকে ৬ থেকে ৭ ফুট উচ্চতায়। এ বার তা বেড়ে ৮ থেকে ১০ ফুট। জল ঠেলে ওঠার কারণে কুঁড়ি কম হয়েছে।” সাগরবাড় গ্রামের শেখ মনতাজ আলির খেদ, “যতটা আশা করেছিলাম এ বার সেই মতো আয় হবে না।” পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা উদ্যান পালন ও খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ আধিকারিক স্বপন কুমার শিট অবশ্য আশ্বাস দেন, “পদ্ম চাষিদের ক্ষতিপূরণের জন্য ব্যবস্থা নিচ্ছি।”
১০৮টা পদ্ম পাবে তো পুজো কমিটিগুলি? উত্তর মেলেনি।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.