|
|
|
|
|
|
|
পুস্তক পরিচয় ৪... |
|
বকলম জরুরি, সাহিত্যেও |
বইপোকা |
‘বকলম’ বলিয়া একটি শব্দ আছে বঙ্গীয় অভিধানে। তাহার অর্থ ‘প্রধানত লিখিতে অক্ষম এমন কোনও ব্যক্তির পরিবর্তে যে স্বাক্ষর করে’। কিছু কাল ধরিয়া ওই ‘বকলম’টির অভাব বড় পীড়া দিতেছে। প্রায় দেড় দশক পূর্বে প্রধানত সংবাদপত্রের তপ্ত সংবাদের তাড়ায় পড়িয়াছিলাম সুস্মিতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাবুলিওয়ালার বাঙালিবউ। তাহার পরে বিস্মৃত হইয়াছিলাম। গ্রন্থটির লেখিকা, তাঁহার জীবন বিস্মরণযোগ্য নহে কিন্তু গ্রন্থটি বিস্মরণযোগ্য। তাহার প্রধান কারণ ওই ‘বকলম’-এর অভাব। সুস্মিতা লেখক নহেন, তাহা না হইলেও কোনও দোষ নাই। যে জীবন তিনি যাপন করিয়াছেন বঙ্গীয় লেখকদের অনেকের শীতাতপনিয়ন্ত্রিত রচনাকক্ষ তাহা কল্পনাও করিতে পারিবে না। সেই জীবনের কথাই তিনি লিখিয়াছিলেন তাঁহার গ্রন্থে। কিন্তু লিখনশিল্পী হিসেবে নিতান্ত অক্ষম ছিলেন তিনি। যদি কোনও সুদক্ষ ‘বকলম’ সুস্মিতার অভিজ্ঞতা এবং বক্তব্য লইয়া গ্রন্থটি লিখিত তবে তাহা বঙ্গসাহিত্যে বহু কাল নিজের জোরেই বাঁচিয়া থাকিতে পারিত, সাংবাদিকের কলম কিংবা ক্যামেরার মুখাপেক্ষী তাহাকে হইতে হইত না।
ইংরাজি ভাষায় এমন ঘটিয়াই থাকে, বঙ্গভাষাতেও কিছু কিছু ঘটে। কিন্তু এই পদ্ধতির প্রচল এখনও যথেষ্ট নহে বলিয়া বঙ্গভাষায় বহু সম্ভাবনাময় গ্রন্থ অকালে পঞ্চত্ব প্রাপ্ত হয়।
যেমন, সম্প্রতি প্রকাশিত শচীন্দ্রনাথ বিশ্বাসের রূপসাপাড়ের চুপকথা।
গ্রন্থে কেবল সংলাপের উপর ভিত্তি করিয়া একটি উপন্যাস লিখিতে চাহিয়াছেন লেখক। যথোচিত সম্পাদনা পাইলে গ্রন্থটি নূতন এক নিরীক্ষার সাক্ষ্য বহন করিতে
পারিত। কিন্তু বঙ্গীয় বইপাড়ায় ইহাও এক দুর্ভাগ্য যে কথাসাহিত্য সম্পাদনা অদ্যাবধি প্রায় বিরলদৃষ্ট। |
|
|
|
|
|