|
|
|
|
|
সুদীপ্তার দ্রুত আরোগ্য কামনা করি |
তিনি নাকি মানসিক ভারসাম্য হারিয়েছেন? ‘বিগ বস’-এর বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসার পর একমাত্র
আনন্দplus-এর এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারে মুখ খুললেন রুদ্রনীল ঘোষ। মুখোমুখি ইন্দ্রনীল রায় |
তিন মাস পর বাড়িতে। এখনও কি মনে হচ্ছে গান বাজলে তবেই ঘুম ভাঙবে?
(হেসে) না, না। তেমন কিছু মনে হচ্ছে না। তবে মিক্সড্ ফিলিং হচ্ছে একটা। ‘বিগ বস’ বাড়িটাও মিস করছি, আবার নর্ম্যাল জীবনে ফিরে আসাটাও এনজয় করছি। ইট ওয়াজ আ গ্রেট জার্নি।
কিন্তু জিতলেন না তো খেলাটা!
হ্যাঁ, জিতলাম না। কিন্তু বেশির ভাগ ইনমেটস থেকে অবাঙালি ক্রু, সবার চোখে যদি সত্যি কেউ জিতে গিয়ে থাকে এই কম্পিটিশন, তা হলে সেই মানুষটার নাম অনীক ধর নয়।
অনেকে তো বলছে রানার আপ হয়ে আসল বিজয়ী তো আপনিই হলেন?
হ্যাঁ, শুনেছি আমি সেটাও। কিন্তু এ ব্যাপারে আমি কী বলব বলুন, সেটা তো মানুষ বলবে। তবে আমি না জেতাতে যে পরিমাণ মানুষের খারাপ লেগেছে, সেটা আমি দর্শকদের আশীর্বাদ হিসেবেই মাথা পেতে নিচ্ছি।
অনীক কী বলল আপনাকে জেতার পর?
জানি না কেন অনীক আমার চোখে চোখ রেখে কথাই বলতে পারছিল না। শুধু আমি কেন, বাড়ির কারও সঙ্গেই কথা বলতে পারছিল না। কী রকম লজ্জা এবং কুণ্ঠা নিয়ে দূরে সরে থেকেছিল সবার থেকে। আর সব চেয়ে বেশি আশ্চর্য কে হয়েছে? মিঠুনদা নিজে। বিজয়ীর নাম অ্যানাউন্স করার পর মিঠুনদা কী রকম চুপচাপ ছিলেন। ওঁর লাস্ট লাইনটা এখনও আমার কানে বাজছে। উনি শুধু আমাকে বললেন, “খুব ভাল খেলেছিস রুদ্র।”
এত লোক আপনাকে ফেভারিট বলছিল। সেটাই কি কাল হল?
আমি বুঝতে পারছি না একদম। নিশ্চয়ই এমন কিছু এসএমএস-এর খেলা আছে যেটা আমি জানি না। হয়তো অনীক আর মহেশ জালান জানে। |
|
ছবি: সুব্রত কুমার মণ্ডল |
মহেশ জালান এল কোথা থেকে?
আরে ওই তো ‘বিগ বস’-এর আসল খিলাড়ি। কী অ্যাক্টিংটাই করল ও আর অনীক! মহেশ ও অনীক একে অপরকে ‘বিগ বস’-এর আগে থেকেই চিনত। কিন্তু অনীক বারবার এটা প্রমাণ করার চেষ্টা করেছে যে এই ‘বিগ বস’-এ এসেই মহেশ জালানের সঙ্গে প্রথম আলাপ হল। আবার এটাও জানলাম যে অনীকের গার্লফ্রেন্ডের জন্মকুণ্ডলীও নাকি মহেশই বানিয়েছিল। সুদীপ্তা বা কনীনিকা কত বড় অ্যাক্টর আমি জানি না, কিন্তু মহেশ আর অনীক মুখে ‘গুড বয়’-এর ইমেজ নিয়ে গোটা ‘বিগ বস’টা অভিনয়ে যে ভাবে কাটিয়ে দিল তাতে আমি নিশ্চিত আল পাচিনো বা অমিতাভ বচ্চনও হার মানবেন ওদের কাছে।
এতটাই অভিনয় করছিলেন নাকি ওঁরা?
হ্যাঁ, হ্যাঁ দু’জনেই। মহেশ জালান এসেই ঘোষণা করলেন উনি জ্যোতিষী। পরে একদিন আমাদের সঙ্গে আড্ডা মারতে মারতে মুখ ফস্কে বলে ফেললেন উনি নাকি কম্পিউটারে দেখে লোকের কুণ্ডলী বলেন। তার পর দেখলাম এত ধার্মিক একজন মানুষ, কিন্তু ‘হনুমান চালিশা’ ছাড়া আর কোনও মন্ত্রই উনি জানেন না। তিনি নাকি জ্যোতিষী? তিনি কি আধ্যাত্মিক মানুষ? সারা পৃথিবীর জ্যোতিষীদের ওঁর কাছ থেকে শেখা উচিত হস্তরেখা বা ঠিকুজি-কুষ্ঠী বিচার না করেই কী ভাবে একটা রিয়েলিটি গেম শো-এ সব ফলাফল বলে দেওয়া যায়। উনি খুব বুদ্ধি করে এই ‘বিগ বস’ মঞ্চটাকে ব্যবহার করলেন এটা বোঝাতে যে উনি কত বড় জ্যোতিষী।
কী করে করলেন সেটা?
কেন? শো শেষ হওয়ার আগে ওঁকে বলা হয়েছিল ১,২,৩,৪ করে র্যাঙ্কিং করতে। উনি যা র্যাঙ্ক করেছিলেন, হুবহু সেই রেজাল্ট হল।
‘বিগ বস’ও যেন ধনুক ভাঙা পণ করেছিল মহেশ কত বড় জ্যোতিষী এটা প্রমাণ করার দায় যেন তাঁর। কেন এ রকম করল ‘বিগ বস’, এর পিছনে কোনও টাকার লেনদেন ছিল কি না আমি আজও জানি না।
মাঝখানে সুদীপ্তা বেরোনোর পর আনন্দ প্লাস-এর ইন্টারভিউতে বলেছিলেন আপনি নাকি সিগারেট চুরি করতেন?
ছিঃ। তা হলে শুনুন। প্রত্যেকের সিগারেটের একটা আলাদা অ্যালটমেন্ট থাকত। আমার জন্য দু প্যাকেট আসত, সুদীপ্তার জন্য এক প্যাকেট। কিন্তু ‘বিগ বস’-এর খেলাতে বিভ্রান্ত হয়ে সুদীপ্তা বেশি করে সিগারেট খাওয়া শুরু করল, বদ্ধ উন্মাদ হয়ে গিয়েছিল। সারাদিন অন্যদের ঠেস দিয়ে কথা বলত আর সিগারেট খেত। এবং সিগারেট কম পড়লে বাড়ির সবার মতোই ও আমার কাছ থেকেই সিগারেট নিয়ে যেত। এমনকী বেরিয়ে আসার দিনও আমার কাছ থেকেই সিগারেট চেয়ে খেয়েছে। তবে সুদীপ্তার কী হয়েছে আমি জানি।
কী হয়েছে?
‘বিগ বস’ খেলাটাই এমন যে প্রচুর মেন্টাল প্রেসার থাকে। সুদীপ্তা সেটা হ্যান্ডল করতে পারেনি। মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলছে। তাই এ সব উল্টোপাল্টা কথা বলেছে। আমি ওর অভিনয়ের খুব ফ্যান। কিন্তু ওর মানসিক অবস্থা দেখে ওর জন্য কষ্ট হচ্ছে। ভগবানের কাছে ওর দ্রুত আরোগ্য কামনা করি। আর ‘বিগ বস’ তো ওকে বেস্ট পিএনপিসি অ্যাওয়ার্ড দিল। সেটাতেই বোঝা যায় ওর আসল চরিত্রটা। সুদীপ্তার শো-কেস-এ এখন ন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ডের পাশে বেস্ট পিএনপিসি অ্যাওয়ার্ড।
আপনার তো খুব রাগ দেখছি?
কেউ যদি সারাক্ষণ মিথ্যে কথা বলে, তার প্রতি তো রাগ হবেই। ও সবাইকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করেছে এই শো-তে। পটাকে করেছে, আমাকে করেছে, কনীকে করেছে। আর এ সব করার পাশাপাশি অকারণে নিজেকে ডিগনিফায়েড প্রমাণ করার চেষ্টা করে চলেছিল। খালি বলত, ও নাকি খেলতে আসেনি। কিন্তু বিশ্বাস করুন ‘বিগ বস’-এর কনট্র্যাক্টটা ওর প্রায় মুখস্থ ছিল। যে খেলতে চায় না, সে মুখস্থ করবে কেন?
আর...
শো-তেই সুদীপ্তা বলেছিল কেউ ওর নামে মিথ্যে কথা বললে ওর নাকি ইতিহাস আছে ঘুষি মেরে নাক ভেঙে দেওয়ার।
যিনি সর্বক্ষণ ডিগনিফায়েড থাকার বিজ্ঞাপন করছেন-- কী ভাবে জল খাওয়াটা ডিগনিফায়েড করা যায়, কী ভাবে ঢেকুর তোলাটা ডিগনিফায়েড করা যায় তিনি বাইরে মানুষের নাক ফাটাচ্ছেন। তা হলে কীসের ডিগনিফায়েড হে তুমি! সুদীপ্তার ‘বিগ বস’-এ যাওয়া ঠিক হয়নি। ওর মতো মানুষের উপযুক্ত চ্যানেল হচ্ছে কার্টুন নেটওয়ার্ক।
আর কনীনিকা?
দেখুন, আপনি যদি ভাল খেলোয়াড় হন, তা হলে আপনি চাইবেন খেলার মাঠে কম্পিটিশনও যেন যোগ্য লোকের সঙ্গেই হয়। কনীনিকা ছিল সুপার্ব কম্পিটিটর। কনী প্লেড দিস গেম ব্রিলিয়ান্টলি। প্রথম দিন থেকে আমি মনে করতাম ও-ই আমার কম্পিটিটর। এবং আমার ধারণা ও নিজেও জানত, আমার সঙ্গেই ওর আসল কম্পিটিশন হবে। আই রেসপেক্ট হার।
মল্লিকাও তো এক সময় আপনাকে গালাগালি দিত?
সারা জীবনে কখনও ফেম পাওয়ার মতো এমন কিছু করেনি যে ফেম ‘বিগ বস’ ওকে দিল। কিন্তু বেচারি ও, নিজের ওই ফেমটা হ্যান্ডল করতে পারল না। আমি বড় গাড়ি চালাই বলে আমি প্লেনও চালাতে পারব এটা ভাবলে তো ভুল। আর তার পর সেই কান্না! এত জল টালা ট্যাঙ্কেও নেই বোধহয়।
আর সব চেয়ে বেশি কী মিস করছেন বেরিয়ে আসার পর?
একসঙ্গে খাবার টেবিলে বন্ধু-শত্রু হয়েও খেতে বসাটা। কারও সঙ্গে আপনার ফাটাফাটি ঝগড়া চলছে। কিন্তু তার পাতে অমলেট কম পড়ে গেলে তাকে অমলেট দেওয়ার মধ্যে কোনও ডিজঅনেস্টি ছিল না। ওই খাওয়াদাওয়াটা মিস করছি খুব।
আর কোনও দিন যাবেন ‘বিগ বস’ হাউসে?
অবশ্যই যাব। আমার খেলাটা দারুণ লেগেছে।
শেষ প্রশ্ন, কী শিখলেন এই তিন মাসে?
শিখলাম একটাই জিনিস, শত্রুর শত্রু, আপনার মিত্র। |
|
অনীক ধর |
রামের বেশে রাবণ |
সুদীপ্তা চক্রবর্তী |
দ্রুত আরোগ্য লাভ করুন |
কনীনিকা |
যুদ্ধং দেহি |
মহেশ জালান |
জালি জালান |
মল্লিকা |
কর্পোরেশন আঁখি-জল বণ্টন দফতর |
কার্লিটা |
পাগলি খাবি কী, ঝাঁঝে মরে যাবি |
পটা |
প্রবীণ সিধু খোকন |
আইরিস |
অতি চালাকের গলায় দড়ি |
নন্দিনী |
ঠিক কী যে চাই, খুঁজে বেড়াই |
সম্পূর্ণা |
দুপুর দু’টোর গুড মর্নিং |
বিক্রম |
ল্যাদাকান্ত |
কার্তিক দাস বাউল |
মন ফকিরা |
কাইজ কালিম |
অবাক পৃথিবী |
মানবী |
নিজের মতো বাকিদেরও বিশ্বাস করুন |
|
|
|
|
|
|