ঘাটালে এসে অতীতে ফিরলেন রাষ্ট্রপতি |
অভিজিৎ চক্রবর্তী • ঘাটাল |
অতীতে একাধিকবার এসেছেন রাজনৈতিক কর্মী হিসাবে কখনও বা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হিসাবে। রবিবার সকালে এলেন রাষ্ট্রপতি হিসাবে। ঘাটাল বিদ্যাসাগর স্কুলের মঞ্চে মিনিট সাতেকের সংক্ষিপ্ত ভাষণে রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় ফিরে গেলেন সেই অতীতেই। জানালেন, “রাজনৈতিক কারণে এবং বীরসিংহ গ্রামে নিরক্ষতা দূরীকরণের জন্য একাধিক বার বিদ্যাসাগরের জন্মভিটে বীরসিংহ গ্রামে ও ঘাটালে এসেছি। কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য সত্যেন সেন-সহ বহু বিশিষ্ট ব্যক্তিরাও তখন এসেছিলেন। নিরক্ষরতা দূরীকরণে গড়া হয় সমিতিও।”
রবিবার ঘাটাল বিদ্যাসাগর হাইস্কুলের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় বলেন, “ঘাটাল মহকুমায় এমন এক মানুষের জন্ম হয়েছিল যিনি প্রায় দু’শো বছর আগে অনুভব করেছিলেন আধুনিক সমাজ গড়তে প্রয়োজন আধুনিক শিক্ষা। জোর দিয়েছিলেন শিক্ষা সংস্কারে। যা এখনও প্রাসঙ্গিক।” ভাষণে শিক্ষক জীবনের স্মৃতিচারণ করে বলেন, “আগে স্কুলগুলি অনেক কষ্টে গড়ে উঠেছিল। তখন কোনও কিছুই সহজলভ্য ছিল না।” ঘাটাল বিদ্যাসাগর হাইস্কুল প্রসঙ্গে বলেন, “আমি যখন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ছিলাম তখন স্কুল কর্তৃপক্ষ যোজনা কমিশনের কাছে স্কুলের উন্নয়নের জন্য আর্থিক সাহায্যের আর্জি জানিয়েছিল। তখন যোগযোগ করেছিলেন আমার সঙ্গেও। আমি যোজনা কমিশনকে অনুরোধ করেছিলাম ঘাটালের এই স্কুলটি বহু পুরানো। তাই সাহায্য করলে খুশি হব। কমিশন কথা রেখেছে।” |
|
বিদ্যাসাগর হাইস্কুলে রাজ্যপাল, রাষ্ট্রপতি ও মন্ত্রী। |
ভাষণে শিক্ষক জীবনের স্মৃতিচারণ করে বলেন, “আগে স্কুলগুলি অনেক কষ্টে গড়ে উঠেছিল। তখন কোনও কিছুই সহজলভ্য ছিল না।” ঘাটাল বিদ্যাসাগর হাইস্কুল প্রসঙ্গে বলেন, “আমি যখন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ছিলাম তখন স্কুল কর্তৃপক্ষ যোজনা কমিশনের কাছে স্কুলের উন্নয়নের জন্য আর্থিক সাহায্যের আর্জি জানিয়েছিল। তখন যোগযোগ করেছিলেন আমার সঙ্গেও। আমি যোজনা কমিশনকে অনুরোধ করেছিলাম ঘাটালের এই স্কুলটি বহু পুরানো। তাই সাহায্য করলে খুশি হব। কমিশন কথা রেখেছে।”
রাষ্ট্রপতির সফর ঘিরে প্রায় দিন পনেরো ধরে প্রস্তুতি চলছিল প্রশাসন এবং স্কুলের। ঘাটাল জনপদে এই প্রথম কোনও রাষ্ট্রপতি এলেন। রবিবার সকালে দশটা চল্লিশে ঘাটাল অরবিন্দ স্টেডিয়ামে নামে রাষ্ট্রপতির কপ্টার। |
|
রবিবার ঘাটালে বিদ্যাসাগর হাইস্কুলের একটি অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে রাজ্যপাল।
এ দিন বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ে সপ্তম বিদ্যাসাগর স্মারক বক্তৃতাও দেন প্রণববাবু। |
সরকারি ভাবে তাঁকে স্বাগত জানান মন্ত্রী সুকুমার হাঁসদা। অনুষ্ঠান মঞ্চে ছিলেন রাজ্যপাল এম কে নারায়ণন, শিল্পী শুভাপ্রসন্ন, বিধায়ক শঙ্কর দোলই, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক প্রণব সামন্ত, পুরসভার চেয়ারম্যন বিভাস ঘোষ, প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক দুলাল কর। রাষ্ট্রপতির বিশেষ অতিথি হিসাবে ছিলেন কংগ্রেসের জেলা সভাপতি স্বপন দুবে, সহ-সভাপতি জগন্নাথ গোস্বামীরা। রাষ্ট্রপতি মঞ্চে ওঠার পরই ছাত্র-ছাত্রীরা জাতীয় সঙ্গীত গেয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা করেন। মঞ্চে দাঁড়িয়েই তাতে সুর মেলান রাষ্ট্রপতি এবং রাজ্যপাল। স্কুল- সম্পাদক অজিত দে রাষ্ট্রপতিকে পুষ্প স্তবক এবং নানা উপহার দিয়ে সম্বর্ধনা দেন। মঞ্চেই স্কুলের সদ্য নির্মিত একটি ভবনের ফলক উদ্বোধন করেন রাষ্ট্রপতি। প্রকাশ করা হয় স্মরণিকা। |
|
প্রণাম: রবিবার বিদ্যাসাগর হাইস্কুলের অনুষ্ঠানে ঈশ্বরচন্দ্রের প্রতি শ্রদ্ধা জানালেন রাষ্ট্রপতি
প্রণব মুখোপাধ্যায়। ছিলেন রাজ্যপাল এম কে নারায়ণন, শিল্পী শুভাপ্রসন্ন, মন্ত্রী সুকুমার হাঁসদা। |
সেটিরও উদ্বোধন করেন প্রণববাবু। সংক্ষিপ্ত ভাষণে বলেন, “অনেক আগেই এই স্কুলে আসার কথা ছিল। আজ বিদ্যাসাগরের জন্মভিটে বীরসিংহ সংলগ্ন ঘাটালে আসতে পেরে নিজেকে গর্বিত মনে করছি।” অনুষ্ঠান শেষে স্কুলের শিক্ষক, অশিক্ষক কর্মচারী, সম্পাদক ও পরিচালন কমিটির সঙ্গে ছবি তোলেন রাষ্ট্রপতি ও রাজ্যপাল।
এ দিকে রাষ্ট্রপতির সফর ঘিরে পুলিশি নিরাপত্তা ছিল চূড়ান্ত। নিরপত্তার কারণে স্কুলের সব পড়ুয়ারা স্কুলে ঢোকার অনুমতি পায়নি। তাই স্কুল সংলগ্ন টাউন হলে জায়ান্ট স্ক্রিনে অনুষ্ঠান দেখানোর ব্যবস্থা করে স্কুল কর্তৃপক্ষ। সকাল আটটা থেকেই ঘাটাল শহরের সব রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। রাষ্ট্রপতিকে চোখের দেখা দেখার জন্য মহকুমার বিভিন্ন এলাকা থেকে সকাল থেকেই কাতারে কাতারে শিশু, মহিলা থেকে বৃদ্ধ-বৃদ্ধারা শহরে আসতে শুরু করেন। তাঁদের উন্মাদনা ছিল চোখে পড়ার মতো। |
ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল। |
পুরনো খবর: রাষ্ট্রপতি আজ মেদিনীপুরে |
|